খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
সূক্ষ্ম জগতে উন্নীত হয়ে স্থূলের দিকে দৃষ্টি ফিরালে আমার দেহের কথা আদৌ মনে পড়বে না, কারণ বিশ্বাস স্থূল জগতের তুলনায় আমার দেহটা এতই ক্ষুদ্র, এত অল্প অংশই সে অধিকার করে রয়েছে যে সেদিকে দৃষ্টিই যায় না। বিশেষতঃ যুগপৎ অসংখ্য দৃশ্য যেখানে দৃষ্টির সামনে ফুটে উঠছে, সেখানে এমন সঙ্কীর্ণ দৃষ্টি হওয়াটাই অস্বাভাবিক। যেমন স্থূল দ্বারা স্থূলকে জান্তে হয় তেমনি সূক্ষ্ম এবং কারণ দ্বারা কারণকে জানতে হয়। তবে সমষ্টি স্থূল জান্তে হলে সূক্ষ্মে না গেলে সম্যক্ জ্ঞান হবে না। তেমনি সমষ্টিকারণে গেলে সমষ্টি সূক্ষ্মের জ্ঞান হবে এবং মহাকরণে লীন হলে সমষ্টি কারণ জগতের জ্ঞান হবে।
দেহতত্ত্ব জানা থাক্লে আধ্যাত্মিক তত্ত্ব অর্থাৎ সূক্ষ্ম ও কারণ-জগতের তত্ত্ব সহজে বোধগম্য হয়। কেন না স্থূলেই তো সূক্ষ্ম ও কারণের চরম বিকাশ হয়েছে। তাই স্থূল বিকাশ ধ’রে সূক্ষ্মে ও কারণে গিয়ে আবার সেই কারণ ও সূক্ষ্ম কি ক’রে স্থূলে প্রকাশ হয়েছে, তা দর্শন করলে তবে জ্ঞানের পূর্ণত্ব হয়।
বালকের স্বভাব, যুবকের কর্ম্মশক্তি, আর বৃদ্ধের জ্ঞান—এই তিনটী এক ঠাঁই হলে জীবন পূর্ণ।
পূর্ণব্রহ্ম পরাবর। পর নির্গুণ ব্রহ্ম, অবর সগুণ ব্রহ্ম। শুধু নির্গুণ ব্রহ্ম বা সগুণ ব্রহ্ম বুঝলে হবে না। দু’টী ভাব বুঝলে তবে পূর্ণত্ব। তাকেই ঠিক ব্রহ্মদর্শন বলা যেতে পারে।
মা আছেন, আর তাঁকে ডাক্লে পাওয়া যায়, এই দুটী কথা বিশ্বাস কর্তে পার্লেই হয়। তিনি অনন্তশক্তিস্বরূপিণী—নিরাকার হলেও ভক্তের মনোময়ী মূর্ত্তিতে আসেন। সবাইকে তিনি সমান কৃপা করেন, তবে আধারভেদে সেই কৃপা বিভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। যেমন শুক্নো কাঠে আগুন দিবা মাত্র জ্বলে ওঠে, তেমনি সত্ত্বশুদ্ধ ভক্তের ভিতরে মা সহজেই জাগ্রৎ হন। ভিজা কাঠে আগুন দিলে ক্রমে তার রস মরে গেলে তবে আগুন ধরে। বিশ্বাস করতে পারলে একদিন অবশ্য মায়ের কৃপা উপলব্ধ হবে। মায়ের কৃপা হলেই মাকে পাওয়া যায়। নইলে সাধন-ভজনরূপ ক্ষুদ্র শক্তি দ্বারা কি অনন্ত শক্তিকে বশ করা যায়? জোনাকী কখনও সূর্য্যকে প্রকাশ করতে পারে?
স্বামী সিদ্ধানন্দের ‘নিগম প্রসাদ’ থেকে