ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
বিপ্লবের শাসনে ভোট কেমন হল ত্রিপুরেশ্বরীর রাজ্যে? ইতিহাস বলছে, সেখানে ক্ষমতায় এসে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব জয়ী প্রতিনিধিদের ভয় দেখাতে শুরু করেছিল বিজেপি। ফলে অর্ধেক পঞ্চায়েত প্রতিনিধি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এমনই সন্ত্রাসের শাসন যে সেই শূন্য আসনের ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনও প্রার্থীই দিতে পারেনি বিরোধীরা। এমনকী পাঁচটি পুরসভার গত উপনির্বাচনেও কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। আর গত লোকসভা ভোটে তো নজিরই তৈরি করেছে বিজেপি। ত্রিপুরায় মাত্র দুটি লোকসভার আসন। তাতেও পূর্ব ত্রিপুরায় পৃথক দিনে ভোট করতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন। পশ্চিম ত্রিপুরা কেন্দ্রে এমন রিগিং ও ছাপ্পা ভোট হয় যে ভোটে যুক্ত বিজেপির পোলিং এজেন্ট ও সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দিল্লি থেকে নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। লক্ষণীয় যে, এবারের পুরভোটেও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। পুলিস প্রশাসনের মদতে অবাধে লুটের ভোট হল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়ল। তাই পুনর্নির্বাচনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে তৃণমূল, বাম দু’পক্ষই।
এক সময়ে ছিল বামেদের দুর্গ। এখন বিজেপির রামরাজ্যে তৃণমূল যেন এই সেদিনও সেখানে লিলিপুট ছিল। কিন্তু এই ভোট বুঝিয়ে দিল, বিজেপিকে বধিতে গোকুলে বাড়িছে মমতার দল। আগামী বছরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোট। সন্দেহ নেই, সেই ভোটে হবে মোদির ভাবমূর্তি রক্ষার লড়াই। এই নির্বাচনগুলিতে ধাক্কা খেলে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে টলে যেতে পারে মোদির আসন। মোদি বিরোধী জোট শক্তি বাড়াচ্ছে। এদিকে আবার বাংলায় বিপুল জয়ের পর ত্রিপুরা, মেঘালয়, অসম, গোয়ার মতো রাজ্যে পা রেখেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যে মেঘালয়ে তারাই প্রধান বিরোধী দল হয়ে গিয়েছে। বাকি রাজ্যগুলিতেও দৃঢ় পায়ে এগচ্ছে জোড়াফুল। মমতার চমকপ্রদ সাফল্যে উৎসাহিত অনেকেই মনে করছেন কংগ্রেস নয়, মোদির সঙ্গে টক্কর দিতে পারেন মমতাই। ক্রমশ তিনি বিরোধীদের প্রধান মুখ হয়ে উঠছেন। এই অবস্থায় বাংলার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ত্রিপুরায় এবার ছোট মাপের ভোট পরীক্ষায় বসেছিল তৃণমূল। পরীক্ষায় তারা পায়ের তলার জমি পেয়েছে অনায়াসে। যেখানেই তারা প্রার্থী দিয়েছে সেখানেই হয়েছে প্রধান বিরোধী দল। সন্ত্রাস করেও তাদের ঠেকানো যায়নি। প্রথমবার পুরভোটে লড়াই করে আমবাসায় খাতাও খুলেছে তারা। তাও নেত্রী নিজে ত্রিপুরায় পূর্ণশক্তি নিয়ে ঝাঁপাননি। তবু ত্রিপুরার পুরভোটের ফল বুঝিয়ে দিচ্ছে, তৃণমূলকে এগনোর বার্তা দিয়ে রাখলেন ত্রিপুরাবাসী। সেখানে তৃণমূলের এই উত্থান বিজেপির কাছে নিঃসন্দেহে অশনিসঙ্কেত।