দক্ষিণবঙ্গ

দুর্গাপুজো আসতেই পুতুল নিয়ে ‘চদর বদর’ দেখাতে বেরিয়ে পড়েছেন আদিবাসী শিল্পীরা

সংবাদদাতা, কাটোয়া: আউশগ্রামের জঙ্গলমহলে দুর্গাপুজোর মরশুমেই গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ‘চদর-বদর’ দেখিয়ে বেড়ান আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। শাল, পিয়ালের জঙ্গল ঘেরা গ্রামে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের  ‘চদর-বদর’-এর পুতুল নাচ দেখিয়ে পুজোর আনন্দ দেওয়াই দীর্ঘদিনের রীতি ওদের। শুধু তাই নয়, পুজো মণ্ডপেও ডাক পড়ে শিল্পীদের। 
দুর্গাপুজোর মরশুমে আউশগ্রামের ওয়ারিশপুর, যাদবগঞ্জ প্রভৃতি গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ‘চাদর বাঁধনি’ বা ‘চদর বদর’ দেখেই পুজোর আনন্দ উপভোগ করেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। ‘চাদর বাঁধনি’ বা  ‘চদর বদর’ পুতুল নাচ আদিবাসী সংস্কৃতির এক অন্যতম নিদর্শন। জানা গিয়েছে, ‘চদর বদর’-এর ‘চদর’ শব্দটি চাদর থেকে এসেছে। আর ‘বদর’ বা বাঁধনি মানে বাঁধা। অর্থাৎ পুতুল নাচানোর সময় একটি কাপড় দিয়ে পুতুলনাচের পুরো কাঠামোটি বাঁধা থাকে। চদর বদরের পুতুলগুলি মূলত ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা হয়। পুতুলগুলি বেল, জাম, শিরিষ প্রভৃতি কাঠ দিয়েই তৈরি হয়। তারপরে কাঠের তৈরি পুতুলে রং করা হয়। পুতুলগুলিকে রং বেরঙের ছোট ছোট কাপড় পরানো হয়। পুতুলের গায়ে পুঁতির মালা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। আদিবাসী মহিলারা যেমন নৃত্যের সময় পোশাক পরে থাকেন। ঠিক তেমনি ঢঙেই পুতুলগুলিকে সাজিয়ে তোলা হয়। তারপর এক পায়া কাঠের একটি কাঠামোর উপরে বাঁশের তৈরি মাচা করে পুতুল নাচের মঞ্চ গড়ে তোলা হয়। পুতুল নাচের মঞ্চের উপরে একটি গোলাকার ছাউনিও থাকে। ওই মঞ্চের চারদিক লাল চাদর দিয়ে ঢাকা থাকে। পুতুল নাচের সময় ওই চারদিকের চাদর তুলে দেওয়া হয়। ভিতরের একটি পাটাতনের উপরে ধামসা মাদল নিয়ে সারি বাঁধা পুরুষ পুতুল এবং তার মুখোমুখি সাঁওতালি মেয়ে পুতুলের নৃত্যদল। পাটাতনের নীচে রয়েছে লিভার। চাদরে ঢাকা সেই লিভারকে শিল্পীর আঙুলে প্যাঁচানো সুতোর সাহায্যে সুকৌশলে চালনা করলেই নানা ভঙ্গিমায় নেচে উঠে আদিবাসী ঘরানার পুতুলগুলি। তারপর নানা আদিবাসী গান গেয়ে ধামসা, মাদল, হারমোনিয়াম বাজিয়ে পুতুলগুলি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নাচানো হয়। তবে চদর-বদর প্রাচীন লোকশিল্প এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। আউশগ্রামের চদর-বদর শিল্পী লখিরাম কিস্কু, লদ সোরেন, রাম টুডু জানান, দুর্গাপুজো এলেই আমরাও চদর-বদরের পুতুল নাচ নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় বেরিয়ে পড়ি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পুজোর আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করি। সারাবছর চদর-বদর খুব একটা দেখানো হয় না। পুজোর সময় সবাই একজায়গায় থাকে। তাই আমরাও পুজো এলেই বেরিয়ে পড়ি। স্মার্টফোনের যুগে এই শিল্প ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। ওয়ারিশপুরের চদর-বদর শিল্পীরা বলেন, দাদুর আমলে তৈরি করা পুতুল আছে আমাদের। বাবা কাকাদের হাত ধরে আমরাও পুজোর ক’টা দিন আনন্দ দেওয়ার জন্য চদর-বদর দেখিয়ে বেড়াই। পুজো মণ্ডপগুলোতেও ডাক পড়ে। তবে এটা করে কি সংসার চলে? পুতুল নাচ দেখে যাঁর যেমন সামর্থ্য দেন। তবে আমাদের ভালো লাগে। ‘বেলগাছ কাটলুম, পুতুল বানাইলুম। আমার পুতুল ভালো হইল না। ভালো ভালো বাবু ভাই ফিরে গেল রে, আমার পুতুল ভালো হইল না।’ এই গানে চদর-বদরের পুতুলরা নৃত্যের তালে কোমর দোলাবে। -নিজস্ব চিত্র
22h 22m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে মানসিক চিন্তা। সব কাজকর্মে অগ্রগতি ও অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৮৭ টাকা৮৫.৩১ টাকা
পাউন্ড১০৭.৪৯ টাকা১১৪.২২ টাকা
ইউরো৯১.২৬ টাকা৯৫.৪৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা