উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের উৎসবটি হয়ে গেল ভারতে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, এবারও নির্বাচনী প্রচারে সেভাবে গুরুত্ব পায়নি পরিবেশ সচেতনতার বিষয়টি। অথচ, ভোটপ্রচার চলাকালীন কদর্য ভাষার প্রয়োগ হয়েছে অহরহ, ঘটেছে শব্দদূষণও। প্রতিশ্রুতি অবশ্য কম দেওয়া হয়নি। অথচ, দেওয়া হল না সুস্থ পরিবেশে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে মানুষ যাতে সুস্থভাবে বাঁচতে পারে তার ব্যবস্থা করার কোনও প্রতিশ্রুতি। যে মানুষের ভোটে নেতারা নির্বাচিত হলেন সেই ভোটারদের জীবন যদি দূষণের কারণে বিপন্ন হয় বা মানবসভ্যতার অস্তিত্বই যদি সংকটাপন্ন হয় তা নিয়ে ভাবনাচিন্তার অবকাশ কি আছে রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের মধ্যে? নাহলে বনসৃজনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব কেন? গাছ কেটে রাস্তা চওড়া হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে আবাসন ঘরবাড়ি কলকারখানা। কিন্তু, তার ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য যে নষ্ট হতে বসেছে সেটা ভাবে ক’জন? একটি গাছ কাটলে পাঁচটি গাছ লাগানোর কথা—সেটা কি সবসময় হচ্ছে? উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ অবশ্যই ভালো। তার সঙ্গে দরকার তো সবুজায়নও। সেটা সেভাবে হচ্ছে কই? নির্বিচারে অরণ্য নিধনের পরিণতিতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে বসেছে। সর্বংসহা ধরিত্রীর সহনশীলতাই চ্যালেঞ্জের মুখে। পরিবেশ যে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেটা অনেকসময়ই রাজনৈতিক বক্তব্যে ঠাঁই পায় না। উদাসীনতা আছে সরকারি স্তরে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও। আর সেই কারণেই একদিকে চলছে প্ল্যাস্টিক ক্যারিব্যাগের যথেচ্ছ ব্যবহার, অন্যদিকে জ্বালানি কলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদি কারণে ভূমণ্ডলে বাড়ছে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমাণ। পরিবেশের মারাত্মক দূষণে বিপন্ন হতে বসেছে জীবজগৎ, বাড়ছে রোগব্যাধির প্রকোপ। পরিবেশ রক্ষায় বা তার উন্নতিসাধনে যে আন্তরিকতার দরকার তার অভাব স্পষ্ট। সচেতনতার অভাব আছে নাগরিকদের মধ্যে। উদাসীনতা রয়েছে সরকারি তরফেও। বিপদ তো আছেই।। একটি খবরে প্রকাশ, বিশ্বের উষ্ণতম পনেরোটি স্থানের মধ্যে ভারতেই রয়েছে আটটি এলাকা। এই হিসাবটি এ মাসের প্রথমে ২৪ ঘণ্টার নিরিখে। তাই সাবধান তো হতেই হবে। আর, প্রকৃতিপাঠ তো শুরু করতে হবে একেবারে নিজের ঘর থেকেই। বিশ্ব পরিবেশের ক্ষতির জন্য যেখানে মানুষই দায়ী, সেখানে ক্ষতিপূরণ করতে হবে মানুষকেই। পরিবেশ রক্ষায় সরকারের ভূমিকা নিঃসন্দেহে অনেকখানি। তাই, পরিবেশ দপ্তরের গুরুত্ব বৃদ্ধি করাটাও জরুরি। বিশ্ব উষ্ণায়নের ব্যাপারে এখনই সচেতন নাহলে একদিন হয়তো ধ্বংসের মুখে পড়বে পৃথিবী।
তাই, বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের বিষয়টি শুধুমাত্র একটি দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না-রেখে তা প্রসারিত হোক প্রতি দিনই। পরিবেশ রক্ষার চেতনা বৃদ্ধি নাহলে যে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার কোনও উপায় নেই। পরিবেশ দূষণ হবে এমন কোনো কাজই আমরা করব না—এটাই হোক বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অঙ্গীকার।