ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
অন্যের সাফল্য হাইজ্যাক করার গেরুয়া-বাতিক এখানেই থামেনি অবশ্য। মাস দুই বাদে (১৫ নভেম্বর) বাংলারই অন্ডাল এয়ারপোর্টের ছবি বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের প্রস্তাবিত সাফল্য বলে চালানোর চেষ্টা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের প্রস্তাবিত এক বিমানবন্দরের ছবি হিসেবে তা টুইট করেছিল অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের ছবির এই অপব্যবহার নিয়ে বিজেপি পার্টি এবং মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার দলের তির্যক মন্তব্য সারা দেশের নজর কেড়েছে, ‘আমাদের পরিকাঠামো এবং উন্নয়নের ছবি নিজেদের বলে চালিয়ে কোনও লাভ নেই। আমরা আরও খুশি হব প্রকৃত উন্নয়নের পাঠটা আপনাদের দিতে পারলে।’ গৌরবে বহুবচন বলে একটি কথা রয়েছে, যার অর্থ—একের গৌরবের ভাগীদার হয়ে উঠতে চান অনেকে। এটা হয়েই থাকে। যেমন—সন্তানের সাফল্যে মা, বাবা, আত্মীয়, পড়শি সকলেই গৌরব অনুভব করেন। বিপরীতে একটি কুসন্তানের পরিচয় পরিহার করেই স্বস্তি পান সকলে। ‘বাংলার সাফল্যে আমরাও খুশি, গর্ব অনুভব করছি’—এমন দাবি ভারতবাসী মাত্রই করতে পারেন। তাতে দাবিদারের মহত্ত্বই প্রকাশ পায়। কিন্তু তার বদলে এমন কীর্তির পুরোটাই আত্মসাৎ করতে চাওয়ার মধ্যে থাকে অসৎ উদ্দেশ্য। এই মানসিকতার জন্য চৌর্যবৃত্তির দোষ চাপলে আপনি তাকে কুৎসা বলতে পারেন না। মা উড়ালপুলের কেলেঙ্কারিকে উত্তরপ্রদেশ সরকার ‘অনবধানতাবশত ভুল’ বলে লঘু করতে চেয়েছিল। ক্ষমাও এক অধিকার। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারেরও ক্ষমা প্রাপ্য। তবে, দেশের বৃহত্তম দলের কাছে এমন ভুল আর কাম্য নয়। কিন্তু বিজেপি নিজ মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দিল ফের। অন্ডাল বিমানবন্দর নিয়ে নতুন কেলেঙ্কারিতে জড়াল পাশের রাজ্য উত্তরাখণ্ড।
সেখানেও থামতে পারল না তারা—দু’সপ্তাহও পেরল না, তৃতীয় কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসল—মোদি সরকার এবং যোগীরাজ্য একযোগে! মোদি সরকারের উন্নয়নের দলিল হিসেবে গেরুয়া শিবির পেশ করল প্রস্তাবিত নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে। আর ওই বিমানবন্দরের সম্ভাব্য চেহারা হিসেবে যে ছবিটি প্রচার করা হল সেটি কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, এমনকী সারা ভারতের কোনও জায়গার নয়। যে প্রতিবেশী দেশের সামনে মোদি সরকার দু’বেলা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে যাচ্ছে সেই চীনের—বেজিংয়ের ডাক্সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। তথ্যের যুগ। উপগ্রহ প্রযুক্তি তীক্ষ্ণভাবে নজরবন্দি করে ফেলেছে সারা পৃথিবীকে। এ-সময় একটি আলপিন লুকনোর চ্যালেঞ্জ নেওয়াও কঠিন। সেখানে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ধুরন্ধর চীনের বৃহৎ এক গর্ব নিয়ে এমন ‘ফাজলামি’ তারা বরদাস্ত করে কী করে! জি জিনপিংয়ের দেশ তা করেওনি। তারা তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানিয়েছে, মুখে চুনকালি মাখানোর মতো করে। এই চুনকালি শুধু মোদি বা যোগী সরকারের মুখে পড়ল ভাবলে ভুল হবে, কলঙ্কিত হল আসলে দেশ। মোদি ও যোগী সরকার এবং সর্বোপরি বিজেপি পার্টি কেলেঙ্কারির সিরিজ ‘উপহার’ দিয়ে তাদের কলুষিত মনকেই প্রকট করছে। তারা প্রমাণ করেছে, রাজ্য বা দেশ শাসনের সামান্য যোগ্যতাও তাদের নেই। দেশের সম্মান মর্যাদা যাদের দ্বারা ভূলুণ্ঠিত হয় দেশ তাদের হাতে কোনওভাবেই নিরাপদ নয়।