উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
ভারতের স্বাধীনতার মুহূর্তটিকে জন্ম সময় ধরলে জন্ম বিবরণটি হল– 15.08.1947, 00.01 A.M, New Delhi. অর্থাৎ উক্ত বিবরণটি থেকে যে জন্ম কুণ্ডলীটি পাওয়া যায়, সেটি হল— লগ্ন–বৃষ (৭°), রাহু– বৃষ (৫°), মঙ্গল-মিথুন (৭°), চন্দ্র–কর্কট (৩°), বুধ-কর্কট (১৩°), শনি-কর্কট (২০°), শুক্র-কর্কট (২২°), রবি-কর্কট (২৭°), বৃহস্পতি–তুলা (২৫°), কেতু –বৃশ্চিক (৫°)। ভারতের লগ্নে তুঙ্গ রাহুর অবস্থান কালসর্পদোষ সৃষ্টি করেছে। রাহু রবির নক্ষত্রে। তাই ভারতবর্ষের রাজনৈতিক পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তনশীল ও বিপরীতপক্ষ তথা কেন্দ্র সরকারে প্রতিপক্ষ যথেষ্ট শক্তিশালী। চতুর্থ পতি রবি-শনি যুক্ত। রবি স্বৈরতন্ত্র ও শনি গণতন্ত্রের কারক। তাই এই দুটি গ্রহযোগ মোটেই শুভ নয়। গণতন্ত্র বারবার স্বৈরতন্ত্রের রূপ নেয়। দশমপতি শনি রাজযোগকারক। কে পি মতে দশমভাবস্ফুটটি মকরে। মকর রাশিতে ৬টি গ্রহের দৃষ্টি রয়েছে। যা বিশিষ্ট প্রতিভাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্ম দিতে সক্ষম। দশমপতি শনি যোগী তথা অবিবাহিত বা বিধবা। তাই অধিকাংশ যাঁরা ভারতকে সফলভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই বিধবা বা বিপত্নীক বা অবিবাহিত। অটলবিহারী বাজপেয়ি, জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী। এমনকী নরেন্দ্র মোদি, জয়ললিতাও এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
ভারতে বর্তমানে চন্দ্রের দশায় বৃহস্পতির অন্তর্দশা চলছে। এটি চলবে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে শনির অন্তর্দশা। চন্দ্র নক্ষত্রও যাবে ৩, ৪, ৯, ১০, ১১-এর নির্দেশক। বৃহস্পতি এইভাবে ৬, ৮, ৯, ১২-এর নির্দেশক। অন্তর্দশায় ৬, ৮, ১২ নির্দেশ রাজনৈতিক ইস্যুতে মোটেই শুভ নয়। এর অর্থ, ঝামেলা, গণ্ডগোল ও ব্যাপক পরিবর্তন। বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতার মৃত্যু, শীর্ষ নেতার অবসর তথা একাধিক রাজনৈতিক নেতার আইনি সমস্যাদির যোগ নির্দেশ করছে। বৃহস্পতির ষষ্ঠে অবস্থান রাজনৈতিক নীতির অবনমনকেই নির্দেশ করছে। গোচরে বৃহস্পতি বৃশ্চিকে, কিন্তু ভোটের সময় বক্রী হয়ে ধনুতে প্রবেশ করছে। তাই পুরনো কোনও রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রীয় ইস্যু উঠবে যা জাতীয় রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে। বক্রগ্রহ জনগণের মনেও দ্বৈত মানসিকতা আনবে। কোন দলকে সমর্থন করা যায়, তা সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হবে। শনির গোচর অষ্টমে ধনুতে এবং রাহু-কেতু-শনি-মঙ্গল পরস্পর সমসপ্তমে আসছে ভোটের দিনগুলিতে ও পরবর্তী দিনগুলিতে। যা নির্দেশ করছে যে যেকোনও দাঙ্গা, বোমাবাজি, প্রতিহিংসা, কোনও ব্যক্তির রাষ্ট্রীয় দণ্ড, রাজনৈতিক অস্থিরতা। কেন্দ্রে সরকার গঠনে যথেষ্ট কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
এখন আমরা দেখে নেব যে, দেশের চতুর্দিকের কোন দিকটি অস্থির, আর কোন দিকটি সুস্থির থাকবে।
বর্তমানে শনির গোচর পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্রের উপর যা বরাহমিহিরের কূর্মা চক্রে পশ্চিম দিক নির্দেশিত। তাই ভারতের পশ্চিম প্রদেশগুলিতে, যেমন—পশ্চিম মহারাষ্ট্র, গুজরাত, রাজস্থান ইত্যাদি রাজ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও ক্ষয়ক্ষতির যোগ। রাহুর গোচর পুনর্বসু নক্ষত্রের উপর যা কূর্মা চক্রে পূর্বদিক নির্দেশ করছে। তাই বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, গোয়া, আসাম, ত্রিপুরা ইত্যাদি রাজ্যে ঝামেলা আসার প্রবল সম্ভাবনা।
এবার আমরা প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির রাজনৈতিক ভাগ্যফল বিচার করব।
উত্তরপ্রদেশ: উত্তরপ্রদেশের জন্মলগ্ন তুলা ও রাশি মেষ। বর্তমানে বৃহস্পতির মহাদশায় বুধের অন্তর্দশা চলছে। বৃহস্পতি নক্ষত্রও যাবে ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০, ১২ এবং বুধ নক্ষত্রও যাবে ১, ৩, ৪, ৮, ৯, ১২ এর নির্দেশক। তাই এখানে যথেষ্ট হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে (৭, ১২)। প্রতিপক্ষ জোট ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করবে। যোগাযোগ (৩, ৯), ধর্মীয় ভাবাবেগ (৮, ৯, ১২) লোকসভায় ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে।
মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্রের লগ্ন ধনু ও রাশি মিথুন। বর্তমানে বুধের মহাদশায় বৃহস্পতির অন্তর্দশা চলছে। বুধ নক্ষত্র যাবে ২, ৩, ৬, ৭, ৯, ১২ ও বৃহস্পতি ১, ২, ৩, ১২ নির্দেশক। তাই এখানে বর্তমান শাসকের প্রভুত্ব (১, ৩, ৬, ৯) থাকলেও পরিবর্তনশীল পরিবেশ ও কেন্দ্রবিরোধী মানসিকতা জন্ম নেবে (১, ৩, ১২)।
পশ্চিমবঙ্গ: পশ্চিমবঙ্গের লগ্ন তুলা ও রাশি মেষ। বর্তমানে বৃহস্পতির মহাদশায় বুধের অন্তর্দশা চলছে। দশান্তর্দশা ১, ৬, ৩ ১০ এর নির্দেশক। তাই শাসকের সার্বিক ভালো ফল আশা করা গেলেও পরিবর্তন ও ভালোরকম ক্ষয়ক্ষতির যোগ অর্থাৎ বিরোধীদের ভালো ফলও (১, ৩, ৮, ১২) আশা করা যাচ্ছে।
তামিলনাড়ু: তামিলনাড়ুর লগ্ন বৃষ ও রাশি কর্কট। বর্তমানে চন্দ্র-শনির দশান্তর্দশা চলছে। চন্দ্র ৩, ৪, ১০, ১১ ও শনি ১, ২, ৩, ৬ নির্দেশ করছে। তাই বর্তমানে এখানে শাসকের ব্যাপক উন্নতি ও প্রতিযোগিতার সাফল্য নির্দেশ করছে (১, ৩, ৬)। তবে গোচরে শনি-বৃহস্পতির অবস্থান হঠাৎ বাধা ও পুরনো কোনও রাজনৈতিক ইস্যু উঠে আসতে পারে। কোনও বড় রাজনীতিবিদের রাষ্ট্রীয় শাস্তি বা সমালোচনাও হতে পারে।
বিহার: বিহারের রাশি মেষ, লগ্ন তুলা। দশান্তর্দশা (১, ৩, ১২) নির্দেশক। তাই বর্তমানে শাসকের ব্যাপক জয়লাভ (৩, ৬, ৯, ১০) হলেও ধীরে ধীরে শাসক কেন্দ্র-বিরোধী মন্তব্য ও বিশৃঙ্খলতা আসবে। জনস্বাস্থ্য (১, ৬), শিক্ষা (৪, ৬, ৯) ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নতি নির্বাচনের মূল বাজি থাকবে।
মধ্যপ্রদেশ: মধ্যপ্রদেশের রাশি কন্যা, লগ্ন মকর। বর্তমানে বুধ শুক্রের দশান্তর্দশা ৪, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১ নির্দেশ করছে। তাই সুস্থ ও সুস্থির ভোট আশা করা যায়। প্রতিপক্ষের উন্নতি (৪, ৬), বর্তমান শাসকের কিছুটা অবনতি (৪, ৫), আশানুরূপ ফলাফল (৯, ১১) হবে।
কর্ণাটক: কর্ণাটকের লগ্ন কর্কট, রাশি ধনু। বর্তমানে রাহু বুধের দশান্তর্দশা চলছে। দশান্তর্দশা ৩, ৪, ৫, ৬, ৯, ১১, ১২ নির্দেশ করছে। তাই এখানেও রাজ্য সরকার বিরোধিতা সাফল্য আনবে (৪, ৫)। উত্তেজনার পরিবেশ থাকবে (৬, ১২)।
গুজরাত: গুজরাতের রাশি মিথুন। লগ্ন ধনু। বর্তমানে বুধ-বৃহস্পতির দশান্তর্দশা চলছে। দশান্তর্দশা ১, ২, ৩, ৭, ৯, ১২ নির্দেশক হওয়ায় জাতীয় সুরক্ষা, ইনভেস্টমেন্ট, লেবার ক্লাস তথা দলিত ইস্যু ভোটের বাজি হবে। গণ্ডগোলের পরিস্থিতিও আসতে পারে।
রাজস্থান: রাজস্থানের লগ্ন ধনু, রাশি মিথুন। দশান্তর্দশা ১, ৩, ৭, ১২ নির্দেশক হওয়ায় পরিবর্তনশীল তথা রাজ্য সরকারের বিরোধী শক্তিশালী হবে। জনগণের মধ্যেও পরিবর্তন ও ধর্মীয় ভাবাবেগ, জাতীয়তাবাদী মানসিকতা ভোট ব্যাঙ্কে থাবা দেবেই (৯, ১২)।
অন্ধ্রপ্রদেশ: অন্ধ্রপ্রদেশের লগ্ন কর্কট, রাশি কুম্ভ। বর্তমানে বুধ-বুধের দশান্তর্দশা চলছে। বুধ ৩, ৪, ৫, ১০, ১২ নির্দেশক হওয়ায় রাজ্য সরকারের দুর্নাম (১২), প্রতিপক্ষ শক্তিশালী (৪, ৫), পরিবর্তনকামী চিন্তাধারা প্রকাশ (৩, ১২) ইত্যাদি নির্দেশ করছে।
এবার আমরা বিচার করে নেব বেশ কিছু তাবড় তাবড় নেতা-নেত্রীর ভাগ্য, যাদের কৃতকার্যতা, ব্যর্থতা জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
নরেন্দ্র মোদি: রাশি বৃশ্চিক, লগ্ন বৃশ্চিক। লগ্নে চন্দ্র নীচভঙ্গ রাজযোগ করেছে। রুচকযোগ বিদ্যমান। কারকাংশ লগ্ন, লগ্ন, রাশি লগ্ন তিনটিই বলবান। বর্তমানে ওনার চন্দ্রের মহাদশায় শুক্রের অন্তর্দশা চলছে। শুক্র বৃহস্পতি দৃষ্ট ও ৭, ৯, ১০, ১২ এর নির্দেশক। তাই যুদ্ধ পরিস্থিতি, সমালোচনা, দুর্ঘটনা ইত্যাদি হওয়ার প্রবল যোগ। সংঘর্ষপূর্ণ ও প্রতিপক্ষের কাছে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার যোগ। যদিও লোকসভার সময় বৃহস্পতির গোচর হঠাৎ সুনাম ও এককভাবে সাফল্য নির্দেশ করছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: রাশি বৃষ, লগ্ন মেষ। বর্তমানে শনি-চন্দ্রের দশান্তর্দশা ২, ৩, ৬, ৯ এর কারকতা দেওয়ায় উক্ত সময়ে ওনার ব্যাপক সাফল্যযোগ নির্দেশ করছে। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবেন। তবে গোচরে শনির অবস্থান মানহানির কারক ও ব্যাপক শত্রুতাকারক।
রাহুল গান্ধী: রাহুল গান্ধীর রাশি বৃশ্চিক, লগ্ন মকর। নীচস্থ শনি দশমে দৃষ্টি দিচ্ছে। তাই রাজনীতিতে সাফল্যযোগ শেষ বয়সে। সহজে ব্যাপক সাফল্য আসবে না। বর্তমানে ওনার চন্দ্র-বুধের দশান্তর্দশা চলছে। বুধ ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১১, ১২ নির্দেশ দেওয়ায় হতাশা (৬, ৭, ১২), আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি (৬, ১২), পরিবর্তনশীল মানসিকতা হেতু ক্ষয়ক্ষতি (৩, ৬, ১২) ইত্যাদি আসলেও পূর্ব নির্বাচন ২০১৪-এর তুলনায় সাফল্য আসবে (৩, ৬, ৯, ১১)। যথেষ্ট সম্মানিত হবেন (৬, ৯, ১১)।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী: রাশি বৃশ্চিক। লগ্ন মিথুন। সপ্তমে বৃহস্পতি, রবি, বুধের রাজযোগ। বর্তমানে শুক্র-শনির দশান্তর্দশা চলছে। দশান্তর্দশা ১, ২, ৭, ৪, ১০ নির্দেশক। তাই ওনার এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। উনি এই সময় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করবেন। কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্য পাবেন না। কারণ শুক্র-শনির দশান্তর্দশা একটি ব্যতিক্রমী দশান্তর্দশা।
সোনিয়া গান্ধী: রাশি মিথুন। লগ্ন কর্কট। দশমে বৃহস্পতি-শুক্রের প্রভাব শুভ ফলদায়ক। বর্তমানে ওনার কেতুর দশা চলছে। কেতু ৩, ৫, ১২ নির্দেশক। তাই এই সময় সমালোচনা বেশি হবে। সাফল্যযোগের সম্ভাবনা কম।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল: রাশি মেষ, লগ্ন বৃষ। বর্তমানে অন্তর্দশা পতি শুক্র ১, ৪, ৬ নির্দেশক। তাই শত্রুতা ও প্রতিপক্ষের জয় নির্দেশ করছে। শনির গোচরও শুভ নয়।
অখিলেশ যাদব: রাশি মিথুন, লগ্ন কন্যা। বর্তমানে কেতু-চন্দ্র দশান্তর্দশা চলছে। যা বিভ্রান্তিকারক। পারিবারিক বিবাদ কর্মক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে। মহাজোটে দ্বৈত মানসিকতা পোষণ করবেন। প্রবল উদ্যমহেতু কিছু সাফল্য আসবে। ভোট শেয়ার দ্বারা লাভবান হতে পারেন।
চন্দ্রশেখর রাও: রাশি কর্কট, লগ্ন বৃষ। বর্তমানে রাহু-শুক্র দশান্তর্দশা চলছে। যা রাজযোগ কারক। থার্ড ফ্রন্টের প্রধান নেতাদের একজন উনি। শুক্র একাদশে, তাই শত্রুতা ও শত্রুজয় নির্দেশ করছে। যদিও শুক্রের ১, ৬, ৮, ১০ নির্দেশ কর্মক্ষেত্রে ব্যর্থ পরিকল্পনা তথা শাস্তিমূলক অভিজ্ঞতা আনতে পারে।
নীতীশ কুমার: রাশি বৃশ্চিক, লগ্ন মিথুন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী উনি। বর্তমানে ওনার রাহু-শনির দশান্তর্দশা চলছে। শনি ৩, ৫, ৮, ৯, ১০, ১২ নির্দেশক। জয়লাভ (৩, ৯, ১০), পরিবর্তন (৩, ৮, ১২) নির্দেশ করছে। নির্বাচনের পর ওনার সঙ্গে এনডিএ জোটের মতান্তর হতে পারে।
চন্দ্রবাবু নাইডু: রাশি ধনু, লগ্ন মেষ। টিডিপি দলের প্রধান তথা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উনি। বর্তমানে শনি-কেতুর দশান্তর্দশা চলছে। শনি-কেতুতে যে কোনও ফৌজদারি তথা মানহানি মামলায় জড়াতে পারেন। এক্ষেত্রে দশা শুভ নয়।
কুমারস্বামী: রাশি মিথুন, লগ্ন মিথুন। উনি কর্ণাটকের নব নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। ওনার এখন কেতু শুক্র দশান্তর্দশা চলছে। যা ১, ৪, ৫, ১২ নির্দেশক। উক্ত দশা শুভ যাবে না। ক্ষয়ক্ষতি ও পরিবর্তন আসতে পারে।
মায়াবতী: রাশি মকর, লগ্ন কর্কট। বর্তমানে বুধ-শুক্রের দশান্তর্দশা চলছে। যা ৪, ৫, ৭, ১০, ১১ নির্দেশক। সময় শুভ। পরিকল্পনার সাফল্য এলেও গোচরে বক্র বৃহস্পতি। হঠাৎ বাধা ও হঠাৎ প্রতিপক্ষ শক্তিশালী (৪, ৫) হতে পারে।
রাজনাথ সিং: রাশি-বৃশ্চিক, লগ্ন-বৃশ্চিক। একাধিক রাজযোগ বিদ্যমান। বর্তমানে ওনার রাহু-শুক্রের দশান্তর্দশা ১, ২, ৬, ৭, ৯, ১০, ১২ নির্দেশ করায়, ব্যাপক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে। ১, ৬, ৯, ১০ এর নির্দেশ ব্যাপক সাফল্য দেবে।
অমিত শাহ: লগ্ন কন্যা, রাশি মেষ। বর্তমানে রাহু-রবির দশান্তর্দশা ১, ৩, ৮, ১২ নির্দেশ করছে। তাই বদনাম ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে যে কোনও ব্যর্থ পরিকল্পনা আনতে পারে। মে মাসের পর চন্দ্রের অন্তর্দশা প্রবল প্রচেষ্টায় মনস্কামনা পূরণ করাতে পারে। দশমস্থ রাহুর উপস্থিতি যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সাফল্য এনে দেবে।
সর্বশেষে দেখে নেব যে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার তিনটি দলের অর্থাৎ (১) বিজেপি (২) কংগ্রেস (৩) ফেডারেল ফ্রন্টের ভাগ্যফল
বিজেপি: বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিনটিকে জন্মদিন ধরে নিলে রাশি বৃশ্চিক, লগ্ন মিথুন। কুণ্ডলীতে তৃতীয়ে চারটি গ্রহ। তৃতীয়ে বুধের দৃষ্টি। তাই দলটিতে সাহসী ও সংগ্রামী ও জনসংযোগকারী ব্যক্তিরা স্থান পায় এবং দলটি প্রচার, গণমাধ্যম তথা মিডিয়ার দ্বারা ব্যাপক সাফল্য পায়। তৃতীয় ভাব পরাক্রমস্থান, তাই দলটি বহু প্রচেষ্টার পর সাফল্য পায়। হঠাৎ উত্থান-পতনের মধ্যে যায়। বিরূপ ও প্রতিকূল পরিবেশে জয়লাভের সামর্থ্য রাখে। বর্তমানে বিজেপির চন্দ্র-মঙ্গলের দশান্তর্দশা চলছে। দশাপতি নীচস্থ ও ষষ্ঠস্থ। তাই এইসময় যে কোনও নারী চরিত্র কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ার প্রবল যোগ। মঙ্গল ৩, ৬, ৯, ১১ এর নির্দেশক হওয়ায় বহু সংগ্রামের পর জয়লাভ নির্দেশ করছে। চন্দ্রের উপর বৃহস্পতির গোচর অনেকখানি স্বস্তি এনে দিতে পারে। কোনও বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা-নেত্রীর অসুস্থতা নির্দেশ করছে।
কংগ্রেস: কংগ্রেসের রাশি কন্যা, লগ্ন মীন। দশমে রবি-বৃহস্পতির উপস্থিতি ব্যাপক সম্মান ও দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য এনে দিয়েছে। বর্তমানে কংগ্রেসের বৃহস্পতি-শুক্রের দশান্তর্দশা চলছে। শুক্র তৃতীয়-অষ্টমপতি হয়ে ৩, ৪, ৭, ৮, ৯, ১০ এর নির্দেশক। তাই দলে হঠাৎ পরিবর্তন, পুরাতন সমস্যার পুনরাবৃত্তি, মহিলা কর্তৃক সাহায্য লাভ, সংগ্রাম ইত্যাদি আসবে। এ কথা উল্লেখ করতেই হয় যে দলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর উপস্থিতি কংগ্রেসকে অনেক সুবিধা এনে দেবে।
ফেডারেল ফ্রন্ট: ১৯ মার্চ, ২০১৮, দুপুর ১২.৩০ কে ফেডারেল ফ্রন্টের জন্ম ধরে নিলে যে কুণ্ডলীটি হয় তার রাশি মীন ও লগ্ন মিথুন। লগ্নের সপ্তমে শনি-মঙ্গলের উপস্থিতি মান-অভিমান, ঝামেলা ও আইনি বড়সড় জটিলতার কারক। দ্বিতীয়ে রাহুর উপস্থিতি কলহকারক। লগ্নপতি বুধ নীচস্থ। যা অশুভ। বর্তমানে বুধ-বৃহস্পতির দশান্তর্দশা চলছে। বৃহস্পতি বক্রী ও বুধ নীচস্থ। বৃহস্পতি ৩, ৫, ৭, ৯, ১০-এর নির্দেশ দেওয়ায় উন্নত পরিকল্পনা ও ব্যাপক সাড়া মিললেও গ্রহ বক্রী তাই বহু প্রচেষ্টার পর সাফল্য আসবে। বলা বাহুল্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেডারেল ফ্রন্টের প্রধান মুখ।
সুদীর্ঘ আলোচনার পর এখন আমাদের সিদ্ধান্ত বা ফলাফলের দিকে আসতেই হয়। সার্বিক মূল্যায়নের প্রথমেই ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে অবধি গোচর দেখে নেওয়া কর্তব্য। ৭ দফায় ভোট হবে। তাই ৭ দিনের গোচরটি হল—
১১ এপ্রিল: রবি মীনে, মঙ্গল বৃষে, বক্রী বৃহস্পতি ধনুতে, শনি ধনুতে।
১৮ এপ্রিল: রবি মেষে প্রবেশ করছে। বাকি অপরিবর্তিত।
২৩ এপ্রিল: বৃহস্পতি পুনরায় বৃশ্চিকে। বাকি অপরিবর্তিত।
২৯ এপ্রিল: কোনও পরিবর্তন নেই।
৬ মে: শনি বক্রী। মঙ্গল মিথুনে প্রবেশ করার মুখে।
১২ মে: মঙ্গল মিথুনে। বাকি অপরিবর্তিত।
১৯ মে: রবি বৃষে। বাকি অপরিবর্তিত।
এটা স্পষ্ট যে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে গোচরে ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে যা মানুষের মনে দ্বন্দ্ব বা দ্বৈত মানসিকতা আসতে পারে। এর ফলে কোনও দফায় বিজেপি, কোনও দফায় কংগ্রেস আবার কোনও দফায় আঞ্চলিক দলগুলি সুবিধা পাবে। বিশেষত শনি-বৃহস্পতির বক্রতা ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। রাহু-কেতু মঙ্গলের গোচর হানাহানি ও ঝামেলার কারক। ফলাফল ঘোষণার মুহূর্তে অর্থাৎ ২৩ মে বিকেলে চন্দ্রের অবস্থান কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকার বিজেপির তৃতীয়ে, শনি-কেতু দ্বিতীয়ে, বৃহস্পতি লগ্নে। তাই সংগ্রাম ও বাধার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।
ভারতের লগ্নের অষ্টমে শনির উপস্থিতি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলতা নির্দেশ করছে। সরকার গঠনে ঝামেলা ও বাধা হবেই। হঠাৎ অপ্রত্যাশিত ফলাফল হবে। কোনও পক্ষই ব্যাপক অর্থে সাফল্য না পাওয়ার যোগ। বলা বাহুল্য— শনি-বৃহস্পতির অষ্টমে গোচর কোনও বয়স্ক-অভিজ্ঞ নেতা/নেত্রীকেই বেছে নেবে।
তবে এটাও ঠিক, জ্যোতিষশাস্ত্রে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান আর সংখ্যাতত্বের পর্যালোচনায় রাশিচক্র অনুযায়ী আগাম ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। এটা মনে রাখতে হবে রাশি কখনও ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। মানুষের কর্মই নিয়ন্ত্রণ করে তার ভাগ্যকে। জ্যোতিষশাস্ত্র কেবল কিছু সূত্র ধরে সম্ভাবনার পথ বাতলে দেয় মাত্র।