বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
‘ইন্দ্রিয়েভ্যঃ পরা হ্যর্থা অর্থেভ্যশ্চ পরং মনঃ।/ মনসস্তু পরা বুদ্ধির্বুদ্ধেরাত্মা মহান্ পরঃ।।/ মহতঃ পরমব্যক্তব্যক্তাৎ পুরুষঃ পরঃ।/ পুরুষান্নপরং কিঞ্চিৎ সা কাষ্ঠা সা পরাগতিঃ।।’—ইন্দ্রিয়সমূহ অপেক্ষা বিষয়সমূহ অবশ্যই শ্রেষ্ঠ, এবং বিষয়গুলি অপেক্ষা মন শ্রেষ্ঠ পরন্তু মন অপেক্ষা বুদ্ধি শ্রেষ্ঠ, বুদ্ধি অপেক্ষা হিরণ্যগর্ভ শ্রেষ্ঠ।
—হিরণ্যগর্ভ অপেক্ষা অব্যক্ত (প্রকৃতি) শ্রেষ্ঠ, অব্যক্ত অপেক্ষা পুরুষ শ্রেষ্ঠ। পুরুষ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আর কিছু নাই। পুরুষই সকলের পরকাষ্ঠা (চরমসীমা), তিনিই পরমগতি (গন্তব্যস্থল)। (কঠোপনিষৎ)
কোন কার্য্য থেকে সেই কার্য্যের কারণ শ্রেষ্ঠ হয়, যেহেতু কারণ না থাকলে (কারণের অভাবে) কোন কার্য্যই কৃত হবে না। কারণ প্রথমে উৎপন্ন হয় এবং তারপর কর্ম্ম করা হয়। এইভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে কারণ কর্ম্মের জন্মদাতা এবং তজ্জন্যই কার্য্য থেকে কারণ শ্রেষ্ঠ। এখন দেখা যাক যে উপরোক্ত শ্লোকগুলির প্রকৃত অর্থ কি? ‘অর্থ’ এই শব্দটির একটি অর্থ হচ্ছে—‘বিষয়’ বা ‘বস্তু’। যেহেতু অর্থ শব্দটি ‘ইন্দ্রিয়’ শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়েছে সেইজন্য অর্থ শব্দটির দ্বারা পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়গুলির (চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক্) বিষয়গুলিকে (শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস ও গন্ধ) বলা হয়েছে। যেহেতু বিষয়গুলি নিজ নিজ উপলব্ধির জন্য উপযুক্ত ইন্দ্রিয়গুলির নির্ম্মাণ করেছে অর্থাৎ ইন্দ্রিয়গুলির সৃষ্টির কারণ হচ্ছে বিষয়সমূহ, তজ্জন্য ইন্দ্রিয়াদি থেকে বিষয়গুলি শ্রেষ্ঠ। এইভাবে কার্য্য ও কারণ বিবেচনা করে শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষিত হয়েছে। শেষে বলা হয়েছে যে পুরুষই (পরব্রহ্মই) সকল সৃষ্টির কারণ, অতএব সর্বশ্রেষ্ঠ।
—ইন্দ্রিয়গুলি থেকে মন শ্রেষ্ঠ, মন থেকে বুদ্ধি উত্তম, বুদ্ধি থেকে হিরণ্যগর্ভ প্রাণিগণের অন্তর্নিহিত ব্যাপক জীবাত্মা যাকে হিরণ্যগর্ভতত্ত্ব বা কার্যব্রহ্ম নামেও অভিহিত করা হয়) শ্রেষ্ঠ, হিরণ্যগর্ভ থেকে অব্যক্ত (প্রকৃতি বা অব্যাকৃত মায়াতত্ত্ব) শ্রেষ্ঠ। (কঠোপনিষৎ)