খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
উত্তর:‘যদচ্যুতকথালাপরসপীযূষবর্জিতম্।
তদ্দিনং দুর্দিনং মন্যে মেঘাচ্ছন্নৎ ন দুর্দিনম্।।’ —(শ্রীমদ্ভাগবতম্)
অর্থাৎ যে দিন ভগবানের কথা হলো না সেই দিনই খারাপ দিন। সাধারণত যেদিন মেঘ-জল-ঝড় হয় সেদিনকে আমরা খারাপ দিন বলি। আসলে তা না, যেদিন হরি কথা না হয় সেদিন খারাপ দিন, আর যেদিন হরিকথা হয় সেদিন ভালো দিন।
প্রশ্ন: ভগবান সম্বন্ধে কি বিভিন্ন মতবাদ আছে?
উত্তর: বৈচিত্র্য আছে বল! বহুরূপী যেমন, ঠিক সেইরকম। হাতির দৃষ্টান্ত এখানে প্রযোজ্য হবে না, কারণ হাতির দৃষ্টান্ত অসম্পূর্ণ, সমগ্র হাতিকে তারা দেখছে না। এখানে বললুম গিরগিটির দৃষ্টান্ত—একই গিরগিটি, কখনও নীল, কখনও হলুদ, কখনও বা সবুজ—এই রকম। ঠাকুরের গল্পে আছে—‘‘কতকগুলো কানা একটা হাতির কাছে এসে পড়েছিল। একজন লোক বলে দিলে, এ জানোয়ারটির নাম হাতি। তখন কানাদের জিজ্ঞাসা করা হলো হাতিটা কি রকম? তারা হাতির গা স্পর্শ করতে লাগল। একজন বললে, ‘হাতি একটা থামের মতো!’ সে কানাটি কেবল হাতির পা স্পর্শ করেছিল। আর একজন বললে, ‘হাতিটা একটা কুলোর মতো।’ সে কেবল একটা কানে হাত দিয়ে দেখেছিল। এইরকম যারা শুঁড়ে কি পেটে হাত দিয়ে দেখেছিল তারা নানা প্রকার বলতে লাগল। তেমনি ঈশ্বর সম্বন্ধে যে যতটুকু দেখেছে সে মনে করেছে, ঈশ্বর এমনি, আর কিছু নয়।’’
প্রশ্ন: গাছের নিচে যে বসে আছে সে তো গিরগিটির সব রঙ দেখেছে?
উত্তর: হ্যাঁ, দেখেছে।
তফাত বুঝলে? হাতির দৃষ্টান্তে অন্ধের দৃষ্টিটা অসম্পূর্ণ, কিন্তু গিরগিটির দৃষ্টান্ত সম্পূর্ণ, গিরগিটির মধ্যে বৈচিত্র্য আছে। গিরগিটি ভিন্ন ভিন্ন রং নেয় কেন? বৈচিত্র্যের জন্য। তেমনি ভগবান হলেন বিচিত্রতাময়। ঠাকুর বলছেন, ‘‘একজন বাহ্যে গিছিল—দেখলে, গাছের উপর একটি সুন্দর জানোয়ার রয়েছে। সে ক্রমে আর একজনকে বললে, ‘ভাই! অমুক গাছে আমি একটি লাল রঙের জানোয়ার দেখে এলুম।’ সে লোকটি বললে, ‘আমিও দেখেছি, তা সে লাল রঙ হতে যাবে কেন? সে যে সবুজ রঙ।’ আর একজন বললে, না না; সে সবুজ হতে যাবে কেন, কালো ইত্যাদি। শেষে ঝগড়া। তখন তারা গাছতলায় গিয়ে দেখে একজন লোক বসে। জিজ্ঞাসা করায়, সে বললে, আমি এই গাছতলায় থাকি, আমি সে জানোয়ারটিকে বেশ জানি। তোমরা যা যা বলছ সব সত্য, সে কখনও লাল, কখনও সবুজ, কখনও হলদে, কখনও নীল, আরও সব কত কি হয়। আবার কখনও দেখি কোন রঙই নাই!’ ‘যে ব্যক্তি সদাসর্বদা ঈশ্বরচিন্তা করে, সেই জানতে পারে, তাঁর স্বরূপ কি। সে ব্যক্তিই জানে যে ঈশ্বর নানারূপে দেখা দেন।’