উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
প্রঃ আপনার রাজ্যে ভোটের পরিবেশ। কী চান ভবিষ্যতের এমপিদের কাছে?
উঃ প্রথম চাইব যিনিই আসুন, চাষিদের চোখের জল আগে মুছুন। দেশের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৭ শতাংশ আসে চাষবাস থেকে। দেশের অর্ধেক মানুষই চাষবাসের উপর নির্ভরশীল। যখন বৃষ্টি কম হয়, খরা হয়, চাষিরা বিপদে পড়েন। ঘরে টাকা আসে না। যখন বৃষ্টি বেশি হয়, তখনও চাষিরা বিপদে পড়েন। এমনকী বৃষ্টি এবং ফসল পর্যাপ্ত হলেও তার দাম পান না কৃষকরা। বিপদ তো তখনও! আর চাষিরা যদি ভালো না থাকেন, দেশের অর্থনীতিও ভেঙে পড়ে। ছোটবেলার একটা বড় সময়ই গ্রামে কেটেছে। তাই ভালো বুঝি ওই যন্ত্রণা।
প্রঃ তাহলে চাষিদের দুঃখ ঘোচানোর পথ কী?
উঃ দেশের ৩০ কোটি যুবসমাজের জন্য কাজের ব্যবস্থা করা। বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়ে সেই চ্যালেঞ্জ পূরণের দায়িত্ব নিতে হবে ভাবী সরকারকে। চাকরির ব্যবস্থা হলে এত মানুষের, বিশেষত চাষি পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের সবাইকে চাষবাসে আসার দরকারই পড়বে না। আর যে ক’জন চাষবাসে থাকবেন, তাঁরা যেন টাকার মুখ দেখতে পান। বাস্তব বিষয়টা সরকারকে বুঝতে হবে, ঋণ মকুব করে স্থায়ীভাবে চাষিদের দুঃখ ঘোচানো যায় না। এটা কোনও সমাধানই নয়। চাষিরাও জানেন, ভোটের এক বছর আগে মোটা ঋণ নিলেও চিন্তা নেই। কোনও না কোনও পার্টির সরকার ঠিক মকুব করে দেবে। আসলে দরকার ফসলকে আরও নিত্যনতুনভাবে প্যাকেজিং-এর মাধ্যমে বাজারজাত করা। কোল্ড চেন ভালো করা। তাহলে চাষি পরিবারের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সবাইকে এ পেশায় আসতে হবে না। এত লোক লাগে না চাষ করতে!
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে বলি, একটা বিষয় সত্যিই মাথায় আসে না, এত বিএ, বিএসসি তৈরি করে আমরা করছিটা কী? বাস্তব উপযোগী কী শেখাচ্ছি তাঁদের? ব্রিটিশরা স্বাধীনতার আগে এ সম্প্রদায় তৈরি করেছিল নিজেদের কার্যসিদ্ধির জন্য। আমরা কেন করছি?
কর্মসংস্থানে সর্বাগ্রেই আসে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্র। পৃথিবীর পঞ্চম বেশি কর্মসংস্থান করে ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস। অধিকাংশ দেশেই তাই। সেজন্য দরকার বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশ। যাতে আমার মতো মানুষও ধার করেও নতুন হাসপাতাল তৈরি করতে পারে।
প্রঃ আপনি পরিকাঠামো ভালো করার কথা বলছেন। আপনার নিজের শহর বেঙ্গালুরুই তো ট্রাফিক, জল, দূষণ ইত্যাদি সমস্যায় ধুঁকছে।
উঃ বেঙ্গালুরু আগে ছিল গার্ডেন সিটি। এখন হয়েছে গারবেজ সিটি। এমন যে হবে, ১০-১২ বছর আগেই তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু কোনও পরিকল্পনাই নেওয়া হয়নি।
প্রঃ দক্ষিণী রাজ্যে ভোট এবং টাকার খেলাও যে সর্বজনবিদিত।
উঃ কী আর বলব! অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আসলে মানুষ ভাবেন, তাঁর ভোটের মূল্য আছে। এখন সেই মূল্য মেটানো নিয়েই যত গোলমাল বেধেছে। (হাসতে হাসতে) একদিন হয়তো এমনও হবে, যখন এখানে ভোটাররা প্রত্যেক দলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের ভোটের মূল্য নিলামে চড়ানোর মতো ঠিক করবেন কাকে ভোট দেবেন!
প্রঃ কর্ণাটকের ভবিষ্যতের এমপি এবং অবশ্যই ভাবী কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কী চাইবেন?
উঃ দু’পক্ষের কাছ থেকেই চাইব কৃষকদের দুর্দশা মেটাতে এবং কর্মসংস্থান বাড়াতে। বিশেষত রাজ্যের এমপিদের বলব বেঙ্গালুরুর সমস্যা মেটান। বেঙ্গালুরুই কিন্তু রাজ্যের অর্থমন্ত্রক। শহর ডুবলে, সব ডুববে।
এই তো ক’দিন আগে কাজে দুবাই গিয়েছিলাম। দুবাই থেকে বেঙ্গালুরুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছালাম আড়াই ঘণ্টায়। আর এয়ারপোর্ট থেকে শহরে আমার বাড়ি (কোরামঙ্গল) পৌঁছালাম কতক্ষণে শুনবেন? তিন ঘণ্টা! ৪০-৪১ কিমি!
প্রঃ আপনাদের এখানে তো ফিল্মস্টার মানেই রাজনীতিতে। এখন অন্যান্য পেশার মানুষও পলিটিক্স-এরাজনীতিতে আসছেন। দেবী শেঠির কোনও পরিকল্পনা?
উঃ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কতটুকুই জানি! তবে আমি এটা নিশ্চিতভাবে জানি, আর যাই হোক না কেন, কোনওদিন রাজনীতিতে নয় (অট্টহাসি)!