খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
রাতের আকাশে অগণিত নক্ষত্র দৃষ্টিগোচর হয়, আবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই অদৃশ্য হয়। তখন আর তোমরা তাদের দেখতে পাও না। এজন্য কি বলতে পারো দিনের বেলায় আকাশে নক্ষত্র নেই? তেমনই, হে মানব,জীবনের অজ্ঞানাচ্ছন্ন দিনগুলিতে ঈশ্বরকে উপলদ্ধি করতে সমর্থ হও না ব’লে ঈশ্বর নাই একথা বলা উচিত নয়।
ঈশ্বরের অসংখ্য নাম ও অনন্ত রূপ আছে যার দ্বারা আমরা তাঁকে জানতে ও বুঝতে সমর্থ হয়। ইচ্ছানুযায়ী যে কোন নাম ও রূপ সহায়ে ঈশ্বরের আরাধনা করোনা কেন, তিনি সেইভাবেই দেখা দেবেন।
ঈশ্বরের একত্ব
একই বস্তু জলকে বিভিন্ন লোক বিভিন্ন নাম ধরে উল্লেখ ক’রে থাকে। যেমন কেউ বলে ‘ওয়াটার’, কেউ বলে ‘ও’, তৃতীয় কেউ বলে ‘অ্যাকোয়া’ এবং অপর কেউ বলে ‘পানি’। সেইরকম এক নিত্যবস্তু সচ্চিদানন্দকেই কেউ ‘গড্’, কেউ ‘আল্লা’, কেউ ‘জিহোবা’, কেউ ‘হরি’, ‘ব্রহ্ম’ নামে উল্লেখ করে। কুমোরের দোকানে হাঁড়ি, কলসী, থালা, রেকাবী প্রভৃতি নানা নাম ও রূপের পাত্র সাজানো থাকে। দেখতে আলাদা, কিন্তু এক মাটি দিয়েই সব তৈরী। ঈশ্বরও সেইরকম এক হওয়া সত্বেও দেশ-কাল–ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নাম ও রূপে পূজিত হন।
ঈশ্বরের নানা রূপ
প্রশ্ন: একই ঈশ্বর যদি বিশ্বের সকল ধর্মের আরাধ্য দেবতা হন তবে বিভিন্ন ধর্মের আলোকে তাঁকে বিভিন্ন ব’লে মনে হয় কেন?
উত্তর: ঈশ্বর এক, কিন্তু তাঁর রূপ অনেক। যেমন পরিবারের গৃহকর্তা একজনই, কিন্তু কারও পিতা, কারও স্বামী, কারও সহোদররূপ। নানা সম্পর্কে যুক্ত হয়ে তিনি বিভিন্নরূপে পরিচিত হন। ঈশ্বরের বেলায়ও তাই। ভক্তরা নিজ নিজ ভাবানুযায়ী নানা নামে তাঁকে ডাকে, তিনিও সেইভাবে সাড়া দেন। কোন ব্যক্তি ছাদে ওঠার জন্য মই, বাঁশ, সিঁড়ি, দড়ির মধ্যে যে-কোন একটিকে ইচ্ছামতো বেছে নিতে পারে। ঈশ্বরের কাছে যাবারও সেইরকম অনেক পথ ও উপায় আছে— আর জগতের প্রতিটি ধর্মই হ’ল ঈশ্বর-সাক্ষাৎকারের এক-একটি পথ বা উপায়।
ধর্মমতগুলি ঈশ্বর-সান্নিধ্য লাভের নানা পথ
আলাদা আলাদা ধর্মমতগুলি হ’ল সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে পৌঁছবার ভিন্ন ভিন্ন পথ। কলকাতার কালীঘাটে মা-কালীর মন্দিরে যাবার অনেক রাস্তা আছে—তার যে-কোন একটি ধরে চললেই মায়ের মন্দিরে যাওয়া যায়। সেইরকম ঈশ্বরের কাছে যাবারও অনেক পথ আছে। প্রতিটি ধর্মই হচ্ছে এক-একটি পথ, যা ঈশ্বরের দিকে নিয়ে যায়। যেমন নানা আকার ও নামবিশিষ্ট সব অলঙ্কার একই মূল উপাদান সোনা দিয়ে তৈরী, তেমনি বিভিন্ন দেশে ও যুগে একই ঈশ্বরকে নানা নামে ও রূপে পূজা করা হয়। যদিও ঈশ্বরের পূজার নানা ভাব ও পদ্ধতি থাকতে পারে—যেমন কেউ তাঁকে ভালবেসে ‘পিতা’ ব’লে সম্বোধন করছে, কেউ ‘মাতা’, কেউ ‘সখা’, কেউ ‘প্রিয়’, আবার কেউ হৃদয়মন্দিরে স্থাপিত পরমধন স্নেহের বাল-গোপাল ব’লে তাঁকে ডাকছে, কিন্তু এইসব বৈচিত্র্যময় ভাব ও পদ্ধতির মাধ্যমে সেই এক পরমেশ্বরকেই পূজা করা হচ্ছে।