খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
বর্ধমান শহরে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে অসংখ্য ভবঘুরে রয়েছে। তাঁদের বেশিরভাগই আবার বয়স্ক। তাই শুধু খাবারের দুশ্চিন্তা নয়, তাঁদের করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। কারণ, তাঁদের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ কিংবা মাস্ক কিছুই নেই। যেখানে সেখানে তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যেখানে সেখানে হাতও দিচ্ছেন। জ্বর-সর্দি কাশি হলেও তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন কে, তার কোনও ব্যবস্থাও নেই। তবে, এই মুহূর্তে তাঁদের সবার খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাঁদের বেশিরভাগই দুপুর বেলায় বিভিন্ন হোটেলের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেন। কিছু না কিছু জুটে যেত। কিন্তু, সেই সব হোটেল এখন বন্ধ। অন্যান্য দোকানদার যাঁরা সাহায্য করতেন, তাঁদের দোকানেরও ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ যাঁরা মাঝে মাঝে পাউরুটি, কলা, রুটি দিতেন, তাঁদের বেশিরভাগই লকডাউনের জন্য এখন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে, খাবারের প্রায় সমস্ত সংস্থানই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
শহরের ট্যাপকলে জল পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু, যে সকল ভবঘুরে একেবারে মানসিক ভারসাম্যহীন তাঁরা জানেনই না, কোন সময়ে গেলে ট্যাপকল থেকে জল পাওয়া যায়। খালি বোতল নিয়েই তাঁরা ঘুরছেন। সারাদিন জলও খেতে পাচ্ছেন না। আচমকা শহরের ভিড় শুনশান হয়ে যাওয়ায় তাঁরা অনেকে আতঙ্কিতও হয়ে পড়েছেন। কী হল বুঝতেও পারছেন না। যাঁরা ভিড় গলির ভিতরে ঘুমোতেন, তাঁরা এখন সেই একই গলিতে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন। নির্জন হয়ে যাওয়ায় কেউ কেউ ঠিকানাও বদল করছেন। বুধবার শহরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন জায়গায় ভবঘুরেরা বসে রয়েছেন। কেউ খিদের জ্বালায় ঘুমিয়ে পড়েছেন। কেউ আবার ভয়ে দৌড়ে পালাচ্ছেন। শহরের অনেকেই বলছেন, দ্রুত খাবারের ব্যবস্থা না করলে ২১ দিনের লকডাউনে তাঁদের ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে।
এ ব্যাপারে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, শহরের ভবঘুরেদের নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৃহস্পতিবার থেকে শহরের একটি জায়গায় তাঁদের জন্য রান্না করা হবে। সেখানেই তাঁদের সবাইকে খাওয়ানো হবে। সেই সঙ্গে কিছু হতদরিদ্র মানুষকেও সেখানে খাওয়ানো হবে। এর জন্য আমরা দেড়শো কুইন্টাল চালও কিনেছি। কিন্তু, শহরের সব ভবঘুরেকে কীভাবে ওই খাবার জায়গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে? জেলাশাসক বলেন, ওই বিষয়টি আমরা দেখছি। তবে, সবাই যাতে খাবার পান তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে, বর্ধমান পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার অমিতকুমার গুহ বলেন, শহরের ভবঘুরেদের জন্য কী করা যায় তা নিয়ে আমরাও ভাবছি।