Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

বদলা চাই
প্রীতম দাশগুপ্ত

জানুয়ারির এক গভীর রাত। নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবে শ করল জনা দশেক জঙ্গি। নেতৃত্বে মহম্মদ উমের। সম্পর্কে জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের ভাইপো। প্রত্যেক জঙ্গির হাতেই অত্যাধুনিক অস্ত্র। বিস্ফোরক। এই দলের সঙ্গে যোগ দেয় আব্দুল রশিদ গাজি ওরফে কামরান। কান্দাহার থেকে করাচি জঙ্গি করিডরের মাথা। ৩২ বছরের কামরান, আফগানিস্তানে তালিবানের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। আফগানিস্তানে যুদ্ধের অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। হাত পাকিয়েছে আইইডি বিস্ফোরণে। মাসুদের নির্দেশেই এই দল গোপনে ভারতে প্রবেশ করে। উদ্দেশ্য, এমন এক হামলা চালানো, যাতে নয়াদিল্লির ঘুম উড়ে যায়।
একসময় নিজের ভাইপো ১৮ বছরের আবু উসমানকে এম-৪ কার্বাইন নিয়ে কাশ্মীরে স্নাইপার আক্রমণে পাঠিয়েছিল মাসুদ। উসমান অবশ্য তাঁর দাদা তালহা রাশিদের থেকে বয়সে ছোট। তালহাকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে পুলওয়ামায় নিরাপত্তারক্ষীরা খতম করেছিল। এবার এম-৪ কার্বাইন হাতে জঙ্গি উসমানের ছবি পাওয়া মাত্রই চিরুনি তল্লাশি শুরু করে নিরাপত্তা রক্ষীরা। গত বছর অক্টোবরে দক্ষিণ কাশ্মীরের ত্রালে আবু উসমানকেও নিকেশ করেছিল নিরাপত্তা রক্ষীরা। এই হত্যার দু’দিনের মধ্যে মাসুদ আজহার একটি তিন মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে স্পষ্ট, দুই ভাইপোর পরপর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিল মাসুদ। মরণ-কামড় দিতে এই ভিডিওতে নিজের ভাইপোর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পাশাপাশি সাধারণ কাশ্মীরিদের তার আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানায়। এই প্রথমবার সন্ত্রাসবাদে যোগ দেওয়ার জন্য মাসুদকে কাশ্মীরিদের কাছে ভিক্ষে চাইতে দেখা যায়। মাসুদ যে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিল তা বলাই বাহুল্য।
জয়েশ জঙ্গিরা উপত্যকার পুলওয়ামায় ঘাঁটি তৈরি করল। শুরু হল পরিকল্পনা। কীভাবে চালানো হবে হামলা, তার নিখুঁত নকশা। পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরার জাতীয় সড়ককেই বেছে নিয়েছিল মাসুদের জঙ্গিরা। ২০১৩ সাল থেকে ধরলে এই সড়কেই জঙ্গিদের হাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৮ জন জওয়ান। আসলে জঙ্গল ঘেরা এই জাতীয় সড়কের ১৫ কিলোমিটারে জঙ্গিদের অস্তিত্ব ঠাউর করাটাই কঠিন। এই জাতীয় সড়কেই রয়েছে একটা ছোট্ট বাঁক। উমেররা ঠিক করেই ফেলল এখানেই হামলা করা হবে। এতদিন এই রাস্তা দিয়ে জওয়ানদের কনভয় গেলে অন্য গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হতো না। সম্প্রতি সেই নিয়ম শিথিল হয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে নিরাপত্তাবাহিনী অন্য গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে মরিয়া উমের।
 ঘরের ছেলেই যখন মানববোমা!
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, জয়েশের প্রায় জনা পঞ্চাশ জঙ্গি উপত্যকায় সক্রিয়। এদের মধ্যে একটা বড় অংশ আবার ভারতীয়। কাশ্মীরি। কামরানের নেতৃত্বেই দক্ষিণ কাশ্মীরে জয়েশ-ই-মহম্মদের নেটওয়ার্ক আরও মজবুত হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে উপত্যকার কমবয়সী ছেলেমেয়েদের মগজধোলাই করত সে। নাশকতামূলক কাজকর্মে তাদের যুক্ত করত। এরাই জওয়ানদের কনভয় চলাচলের যাবতীয় খবর পৌঁছে দিয়েছিল উমেরের কাছে।
৯ ফেব্রুয়ারি, সংসদভবন হামলায় সাজাপ্রাপ্ত আফজল গুরুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু কোনও কারণে তা হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত নামানো হয়েছিল ‘কাশ্মীরি যুবক’ আদিল আহমেদ দারকে। আদিলের জয়েশে যোগ দেওয়ার কিছু দিন আগেই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারায় জয়েশের কাশ্মীর প্রধান মুফতি ওয়াকাস। ২০ বছরের আদিল যে জঙ্গি হয়ে উঠবে, তা বোধহয় ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি উপত্যকা। দ্বাদশ শ্রেণির পড়া শেষ না করেই করাতকলে কাজে লেগে পড়েছিল ওই তরুণ। তারপর? গত বছরের ১৮ মার্চ বেপাত্তা হয়ে যায় সে। পরিবার যখন জানতে পারল, তখন হাতে একে-৪৭ নিয়ে সোশ্যাল সাইটে আদিলের ছবি পোস্ট হয়ে গিয়েছে। পোস্টে লেখা ছিল ‘ওয়াকাস কমান্ডো।’ দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার গুন্ডিবাগ গ্রামের সেই তরুণই এখন খবরের শিরোনামে।
প্রায় তিন মাস ধরে গাড়ি নিয়ে কনভয়ে ঢুকে আত্মঘাতী হামলা চালানোর অনুশীলন করেছিল আদিল। কীভাবে বিস্ফোরণ করতে হয়। আরডিএক্সের ব্যবহার ভালোভাবেই শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আদিলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ভার মাসুদ দিয়েছিল রশিদ গাজি ওরফে কামরানের উপরই। এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদিলকে কাশ্মীরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।পুলওয়ামায় আধাসেনার কনভয়ে হামলার আগে শীর্ষ জয়েশ জঙ্গি নেতা এবং পাকিস্তানি ‘হ্যান্ডলার’-রা আদিল এবং তার সঙ্গীদের যোগাযোগ রেখেছিল ‘ওয়াই এসএমএস’ প্রযুক্তিতে। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই প্রযুক্তি ব্যবহার হওয়াতেই হামলার আগে কোনও নজরদারিতেই ধরা পড়েনি জঙ্গিদের কথোপকথন।
তদন্ত করতে গিয়ে সেনা গোয়েন্দাদের হাতে জঙ্গিদের পাঠানো দু’টি বার্তা আসে। তার মধ্যে একটি বার্তায় রয়েছে: ‘সাকসেসফুল ফিউনেরাল অব মুজাহিদিন জয়েশ মহম্মদ’। দ্বিতীয় বার্তা হল: ‘ইন্ডিয়ান সোলজারস কিলড অ্যান্ড ডজনস অব ভেহিকলস ডেসট্রয়েড অন ফ্রেঞ্জি অ্যাটাক।’ এই বার্তা হাতে পাওয়ার পরই সেনা গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন জয়েশ জঙ্গিরা ‘ওয়াই এসএমএস’ প্রযুক্তিতে বার্তা চালাচালি করছে।
আদিলকে বেছে নেওয়ার আরও একটা কারণ রয়েছে। লেথপোরায় জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের উপর যে জায়গায় রাস্তার ভুল দিক দিয়ে এসে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে কনভয়ে হামলা চালায় ফিদায়েঁ জঙ্গি আদিল, সেখান থেকে তাঁর নিজের গ্রাম গান্ধীবাগের দূরত্ব বড়জোর ১০ কিলোমিটার। এই জেলার প্রতিটি রাস্তা, অলি-গলি খুব ভালো চেনে আদিল। তাছাড়া সংগঠন চালাতে গিয়ে মাসুদ দেখেছে স্থানীয় কাশ্মীরি জঙ্গিদের মনে একটা ক্ষোভ রয়েছে। স্থানীয় জঙ্গিরা মনে করে পাকিস্তানের জঙ্গিদের বেশি কঠিন কাজ দেওয়া হয়। স্থানীয়দের কাজে লাগানো হয় ছোটখাটো হামলায়। অনেক জঙ্গিই তাই বিরক্ত হয়ে সংগঠন ছাড়ার কথা ভাবছে। তাই এবার মাসুদ একেবারে ঘরের ছেলে আদিলকেই ওই দায়িত্ব দিয়ে এক ঢিলে দু’পাখি মারার চেষ্টা করে। প্রথমত, স্থানীয় জয়েশ জঙ্গিদের ক্ষোভ দূর হবে। আর দ্বিতীয়ত কাশ্মীরি দিয়ে হামলা করাতে পারলে পাকিস্তানকে আড়াল করা যাবে। আইএসআইয়ের দিকেও আঙুল উঠবে না। যদিও পুলওয়ামা হামলার পর প্রাক্তন মার্কিন গোয়েন্দা কর্তা ব্রুস রিডলের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘যেভাবে তড়িঘড়ি জয়েশ এই হামলার দায় নিয়েছে, তাতে এই ঘটনার পিছনে আইএসআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই।’
 প্রেম দিবসে হামলা
১৪ ফেব্রুয়ারি। বিকেলে সাড়ে ৩টে নাগাদ প্রায় ৭০টি গাড়ির বিশাল কনভয় জম্মু থেকে শ্রীনগরের পথে ফিরছে। অবন্তীপোরার লাট্টুমোরের কাছে সেই অভিশপ্ত জায়গায় হঠাৎই একটি গাড়ি দেখা গেল। বেশ দ্রুত গতিতে সব কনভয়কে ওভারটেক করে গাড়িটা যেন ঊর্ধ্বশ্বাসে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কনভয়ের পাঁচ নম্বর গাড়িটার কাছে এসে ওই ছোট্ট গাড়িটা দুম করে ধাক্কা দিতেই বিস্ফোরণ। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেল সমগ্র এলাকা। অনেকটা সিরিয়া ও আফগানিস্তানের কায়দাতেই জঙ্গি হামলা। গাড়িতে থাকা সিআরপিএফ জওয়ানদের দেহগুলি ছিটকে পড়ল ১০০ মিটার দূরে। সব ছিন্নভিন্ন। মুহূর্তে শহিদ হয়ে গেল ৪৯টি তাজা প্রাণ। সেদিন সারাটা দিন সূর্যের মুখ দেখেনি অবন্তীপোরা। বিকেলে কনকনে ঠান্ডা আর টিপটিপে বৃষ্টির মধ্যে বীভৎস এক ছবি। প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে সেনাদের ছুটোছুটি, অ্যাম্বুল্যান্সের হুটার। ভিজে রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে রক্ত-মাংস, মানব দেহের নানা অঙ্গের টুকরো। তারই পাশে পড়ে উড়ে যাওয়া ট্রাকের যন্ত্রপাতির অংশ, নাটবল্টু। পোড়া ডিজেল-মোবিলের কালোর পাশেই কালচে লাল টাটকা রক্তের পোঁচ। বাতাসে পোড়া গন্ধ। পথ ভুলে এ যেন সিরিয়া কিংবা আফগানিস্তানের কোনও যুদ্ধক্ষেত্র!
বিস্ফোরণের অভিঘাতে বহু বাড়ি কেঁপে ওঠে। ফাটল ধরে কোনও কোনওটির দেওয়ালে। কান ফাটানো বিস্ফোরণের শব্দে অবন্তীপোরা বাজার খালি হয়ে গিয়েছিল নিমেষে। রাস্তায় পড়ে নিহত জওয়ানদের ব্যাগ, রুকস্যাক। জওয়ানদের কেউ ঘুরে ঘুরে রাস্তা থেকে সেগুলি কুড়িয়ে বড় বস্তায় রাখছেন। চোখে জল। ফুঁপিয়ে কাঁদছেন শক্ত চেহারার মানুষগুলি। অসহ্য সেই দৃশ্য!
ঘটনার পরেই আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করে নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করে মাসুদ আজহারের সংগঠন। ভিডিওতে জয়েশের মুখপাত্র মহম্মদ হাসান দাবি করে, হামলা চালিয়েছে আদিল আহমেদ ওরফে ওয়াকাস নামে তাদের এক ফিদায়েঁ। হামলার কয়েক মিনিট আগে তোলা আদিলের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে জয়েশের কয়েকটি হামলার কথা ফলাও করে বলে আদিল জানিয়েছে, এই ভিডিও যখন সকলে দেখবেন, তখন সে বেহস্তে। কী ভয়ঙ্কর ভাবুন!
 সাংবাদিক সেজে জঙ্গি
১৯৯৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। শ্রীনগরে একজন ২৬ বছরের সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করল নিরাপত্তা বাহিনী। তার কাছে রয়েছে ভুয়ো পর্তুগিজ পাসপোর্ট। ২৬ বছরের ওই যুবককে দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই কেন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এত পছন্দ করে তাকে। যুবকের নাম মাসুদ আজহার। মাসুদ তুখোর বক্তা। এবং একজন দক্ষ সংগঠক। তাই আইএসআইয়ের প্রিয়পাত্র সে। গোপনে তাকে সেই সময়কার জঙ্গি সংগঠন হরকত উল মুজাহিদিনের কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে পাঠিয়েছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা। কিন্তু ধরা পড়ে যায় সে। জম্মুর ভালওয়াল জেলে তাকে দিনের পর দিন জেরা করেছেন সিকিমের প্রাক্তন ডিজিপি অবিনাশ মহানানে। সেদিনের জেরার কথা স্মরণ করে তিনি বলেছেন, ওকে জেরা করার কাজটা মোটেও কঠিন ছিল না। আর্মি অফিসারের একটা থাপ্পড় খেয়েই সব তথ্য দিয়ে দিয়েছিল মাসুদ। জেরায় গড়গড় করে আইএসআই, তাদের জেহাদ নিয়ে কথা বলত সে। কিন্তু গর্বের সঙ্গে জানাতে ভোলেনি, হিথরো বিমানবন্দরে সে নামলে, তাকে দেখতে ভিড় জমে যাবে। এমনকী, একথাও তদন্তকারীদের জানিয়ে দিয়েছিল, বেশিদিন সে জেলে থাকবে না। আইএসআই ঠিকই তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে। সত্যিই চেষ্টা হয়েছিল। অক্টোবর মাসে ইলিয়াস কাশ্মীরি আর ওমর সইদ শেখ নামে দুই কট্টর জঙ্গি তিন ব্রিটিশ আর এক আমেরিকানকে অপহরণ করে মুক্তিপণ হিসেবে মাসুদকে মুক্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। ধরা পড়ে যায় ওমর সইদ শেখ। তবে পালাতে সক্ষম হয় ইলিয়াস। এর পাঁচ বছর পরে ঘটে কান্দাহার বিমান অপহরণ ঘটনা। ৩১ ডিসেম্বর আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ করল জঙ্গিরা। মুক্তিপণ হিসেবে জেল থেকে মাসুদ আজহারকে মুক্ত করে দিল তৎকালীন বাজপেয়ি সরকার। মাসুদ ছাড়া পেয়ে সোজা চলে গেল পাকিস্তান। তারপর সেখানে বসেই তৈরি করল নিজের সংগঠন, জয়েশ-ই-মহম্মদ।
 ভারতের মাটিতে জয়েশ হামলা
২০০১। ভারতীয় সংসদে হামলা চালাল জঙ্গিরা। গোয়েন্দা বিভাগ দেখল এই হামলার নেপথ্যে জয়েশ জঙ্গিরা। অর্থাৎ ভারতের বুকে প্রথম বড় হামলা চালিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছিল মাসুদ। উপত্যকায় জয়েশ যে খুব একটা সক্রিয় ভূমিকায় ছিল তা মোটেই নয়। বরং লস্কর-ই-তোইবা বা হিজবুল মুজাহিদিনের জনপ্রিয়তায় আড়ালেই চলে গিয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে ফের পাদপ্রদীপের আলোয় চলে এসেছে জয়েশ। কারণটাও অবশ্য পরিষ্কার। সাম্প্রতিককালে বুরহান ওয়ানি সহ হিজবুলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারকে নিকেশ করে দিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। লস্করের লোকজনও তেমন নেই। তাই আইএসআইয়ের সবেধন নীলমণি বলতে এখন জয়েশ। মাসুদও নিজের সংগঠনের ‘জোশ’ দেখাতে বদ্ধপরিকর। পাঠানকোট, উরি, নাগরোটা থেকে শুরু করে পুলওয়ামা। উপত্যকায় নিজেদের অস্তিত্ব ভালোই জানান দিয়েছে মাসুদ। উপত্যকায় স্নাইপার হামলা জয়েশের আমদানি। এখন সোশ্যাল মিডিয়া ও এনক্রিপটেড মেসেঞ্জার ব্যবহার করা শুরু করেছে জয়েশ।
বরাবরই ভালো বক্তা হিসেবে নামডাক রয়েছে মাসুদের। পুলওয়ামা হামলার দিন কয়েক আগেই জয়েশের এক কর্মিসভায় ভাষণ দিয়ে সে বলে, গুগলে পুলওয়ামা সার্চ কর। দেখবে জয়েশের পতাকা। আর প্রত্যেক বাড়িতে জয়েশ প্রধানের ছবি। আমাদের প্রিয় ফিদায়েঁদের আত্মত্যাগে আমরা এই জায়গায় পৌঁছেছি। কিন্তু আমাদের কাজ শেষ হয়নি। ভাইপো উসমান আর তিন ফুটিয়া তলহার আত্মত্যাগের কথাও সকলকে শোনায় সে। এই ভাষণের ঠিক ন’দিনের মাথায় পুলওয়ামার হামলা। গোয়েন্দারা বলছেন, মাসুদ বেশ অসুস্থ। পাকসেনা হাসপাতালে ভর্তি। সেখানকার বেডে শুয়েই পুলওয়ামা হামলার ছক কষেছিল সে। খুব বিশ্বস্ত ছাড়া কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি সেই পরিকল্পনা।
 ফাঁকা আওয়াজ ইমরানের
সবে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরছিলেন কেউ। কেউ আবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ছুটিতে যাওয়ার। সংসার পাতার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন কেউ। কেউ আবার অবসর জীবনের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সবই অধরা থেকে গেল। মুহূর্তে ৪৯ ভারতীয় জওয়ানের শহিদ হয়ে যাওয়ার পরও পুলওয়ামা হামলার দায় অস্বীকার করে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কে না জানে, কাশ্মীরে জঙ্গিদের রমরমার মদতদার পাকিস্তান। অতীতের প্রতিটি ঘটনাতেই তা হয়েছে। ভবিষ্যতেও যদি আরও একটা পুলওয়ামা ঘটে, তাহলে তা–ও হবে পাকিস্তানি মদতেই। অথচ, ইমরান সাংবাদিক সম্মেলন করে বলে দিলেন, পুলওয়ামা হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার প্রমাণ দিক ভারত। ভারত আক্রমণ করলে প্রত্যাঘাত, ফাঁকা আওয়াজ দিতেও ভোলেননি ইমরান।
ভারতের তরফে পাল্টা জবাব: মাসুদ আজহার বাহাওয়ালপুরে বসে আইএসআই-এর সঙ্গে আলোচনা করে হামলা ঘটিয়েছে। যান, তাকে গ্রেফতার করুন। না পারলে বলুন, আমরা আপনার হয়ে করে দিচ্ছি। আসলে পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় পাকিস্তান যোগ স্পষ্ট। পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট জয়েশ জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে সেই তথ্যপ্রমাণও উঠে এসেছে। তাই পাকিস্তানের উপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। জয়েশ হামলার দায় নেওয়ার পরে আর কী প্রমাণ চাওয়ার থাকতে পারে। ভারতীয় সেনার হাতে কামরান আর হিলাল নামে যে দুই জয়েশ জঙ্গি খতম হয়েছে, তারাও পাক নাগরিক বলে জানা গিয়েছে।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বিস্ফোরণে যে আরডিএক্স ব্যবহার করা হ য়েছিল, তা অত্যন্ত উন্নত মানের ‘মিলিটারি গ্রেড’ আরডিএক্স। মিলিটারি গ্রেড, অর্থাৎ এই মানের আরডিএক্স ব্যবহার করে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতীয় সেনা। প্রাথমিক তদন্তের পরে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা এই নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গেই আরও নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে পুলওয়ামা নাশকতায় পাক যোগসাজশের বিষয়টি। শুধু এই বিস্ফোরকই নয়, তদন্তকারীদের স্ক্যানারে রয়েছে কয়েকটি ফোনকলও। পুলওয়ামা হামলার আগে ও পরে পাকিস্তান থেকে কয়েকটি সন্দেহজনক ফোনকল এসেছিল। এখন গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, ওই ফোনকলগুলি কারা করেছেন এবং কাদের করা হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, জ্যারিকেনের মধ্যে আরডিএক্সগুলি রাখা হয়েছিল। সেই জ্যারিকেনগুলি মজুত করা হয়েছিল একটি গাড়িতে। আরডিএক্সের গুণমান ও তার ব্যবহার কৌশল দেখে তদন্তকারীরা নিশ্চিত ওই বিস্ফোরক পাক সেনাবাহিনীর কাছ থেকেই পাওয়া। এবং সেই বিস্ফোরক ব্যবহারের জন্য খুবই দক্ষ ব্যক্তি সীমান্তের ওপার থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তদন্তে অনুমান, ওই আরডিএক্স ভারতেই অ্যাসেম্বল করা হয়েছিল। ট্রিগার সুইচ, ডিটোনেটর ও পাওয়ার ফিউজ বিস্ফোরণের দিনক্ষণ ও সময় চূড়ান্ত হওয়ার পরেই তাতে বিস্ফোরকে লাগানো হয়েছিল। এক বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সাধারণভাবে আল-কায়েদা বা আইএস জঙ্গিরা যেমন বিস্ফোরণ ঘটায়, পুলওয়ামায় তেমনই হয়েছিল। বিস্ফোরণের পর এলাকাটি কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় ও সবকিছুই গলে গিয়েছিল।
উদ্বেগ একটাই! কাশ্মীরি জঙ্গিদের হাতে কি তাহলে পৌঁছে গিয়েছে মিলিটারি গ্রেডের আরও কিছু বিস্ফোরক? আরডিএক্স ছাড়াও যার মধ্যে আছে পিইটিএন (পেন্টাএরিথ্রিটল টেট্রানাইট্রেট) এবং টিএনটি (ট্রাইনাইট্রোটলুইন)।
ইমরান খানের পরের দিনই পুলওয়ামা হামলা নিয়ে মুখ খুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুলওয়ামায় জয়েশ জঙ্গিদের হানাকে ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলায় ‘যেই দোষী হোক, কড়া শাস্তি দিক পাকিস্তান’, মন্তব্য মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের সহ-মুখপাত্র রবার্ট পালাডিনোর। ভারতকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন পালাডিনো।
 এবার ভারত কী করবে?
১৯৭১-এর বাংলাদেশ যুদ্ধ জয়ের পরবর্তী ১৮ বছর ধরে দু’দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ছিল। জোর করে শক্তি প্রদর্শন করে ভারত তার প্রতিবেশীর মানসিকতার পরিবর্তন করতে পেরেছিল। তবে তা বেশিদিন টেকেনি। ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জেহাদিরা কাশ্মীরে প্রবেশ করতে শুরু করে দিল। এর এক দশক বাদে, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে হারের পর পাকিস্তান এই অসম যুদ্ধনীতি থেকে সরে এল। ততদিনে চার চারটি যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে পাকিস্তান। দেশের অর্থনীতি আরও একটি যুদ্ধ হারের চাপ সামলাতে পারবে না। এর পরেই কাপুরুষোচিত প্রক্সি সন্ত্রাসবাদকে হাতিয়ার করে ভারতকে রক্তাক্ত করা শুরু করে দিল পাকিস্তান। কার্গিল পরবর্তী সময়ে একের পর এক জঙ্গি হামলা দেখা গেল। সংসদ ভবনে, মুম্বইয়ের ২৬/১১, গুরদাসপুর, পাঠানকোট, উরি এবং এবার পুলওয়ামা।
উরির হামলার পরে ভারত সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল। কিন্তু পুলওয়ামার পর কী হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে ভাতে মারতে মোস্ট ফেভারড নেশন প্রত্যহার করা অথবা আমদানি করা পণ্যে ২০০ শতাংশ কর চাপানোর কাজটা ভারত করে ফেলেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসলামাবাদকে একঘরে করার কাজও চলছে। যেভাবে আমেরিকা সহ ৪৮টি দেশকে ভারত পাশে পেয়েছে, তাতে কূটনৈতিকভাবে এগিয়ে মোদি সরকার।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুলওয়ামার বদলা ঠিক কেমন হবে? প্রথমত, মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গির তকমা দেওয়া। এক্ষেত্রে প্রধান বাধা চীন। এর আগেও তারা এই প্রশ্নে আপত্তি তুলেছিল। ফলে রাষ্ট্রসঙ্ঘ মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি বলতে পারেনি। তাই কূটনৈতিকভাবে চীনকে ম্যানেজ করতে পারলে ফায়দা পেতে পারেন মোদি। কিন্তু সেই কাজটি কঠিন। দ্বিতীয় প্রশ্ন হল সামরিক অভিযান। আবার সার্জিকাল স্ট্রাইক। কিন্তু এবার এই কাজ সফল হওয়া কঠিন। কারণ ঠেকে শিখে গিয়েছে জঙ্গিরা। তারা সীমান্ত থেকে পাততাড়ি গুটিয়েছে। দ্বিতীয়ত, বায়ুসেনার হামলা। কিন্তু পাক রেডারে ধরা পড়ে গিয়ে দু’একটি বিমান ধ্বংস হলে বা কোনও পাইলট বন্দি হলে ফল হিতে বিপরীত হতে পারে। তৃতীয়ত, সোজাসাপ্টা যুদ্ধে যাওয়া। কিন্তু এর পরিণাম কোনও পক্ষেরই ভালো হবে না। চতুর্থত, যেটা হতে পারে, সেটি হল অপরাধীকে সরাসরি ধরা। আমেরিকা যেমনভাবে ওসামাকে খতম করেছে, তেমনিভাবে মাসুদ কিংবা হাফিজ সইদের মতো ভয়ঙ্কর জঙ্গিকে পাকিস্তানের মাটি থেকে উপড়ে দেওয়া।
আকাশ থেকে মাসুদের ডেরাতেই আঘাত হানতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘প্রিসিশন এয়ার স্ট্রাইক’ অর্থাৎ নিখুঁত বিমান হানা। বায়ুসেনার সেই ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তার জন্য একেবারে নিখুঁত, গোয়েন্দা তথ্য থাকতে হবে। এ সব করতে গিয়ে পুরো দমে যুদ্ধ লেগে গেলে কী হবে, তার হিসেবও নিখুঁত ভাবেই কষতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পাকিস্তানকে বড় মাপের মূল্য চোকাতে হবে। পাল্টা আঘাত চালাতে বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
গোটা দেশও বলছে, পুলওয়ামার শহিদদের জন্য বদলা চাই!
গ্রাফিক্স  সোমনাথ পাল
সহযোগিতায়  স্বাগত মুখোপাধ্যায়
24th  February, 2019
রাজনীতির ভাগ্যপরীক্ষা
আকাশদীপ কর্মকার

 এই মুহূর্তে দেশের রাজনীতিতে মুখ্য আলোচিত বিষয় লোকসভা নির্বাচন। রাজনীতিকদের ভাগ্যপরীক্ষা। এই নির্বাচনে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের শক্তি পরীক্ষার পাশাপাশি ভাগ্য পরীক্ষা দেশের হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদেরও।
বিশদ

21st  April, 2019
প্রতীক বদলে ডিজিটাল ছোঁয়া
দেবজ্যোতি রায়

সাহিত্য বা লেখালিখিতে সর্বদা সময়ের দাবিই উঠে আসে। প্রতিফলিত হয় তৎকালীন সময়ের পটভূমি, চরিত্র, চিত্রায়ন। অতীতেও হয়েছে, আধুনিক বা নব্য আধুনিক যুগও তার ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে আধুনিক সাহিত্য বা পটভূমির একটা বড় অংশ দখল করে নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যম।
বিশদ

21st  April, 2019
শতবর্ষে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড

১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগে একটি প্রতিবাদ সভায় জেনারেল ডায়ার বিনা প্ররোচনায় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিলেন। এ বছর ওই হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর। সেদিনের ঘটনা স্মরণ করলেন সমৃদ্ধ দত্ত।
বিশদ

14th  April, 2019
প্রথম ভোট
সমৃদ্ধ দত্ত

সকলেই চাইছে লাঙল। ১৯৫১ সালের ১ জুলাই। রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে দেশের প্রথম নির্বাচন কমিশনার সুকুমার সেন মিটিং ডেকেছেন। নির্বাচনী প্রতীক বন্টন করা হবে। প্রতিটি দলকে বলা হয়েছিল আপনারা নিজেদের পছন্দমতো প্রতীক নিয়ে আসবেন সঙ্গে করে। সেটা প্রথমে জমা নেওয়া হবে। তারপর স্থির করা হবে কাকে কোন প্রতীক দেওয়া যায়। কিন্তু, মিটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল ঝগড়া শুরু হয়ে গেল। কারণ প্রায় সিংহভাগ দলেরই পছন্দ লাঙল। কেন?
বিশদ

07th  April, 2019
সিনেমার রাজনীতি
শাম্ব মণ্ডল

সেদিন পোডিয়ামে উঠেই শ্রোতাদের চমকে দিয়ে একটা ডায়লগ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি: ‘হাও ইজ দ্য জোশ?’ এক মুহূর্ত দেরি না করে শ্রোতাদের মধ্যে থেকে সমস্বরে উত্তর এসেছিল ‘হাই স্যর!’ যিনি ডায়লগটা শ্রোতাদের উদ্দেশে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি আর কেউ নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ২০ জানুয়ারি মুম্বইয়ে ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ইন্ডিয়ান সিনেমা-র উদ্বোধনে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখেও তখন ‘উরি’র ক্রেজ।
বিশদ

31st  March, 2019
ভোট মানেই তো
স্লোগানের ছড়াছড়ি
কল্যাণ বসু

ভোটের মাঠে হরেক রকমের সুর। স্লোগানে মেলে ছড়ার ছন্দ। গ্রাম-শহরের অলি-গলি ছাপিয়ে রাজপথে মাইকে ভাসে সেই ছন্দময় স্লোগান। চলে স্লোগান নিয়ে শাসক-বিরোধীর আকচা-আকচিও। বহু স্লোগান দাগ কেটে যায় দেশের মাটিতে। বহুকাল টিকে থাকে তার স্মৃতিও। দেশের সৈনিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য ১৯৬৫ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর স্লোগান ‘জয় জওয়ান, জয় কিষান’ আজও তো কত ইতিহাসের সাক্ষী। 
বিশদ

31st  March, 2019
স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভারতের ভোট
ব্যবস্থার রূপকার সুকুমার সেন
অভিজিৎ দাস

রাস্তাঘাটের দুর্বিষহ দশা। কোথাও আবার রাস্তাই নেই। বিস্তর ঝক্কি পেরিয়ে প্রত্যন্ত গাঁ-গঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছনো। দেশের সিংহভাগ জায়গা টেলি যোগাযোগের বাইরে। এখনও বাকি পড়ে রয়েছে বহু কাজ। তার মধ্যেই বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি হল। তাতে চোখ বুলিয়ে আঁতকে উঠলেন এক বঙ্গসন্তান।
বিশদ

24th  March, 2019
বদলে যাওয়া
ভোট
রজত চক্রবর্তী

 নির্বাচন গ্রামে-গঞ্জে-মফঃস্বলে আগে উৎসবই ছিল। তোরঙ্গ থেকে পাট ভাঙা শাড়ি পরতেন মা-মাসিরা। সেখান থেকে প্রচারে চলে এল ক্যাপশান, ‘গণতন্ত্রের মহান উৎসব নির্বাচন’। এই প্রচারের উল্টোপিঠে ছিল আরও একটি প্রচার। ‘নির্বাচন কোনও উৎসব নয়, আপনার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাবার পদ্ধতি’।
বিশদ

24th  March, 2019
লাগল যে দোল
সন্দীপন বিশ্বাস

বসন্তের প্রকৃতিজুড়ে রংয়ের ঝরনাধারা। শিমুলে, পলাশে সে কী শিহরণ! হৃদয়জুড়ে জেগে ওঠে আকুলতা। রাধার হৃদয়েও জাগে তীব্র প্রত্যাশা। তাঁর মন যেন বলে ওঠে, মাধব, তুমি কোথায়! আমার এই শ্যামহীন বিবর্ণতা মুছে দাও তুমি তোমার স্পর্শে। তোমার স্পর্শেই আছে পৃথিবীর অনন্ত রং। সেসব ছড়িয়ে পড়ুক আমার শরীরে, অন্তরে।
বিশদ

17th  March, 2019
পুরাণে ও ইতিহাসে হোলি

আমরা বলি দোল। উত্তর ভারতের লোকেরা বলেন হোলি। এই হোলি শব্দটি এসেছে হোলিকা থেকেই। হোলিকা হল পুরাণের এক চরিত্র। সে ছিল দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর বোন। স্বভাবে সে ছিল অত্যন্ত দুষ্টু প্রকৃতির। হিরণ্যকশিপু ছিলেন বিষ্ণুর বিরোধী। তাঁর ছেলে প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর পরম ভক্ত।  বিশদ

17th  March, 2019
বেলুড় মঠে দোল

ফাগুন সেজে ওঠে পলাশের রংয়ে। শীতের শুষ্কতা এবং গ্রীষ্মের রুক্ষতার মাঝে এ এক নির্মল প্রাকৃতিক আনন্দের সময়কাল। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হয় রং খেলা। অন্যান্য জায়গার মতো বেলুড় মঠেও দোল খেলা হয়। সকলে ফাগের আনন্দে মেতে ওঠেন। কিন্তু সেই মেতে ওঠাটার ভিতরে মিশে থাকে অন্য এক তাৎপর্য।
বিশদ

17th  March, 2019
 ওয়ার রুম

গোটা ভারত উত্তাল। পাকিস্তানকে জবাব দিতে হবে। মুখের মতো। সাউথ ব্লক। ভারত তথা দিল্লির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং। এটাই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স চিফদের অফিস, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসর অজিত দোভালের দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চেম্বার। সেকেন্ড ফ্লোর।
বিশদ

10th  March, 2019
অপারেশন বালাকোট
সমৃদ্ধ দত্ত

ডাল লেকের উল্টোদিকের হোটেলের পাশেই সরু রাস্তাটা একটু উপরের দিকে চলে যাচ্ছে। ওটা দিয়ে উঠে দেখা যাবে একজন হাকিমের চেম্বার। সেটারই পিছনে ঘর। কাঠের। মকসুদ যাবে চা আনতে। ছেলেটা অনন্তনাগের। খুবই ভালো। কাশ্মীরিয়াতের আদর্শ একেবারে মনের মধ্যে শিকড়ের মতো প্রোথিত। বিশদ

10th  March, 2019
এবার টার্গেট
মাসুদ আজহার
মৃন্ময় চন্দ

 পড়াশোনার ব্যাপ্তি ক্লাস এইট, লিখে ফেলেছে আটটি বই। সম্পাদনা করে বহুল প্রচারিত একটি ধর্মীয় পত্রিকা। বরাবরই লাদেনের স্নেহ ও আস্থাভাজন। যুদ্ধ করতে গিয়েছে সোমালিয়ায়। মেদবহুল শরীর। গানের গলা ভারী মিষ্টি। সাপের মতই কুটিল-হিংস্র সে। দীর্ঘদিনের সহচরকে হিলহিলে জিঘাংসায় খুন করতে দুবার ভাবে না। ঠিকা নিয়েছে সে, এই বিশ্বকে তারই মত মৌলবাদী মুসলিমের পেলব সুশীতল বাসভূমি করে তুলবে। বিধর্মী কাফের সাফ করে। রেহাই পাবে না এমনকী মুক্তমনা মুসলিমরাও।
বিশদ

03rd  March, 2019
একনজরে
 নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারপিট চলার সময় ভাইয়ের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যান দাদা। যোধপুর পার্কের তালতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ...

 ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে যেসব সংস্থার শেয়ার গতকাল লেনদেন হয়েছে শুধু সেগুলির বাজার বন্ধকালীন দরই নীচে দেওয়া হল। ...

নোৎরদমের ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫২ একরের ওক গাছের জঙ্গল কেটে সাফ করে বানানো হয়েছিল এই গির্জা। অন্দরসজ্জার মূল কাঠামো তৈরি করতে লেগেছিল অন্তত ...

সংবাদদাতা, মালবাজার: চিতাবাঘের আতঙ্কে রাত জাগছে ধূপগুড়ি ব্লকের বানারহাটের ডুডুমারি, জ্বালাপাড়া ও আলে এই তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়াও ওই তিনটি গ্রামের ছয়টি স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যেও ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব বই দিবস
১৬১৬ -ইংরেজী সাহিত্য তথা বিশ্বসাহিত্যের প্রথম সারির নাট্যকার ও সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপীয়রের জন্ম
১৯৪১ - বিশ্বের প্রথম ই-মেইল প্রবর্তনকারী রে টমলিনসনের জন্ম
১৯৬৯: অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ির জন্ম
১৯৯২: সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৬৮.৯৫ টাকা ৭০.৬৪ টাকা
পাউন্ড ৮৯.০৮ টাকা ৯২.৩৬ টাকা
ইউরো ৭৬.৯৮ টাকা ৭৯.৯৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩১, ৯৯৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩০, ৩৫৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩০, ৮১০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৩৭, ৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৩৭, ৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
21st  April, 2019

দিন পঞ্জিকা

৯ বৈশাখ ১৪২৬, ২৩ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, চতুর্থী ১৪/৩৫ দিবা ১১/৪। জ্যেষ্ঠা ৩০/৫ অপঃ ৫/১৬। সূ উ ৫/১৪/২০, অ ৫/৫৫/৫৪, অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৫ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে ৫/৫ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪১ মধ্যে পুনঃ ৮/৫৬ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ১/২৭ গতে ২/৭ মধ্যে, বারবেলা ৬/৪৯ গতে ৮/২৪ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৫ মধ্যে, কালরাত্রি ৭/২০ গতে ৮/৪৫ মধ্যে।
৯ বৈশাখ ১৪২৬, ২৩ এপ্রিল ২০১৯, মঙ্গলবার, চতুর্থী ২০/১৭/২৩ দিবা ১/২১/৪৫। জ্যেষ্ঠানক্ষত্র ৩৫/৫৫/৫৪ রাত্রি ৭/৩৭/১০, সূ উ ৫/১৪/৪৮, অ ৫/৫৭/১২, অমৃতযোগ দিবা ৭/৪০ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/৫১ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৩/২৭ গতে ৫/১১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৭ মধ্যে ও ৯/০ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ১/২৩ গতে ২/৫১ মধ্যে, বারবেলা ৬/৫০/৬ গতে ৮/২৫/২৪ মধ্যে, কালবেলা ১/১১/১৮ গতে ২/৪৬/৩৬ মধ্যে, কালরাত্রি ৭/২১/৫৪ গতে ৮/৪৬/৩৬ মধ্যে।
১৭ শাবান
এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল  
মেষ: শত্রু বশ মানতে বাধ্য হবে। বৃষ: কর্মক্ষেত্রে স্বীকৃতি লাভ। ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে

বিশ্ব বই দিবস১৬১৬ -ইংরেজী সাহিত্য তথা বিশ্বসাহিত্যের প্রথম সারির নাট্যকার ...বিশদ

07:03:20 PM

আইপিএল: সিএসকের সামনে ১৭৬ রানের টার্গেট খাড়া করল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ  

09:37:59 PM

 আইপিএল: হায়দরাবাদ ৯১/১ (১০ ওভার)

08:50:51 PM

গুরদাসপুরে সানি দেওলকে প্রার্থী করল বিজেপি 

08:08:03 PM

টসে জিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ব্যাট করতে পাঠাল সিএসকে 

07:36:29 PM