পিমালগাঁও ও নন্দুরবর (মহারাষ্ট্র), ২২ এপ্রিল (পিটিআই): জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে আরও একবার পূর্বতন ইউপিএ সরকারকে একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার নাসিকের সভা থেকে তিনি বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাসদমনে একাধিক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। অথচ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ইউপিএ সরকার সন্ত্রাসবাদ দমনে ভীতির পরিচয় দিয়েছিল। ইস্টার সানডের মধ্যে শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় একাধিক গির্জা, বিলাসবহুল হোটেলে জঙ্গিদের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বীপরাষ্ট্রেজঙ্গিহানার একদিন পর নাসিকের পিমালগাঁওয়ে সভা থেকে সন্ত্রাসদমনে তিনি তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। মোদির কথায়, ‘জম্মু ও কাশ্মীর সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসবাদের শিকড় নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে দেশের পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম। জম্মু, অযোধ্যা, মুম্বই, পুনে, হায়দরাবাদ, বারণসী ও পুনেতে সন্ত্রাসবাদীরা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। তখন সন্ত্রাসবাদী হামলা রুখতে কংগ্রেস-এনসিপি জোটের সরকার কী করেছিল? শুধু ঘটনার নিন্দা, সমবেদনা জানিয়েই তৎকালীন সরকার দায় ঝেড়ে ফেলেছিল। কিন্তু চৌকিদার কী করেছে? সন্ত্রাসদমন নিয়ে কংগ্রেস-এনসিপি সরকারের ব্লুপ্রিন্টই বদলে ফেলেছে।’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘২০১৬ সালে সার্জিকাল স্ট্রাইক, এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে বালাকোটে হামলা চালিয়ে পাকিস্তানকে সমুচিত জবাব দিয়েছে চৌকিদার। জঙ্গি দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসবাদীরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। তারা বুঝতে পেরে গিয়েছে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে লুকিয়ে থাকলেও মোদি তাদের খুঁজে বের করবে।’
এদিকে হ্যালকে রাফাল চুক্তির বরাত না দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে আঙুল তুলেছে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। এই প্রশ্নের জবাবে মোদি বলেন, ‘বিরোধীরা তো হ্যালকে ধ্বংস করেই দিয়েছিল।’ হ্যালের একটি ইউনিট রয়েছে নাসিকে। মোদির দাবি, তাঁর সরকারের আমলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচীর অধীনে দেশেই তৈরি হচ্ছে সামরিক সরঞ্জাম। নাসিকের পেঁয়াজ চাষিদের উদ্দেশে মোদি বলেন, তাঁর সরকার হিমঘরে পেঁয়াজের মজুত বাড়িয়েছে। সেইসঙ্গে কর ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। এদিন নাসিক, ডিন্ডোরি এবং দুলে লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরা মোদির সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এদিন নাসিকের সভা শেষ করে নন্দুরবরে আরও একটি সভা করেন মোদি। ওই সভা থেকেও বিরোধীদের বিভিন্ন ইস্যুতে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, মোদি সরকার ফের ক্ষমতায় এলে সংরক্ষণ কমিয়ে দেওয়া হবে বলে বিরোধীরা গুজব ছড়াচ্ছে। এনিয়ে ভোটারদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, মোদি যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, বি আর আম্বেদকরের দেওয়া সংরক্ষণ প্রথায় কেউ হাত দিতে পারবে না। কৃষকদের জমিও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্মান যোজনায় মহারাষ্ট্রে অন্তত ১ কোটি ২০ লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগামী বছর থেকে কৃষকদের পেনশনও চালু করতে চলেছে মোদি সরকার।