ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাথরঘাটায় গুড় তৈরির ভাটি করেছেন শ্রীদাম কবিরাজ, নলিনী হালদারদের মতো কয়েকজন কারিগর। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার দুই শিউলি আনিসুর ও শহিদুল। শিউলিরা বলেন, দেশভাগের আগে থেকেই পূর্বপুরুষরা এই কাজ করত। এপারের মহাজনরা তাঁদের এখানে ডেকে আনতেন। এরপর দেশ ভাগ হয়। মহাজনী প্রথাও ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়। গত ২০ বছর ধরে এ কাজে যুক্ত আছি। পূর্বপুরুষের হাত ধরে শেখা শিউলির কাজ এখনও করছি। এপারের বন্ধুদের ডাক পাওয়ার জন্য প্রতিবছর শীতের অপেক্ষা করে থাকি। তাই ডাক পেলেই পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে চলে এপারে আসি। এবার যেহেতু সংক্রমণ কিছুটা থিতু হয়েছে তাই এখানে আসতে কোনও সমস্যা হয়নি। এখানে মাস তিনেক থাকব। গুড়ের মরশুম শেষ হলে দেশে ফের যাব।
পাথরঘাটায় গুড়ের ভাটিটি তৈরি করেছেন কোচবিহারের শ্রীদাম কবিরাজ। তিনি বলেন, বছরের অন্য সময় আমরা বাড়িতে কৃষিকাজে যুক্ত থাকলেও এই সময়টা এই কাজ করি। তাতে কিছু অতিরিক্ত আয় হয়। পাথরঘাটায় ১৩০টি খেজুর গাছ ভাড়া নিয়েছি। দফায় দফায় সেই গাছ থেকে আমরা রস নামাচ্ছি। ভোর থাকতেই সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছি। এলাকার মানুষ রস কিনছে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন কোয়ালিটির গুড় তৈরি করি।
তাঁর একটাই আক্ষেপ, গাছ ভাড়া নিয়ে, লোক দিয়ে গাছ থেকে রস নামিয়ে, ভালো গুড় তৈরির দাম উপযুক্ত দাম মেলে না। কারণ খুব ভালো মানের নলেন গুড়ের দাম কেজি প্রতি প্রায় ২৫০ টাকা খরচ হয়। ওই দামে গুড় কেনার খদ্দের বেশি নেই। এই কারণে যাঁরা অর্ডার দেন তাঁদের আমরা গুড় তৈরি করে দিই। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ কুইন্টাল গুড় তৈরি করেছি। ওসব বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা অনিমেষ বর্মন বলেন, পিঠে, পুলি, পায়েসের মরশুম এসে গিয়েছে। আর পাথরঘাটায় এদের আগমনে আমরা সকাল সকাল টাটকা খেজুর রস পাচ্ছি। মনের মতো স্বাদের গুড় হাতের নাগালেই মিলছে। অনেক জায়গায় তো এসব এখন অতীত। আমরা চাই ওঁরা প্রতিবছর আসুন।
জলপাইগুড়ি শহরের গুড় ব্যবসায়ী পবন হালদার বলেন, জেলায় কয়েকটি জায়গায় খেজুরের গুড় তৈরি হলেও, জলঙ্গি থেকে প্রচুর পরিমাণ গুড় এখানে আসে।
আবার এই জেলায় তৈরি গুড় কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, সহ জেলার বিভিন্ন বাজারেও হোলসেল ব্যবসায়ীরা কিনে নেন।