ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
এমন যথেচ্ছ রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেছে পদ্মশিবির। ছাপ্পা ভোটের বহু ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেও নির্বাচন কমিশন নির্বিকার! ওই রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা তাই প্রশ্নের মুখে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে কমিশন। গুন্ডা বাহিনীর দাপাদাপিতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আশ্বাসও অসার প্রতিপন্ন হয়েছে। অবশ্যই এর মূল্য চোকাতে হবে বিজেপিকে। বেনিয়মের ভূরি ভূরি নজির রাখল এই পুরভোট। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসকদল বিজেপির দিকে। তাদের ভূমিকা ন্যক্কারজনক।
প্রশ্ন হল, ত্রিপুরায় কেন এত মরিয়া বিজেপি? অঙ্কটা পরিষ্কার। নরেন্দ্র মোদি থেকে বিপ্লব দেব—সকলেই বুঝতে পারছেন উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে তাঁদের ক্ষমতার আয়ু ফুরিয়ে এসেছে। বিশেষত, পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের দুরমুশ করার পর ত্রিপুরায় যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস তাতে ওই রাজ্যে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের পক্ষে জেতা কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া আগামী বছরের গোড়ায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ভোট। যেখানে রীতিমতো চাপে আছে যোগী সরকার। এই প্রতিকূল অবস্থায় ত্রিপুরায় পুরভোটের মতো স্থানীয় নির্বাচনেও পা হড়কে গেলে তার অভিঘাত পড়বে অন্যত্র। তাই বিরোধী, বিশেষত তৃণমূলকে ঠেকাতে মরিয়া বিজেপি। সন্ত্রাসের লাল চোখের শাসন দেখিয়ে বিরোধী পক্ষকে চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল তারা। এতে সমালোচনার ঝড় উঠলেও গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরতেও পিছপা হয়নি। এই পুরভোট গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্নকে সামনে এনে দিল। ২০২৩-এর বিধানসভা ভোটেও কি এইভাবে জিততে চাইবে বিজেপি? ত্রিপুরার মানুষ কি সেটা মেনে নেবেন? কাজটা সহজ হবে না। কারণ, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষই ঘুরে দাঁড়ায়। ইতিহাস সে-কথাই বলে। বঙ্গে ৩৪ বছর শাসনের পর দোর্দণ্ডপ্রতাপ বামফ্রন্টের পতন হয়েছিল এই নিয়মেই। বিজেপি আমলে ত্রিপুরাতেও কোনও ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হচ্ছে না। এই রক্তাক্ত পুরভোট সে-কথাই আর একবার মনে করাল। মানুষ বুঝতে পারছেন, এই প্রশাসন বহাল থাকলে ত্রিপুরায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়া অসম্ভব। প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েও সুরাহা হবে না। কিন্তু বিপ্লববাবুরা ভুলে যাচ্ছেন, গণতন্ত্রে শুধু জনগণই শেষকথা বলে। ত্রিপুরা কোনও ব্যতিক্রম নয়।