খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
ওয়ার্ল্ড ওমিটার তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪৯ হাজার ১৭৪ জন। এর মধ্যে ৬১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৯৫ জন। তবে ৮৫ বছর বা তার বেশি বয়সিদের মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। ২৪ মার্চ মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ১৭৪ জনের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের নেতৃত্ব গঠিত হোয়াইট হাউস করোনা ভাইরাস টাস্কফোর্সের এক কর্মীও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এরপর পেন্স ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পরীক্ষায় তাঁদের শরীরে সংক্রমণ মেলেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পেরও করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে এবং রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে মাকিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমেরিকা শীঘ্রই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে। এবং ব্যাবসার জন্য উন্মুক্ত হবে। আমরা এই পরিস্থিতিকে কখনওই দীর্ঘস্থায়ী আর্থিক সমস্যায় পরিণত হতে দেব না। যদিও অনেকেই বলা শুরু করেছেন, আমেরিকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে কতটা ভঙ্গুর এবং তা যে এই ধরনের মহামারি মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল না, এখন তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গোটা দেশে এখন সম্ভাব্য আক্রান্তদের পরীক্ষা করার মতো অবস্থা পর্যন্ত তৈরি করা যায়নি। ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিযোগ করছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম-মাস্ক, প্রটেক্টিভ সামগ্রী দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে এবং আগামী দিনে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন এই নিয়ে সব ধরনের পূর্বাভাস অগ্রাহ্য করেছে। এই ধরনের বিশ্বব্যাপী মহামারী মোকাবিলায় আমেরিকা অপ্রস্তুত, এই কথা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দু’টি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোয়েন্দাদের এসব সতর্কবার্তা গ্রাহ্য করেননি। সংবাদমাধ্যম পলেটিকো-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, ট্রাম্প এখনও আশু ব্যবস্থা নিয়েই চিন্তিত, যেখানে দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এত দিন পুরো কাজের সমন্বয়ের দায়িত্ব ছিল স্বাস্থ্যবিষয়ক দপ্তর হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসের উপর। গত সপ্তাহে তা ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফিমা)-র উপরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রশাসন বিস্তারিত কৌশল তৈরি করেছে বলে মনে হয় না। যে কারণে এখনও চিকিৎসার দরকারি সরঞ্জাম নিয়েই চিন্তিত। এই ধরনের স্বল্পমেয়াদি চিন্তার কারণেই তিনি এমন দাবি করেছেন যে করোনা ভাইরাসের ওষুধ হিসেবে কিছু বাজার চলতি ওষুধ আছে। বিজ্ঞানীরা তাঁর এই দাবির সঙ্গে মোটেই একমত নন। অনেকের ধারণা, এই ধরনের দাবি বিপদ আরও বাড়াবে।
অনেকেই অভিযোগ তুলছেন, এই ট্রাম্প প্রশাসন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের গ্লোবাল হেলথ অফিস তুলে দিয়েছিল। এই অফিসের দায়িত্ব ছিল ব্যাপক আকারে রোগ ছড়িয়ে পড়ার মতো অবস্থার মোকাবিলা করা। শুধুমাত্র অর্থ সাশ্রয়ের নাম করে এই অফিস বন্ধ করে দেওয়া যে কতটা আত্মঘাতী হয়েছে, তা এখন দেখা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে আমেরিকা।