ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
পেনশন হল একজন মানুষের ন্যায্য পাওনা। মানুষের যখন কর্মশক্তি কমে যায় কিংবা একেবারে হারিয়ে যায় তখনও তাঁর বেঁচে থাকার মতো কিছু অর্থের নিয়মিত জোগান প্রয়োজন। প্রয়োজনটা কর্মজীবনের থেকে বেশিই। কারণ, শেষ বয়সে মানুষের রোজগার শূন্য হয়ে যায় এবং চিকিৎসা-সহ কিছু ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে যায়। সভ্য দেশগুলোতে প্রবীণ নাগরিকের এই দিকটা সরকারই ভেবে রাখে। এটা সরকারেরই দায়িত্ব। কারণ, নাগরিক তাঁর কর্মজীবনটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষে দেশের জন্যই উজাড় করে দেন। একদিকে নিজ হাতে রাষ্ট্রগঠনের কাজ করেন। অন্যদিকে, ব্যক্তিগত রোজগার থেকে নানাবিধ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর মিটিয়ে থাকেন। ওই টাকায় প্রতি বছরের বাজেট তৈরি হয়। প্রশাসন, সংসদ, বিচার বিভাগ প্রভৃতি সচল থাকে। নানা স্তরের জনপ্রতিনিধিদেরও প্রতিপালনের ব্যবস্থা হয় জনগণের টাকায়। তাহলে আসল দাতা যাঁরা, প্রকৃতপক্ষে যাঁরা এই দেশের মালিক তাঁদের জরুরি মুহূর্তে সরকার পাশে থাকবে না কেন? এই বাস্তব বোধ এবং নৈতিক চিন্তা থেকেই প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার কথা উঠে আসে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনও দিনই এই বিষয়টি উপলব্ধিতে আনেনি। এমএলএ, এমপি, মন্ত্রী এবং লাটসাহেবদের উত্তরসূরিদের রসেবসে রাখার ব্যবস্থা করেই নিশ্চিন্ত রয়েছে। পেনশন দয়ার দান নয়। সংশ্লিষ্ট প্রবীণ ব্যক্তিদের অধিকার। তবু তাঁদের ‘খয়রাতি’ দেওয়ার মতো করেই যা-খুশি একটা দিয়েই দায় সারে সরকার। মাসে ন্যূনতম সাড়ে সাত হাজার টাকা পেনশনের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রমমন্ত্রক এই দাবি মেনে নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছিল। বলেছিল, যতদিন না সাড়ে সাত হাজার দেওয়া হচ্ছে, ততদিন ইন্টেরিম রিলিফ হিসেবে মাসে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
কিন্তু কোথায় কী? ২০১৯ লোকসভার ভোট মিটতেই মোদি সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে, সবটাই ভোঁ-ভাঁ! ২০১৪ সালের শ্রমমন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর ঘোষণা করেন, ন্যূনতম পেনশনের পরিমাণ হবে এক হাজার টাকা। কিন্তু কালক্রমে দেখা যাচ্ছে সেটাও একটা বাজে কথা। আর কত মিথ্যে বলে ক্ষমতার শীর্ষে থাকবেন নরেন্দ্র মোদি? ‘জুমলার সরকার’ পরিচয়েই ইতিহাসে নিজের নামটি মলিন অক্ষরে লেখাতে চান তিনি? যা-খুশি করুন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত অভিরুচি। কিন্তু দেশের সম্মাননীয় নাগরিকদের জীবন মর্যাদা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার তো তাঁর নেই। দেশের সংবিধান এমন অধিকার তাঁকে কোনওভাবেই দেয়নি।