খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
অদ্ভূত পূজকের দেবীর পূজা ও সেবা সম্পন্ন করিবার নির্দ্দিষ্ট কাল এই সময় হইতে দিন দিন বাড়িয়া যাইতে লাগিল। পূজা করিতে বসিয়া তিনি যথাবিধি নিজ মস্তকে একটী পুষ্প দিয়াই হয় তো দুইঘণ্টাকাল স্থানুর ন্যায় স্পন্দহীন ভাবে ধ্যানস্থ রহিলেন, অন্নাদি নিবেদন করিয়া, মা খাইতেছেন ভাবিতে ভাবিতেই হয় তো বহুক্ষণ কাটাইলেন, প্রত্যুষে স্বহস্তে পুষ্পচয়ন করিয়া মালা গাঁথিয়া দেবীকে সাজাইতে কত সময় ব্যয় করিলেন, অথবা অনুরাগপূর্ণ সন্ধ্যারতিতেই বহুক্ষণ ব্যাপৃত রহিলেন। আবার অপরাহ্নে বা আরতির অন্তে জগন্মাতাকে যদি গান শুনাইতে আরম্ভ করিলেন তবে এমন তন্ময় ও ভাববিহ্বল হইলেন যে, সময় অতীত হইতেছে একথা বারম্বার স্মরণ করাইয়া দিয়া তাঁহাকে আরাত্রিক বা সান্ধ্য শীতলাদি কর্ম্মে নিযুক্ত করিতে হইল! —এইরূপে কিছুকাল পূজা চলিতে লাগিল।
পূজা ধ্যানাদি করিতে বসিয়া তিনি ইতিপূর্ব্বে বহুযত্নে দেখিতেন, কোন দিন মার হাতখানি, বা কোমলোজ্জ্বল পাখানি, বা ‘সৌমাৎসৌম্য’ হাস্যদীপ্ত মধুর স্নিগ্ধ মুখখানি—এখন, পূজাধ্যানকাল ভিন্ন অন্য সময়েও দেখিতে পাইতেন, সর্ব্বাবয়বসম্পন্না জ্যোতির্ম্ময়ী মা, হাসিতেছেন, কথা কহিতেছেন, ‘এটা কর, ওটা করিস্ না’, বলিয়া তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে ফিরিতেছেন।
পূর্ব্বে মাকে অন্নাদি নিবেদন করিয়া দেখিতেন, মার ‘‘নয়ন হইতে অপূর্ব্ব জ্যোতিঃরশ্মি ‘লক্ লক্’ করিয়া নির্গত হইয়া নিবেদিত আহার্য্য সমুদায় স্পর্শ ও তাহার সারভাগ সংগ্রহ করিয়া পুনরায় নয়নে সংহৃত হইতেছে!’’ —এখন দেখিতে পাইতেন, ভোগ নিবেদন করিয়া দিবার পূর্ব্বেই সেই মা শ্রী-অঙ্গের প্রভায় মন্দির আলো করিয়া সাক্ষাৎ খাইতে বসিয়াছেন।