দক্ষিণবঙ্গ

দিনমজুরি ছেড়ে পুজোয় এবার ভিনরাজ্যে পাড়ি দিলেন কাটোয়ার মহিলা ঢাকিরা

সংবাদদাতা, কাটোয়া: কেউ সারাবছর লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। কেউ আবার দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। পাশাপাশি সামলান হেঁশেলও। তবে পুজো এলেই কাঁধে তুলে নেন ঢাক। জেলার পাশাপাশি ভিনরাজ্যেও পাড়ি দেন কাটোয়ার বিভিন্ন গ্রামের মহিলারা ঢাকিরা। বোল তোলেন পুজোর মণ্ডপে মণ্ডপে। এবারও কাটোয়ার কয়েকজন বধূ অসম ও কলকাতায় পাড়ি দিচ্ছেন।
কাটোয়া-১ ব্লকের সুদপুর গ্রামের বাসিন্দা চিত্রা দাস জীবনযুদ্ধে কাঁধে ঢাক তুলে নিয়েছেন। তিনিও গ্রামের প্রতিবেশী বধূদের নিয়ে ঢাকের দল তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, এখন তিনি আউরিয়া, বাজার বনকাপাশি গ্রামের কয়েকজন মহিলাকেও তাঁর দলে নিয়েছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে পুজো মণ্ডপে প্রমিলা বাহিনী মাতিয়ে তোলে। এখন পুজোর মরশুমে তাঁদের বিভিন্ন কমিটি থেকে ডাক আসছে। 
চিত্রাদেবীর শ্বশুরবাড়ি ছিল কাটোয়া থানার কাঁটারি গ্রামে। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি ছ’মাসের ছেলেকে নিয়ে বাপেরবাড়ি সুদপুর গ্রামে চলে আসেন। সেখানে তিনি প্রথমে পরিচারিকার কাজ করেন। তারপর ২০১৪সালে তিনি ঠিক করেন শুধু পুরুষরাও নয়, মহিলারাও ঢাক বাজিয়ে সংসার চালাতে পারেন। এরপর তিনি প্রতিবেশী দুঃস্থ বধূদের ঢাক বাজানোকে পেশা হিসেবে নেওয়ার জন্য বোঝান। বাধা বিপত্তি কাটিয়ে তিনি গ্রামে ১৪জন মহিলাকে নিয়েই দল তৈরি করেন। তারপর থেকেই তিনি ত্রিপুরা, শিলচর, ওড়িশা সহ বিভিন্ন এলাকায় ঢাক নিয়ে পাড়ি দেন। 
চিত্রা দাস বলেন, আমরা প্রথমে ঋণ নিয়ে ঢাক কিনেছিলাম। তবে প্রতিবেশী মহিলাদের আনতে অনেক ঝড়-ঝাপটা পোহাতে হয়েছিল। অনেকে মহিলা বলে গ্রামে কটু কথাও শুনিয়েছিল। এখন আমাদের রাজ্যজুড়ে পরিচিতি হয়েছে। নাদু দাসের কাছেই আমরা ঢাক বাজানো শিখি। বাজার বনকাপাশি, আউরিয়া গ্রামের মহিলাদেরও আমি ঢাক বাজানো শিখিয়ে দল তৈরি করেছি। দিনপিছু প্রত্যেকেই এক হাজার টাকা করে আয় হয়। সন্ধ্যায় আমরা ঢাকের বদলে বালিশ নিয়ে রেওয়াজ করি। কারণ ঢাক বাজালে আশপাশের বাড়ির ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। 
গ্রামের বাসিন্দা সান্তনা দাস, জোৎস্না দাস, মিঠু দাস বলেন, আমরা মেয়ে বলে পিছিয়ে থাকব কেন? পুজোর সময় ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় কিনতে হবে। আমাদের স্বামীরা সব দিনমজুরি করেন। কারও আবার স্বামী অসুস্থ। তাঁর ওষুধ কিনতে খরচ কোথা থেকে আসবে? তাই আমরা ঢাক কাঁধে তুলে নিয়েছি। পুজোর চারদিন বাড়ি স্বামী পরিবার ছেড়ে থাকতে আমাদেরও মন চায় না। কিন্তু পেটের দায়েই আমাদের সংসার ছেড়ে ছুটতে হয়। 
চিত্রাদেবীর ছেলে সীতারাম দাস বলেন, আমরা লোকশিল্পী পরিবারের ছেলে। ঢাক বাজিয়েই গ্রামের মহিলারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। পুজোর ক’টা দিন মা ঢাক নিয়ে পাড়ার কাকিমাদের সঙ্গে জেলায় জেলায় ছুটবেন।  নিজস্ব চিত্র
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে মানসিক চিন্তা। সব কাজকর্মে অগ্রগতি ও অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৮৭ টাকা৮৫.৩১ টাকা
পাউন্ড১০৭.৪৯ টাকা১১৪.২২ টাকা
ইউরো৯১.২৬ টাকা৯৫.৪৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা