উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
এই প্রশ্নের উত্তর এখনই পাওয়া মুশকিল। কোনও সন্দেহ নেই, নরেন্দ্র মোদি নামে এক ব্যক্তির ঝড়ে দ্বিতীয়বার উদ্বেলিত হয়েছে আসমুদ্রহিমাচল। কিন্তু নেপথ্যে আরও একটা নাম রয়েছে, অমিত শাহ। প্রত্যেক রাজ্যে বিজেপির সংগঠন সাজানো এবং ভোটের পরিকল্পনায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। প্রশাসনে মোদি এবং সংগঠনে অমিত শাহ। বিজেপির সাফল্যের চাবিকাঠি এই জুটি। কোনও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ধারিত সময়ের বছর খানেক আগে থেকে অমিত শাহ ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দেন। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে আচমকা ভরাডুবির পর মনে হয়েছিল, মোদি ম্যাজিকের পাশাপাশি অমিত শাহের ক্যারিশমাতেও বোধহয় জং পড়েছে। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরতেই দেখা গেল, এই জুটি পুরো অঙ্কটাকে ফের বদলে দিয়েছেন। বিজেপি আশাতীত ভালো ফল করল এই তিন রাজ্যে। শুধু এই তিনেই সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না! পশ্চিমবঙ্গেও বহুদিন আগে অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, ২৩টি আসন পাব। তখন এই দাবিকে অনেকেই দিবাস্বপ্ন বলে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবল পরাক্রম। তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। কেউ ভাবতেই পারেনি, তলে তলে বিজেপি এতটাই ডানা মেলেছে। নিজেরই স্থির করা টার্গেট প্রায় ছুঁয়েই ফেলেছেন অমিত শাহ। লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন বাংলা থেকে দখল করেছে বিজেপি। দলের উপর কর্তৃত্ব এবং সাংগঠনিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সফলভাবে এতদিন করে এসেছেন অমিত শাহ। এবার তিনি মন্ত্রিসভায় চলে যাওয়ায় একটা শূন্যতা অবশ্যই তৈরি হবে। যিনিই দায়িত্বে আসুন না কেন, তাঁর সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ আসতে চলেছে। মোদি-অমিত শাহ জুটি কার্যত গোটা ভারতের গেরুয়াকরণ করে ফেলেছে। একে একে বাজতে শুরু করবে এবার বিধানসভা ভোটের দামামা। যা এই মুহূর্তে বিজেপির কাছে রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ। লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশের ক্ষেত্রে রাজ্যসভার ভূমিকা অনস্বীকার্য। কাজেই বিজেপিকে বিধানসভা নির্বাচনেও দেশের ম্যাপের গেরুয়াকরণের দিকে নজর রাখতে হবে। এবং সেক্ষেত্রে শরিক দল ধরে সরকার গড়ার থেকেও বেশি কার্যকর হবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট। লোকসভার পরীক্ষায় ভালো ফল করার পর বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা আশায় থাকবেন, এর রেশ বিধানসভা পর্যন্ত থাকবে। উল্টোদিকে, এই মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদির এক নম্বর রাজনৈতিক শত্রু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেড়েফুঁড়ে দলের ক্ষত মেরামতে নেমে পড়েছেন। সোজা কথায়, পশ্চিমবঙ্গে সামনে কিন্তু মোদি-অমিত শাহের প্রেস্টিজ ফাইট। অমিত শাহ সংগঠনের মাথা থেকে সরে যাওয়ায় সেই লক্ষ্যভেদ আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলা থেকে বেশি মন্ত্রী না করার কারণই হল, রাজ্যের এমপিদের আপাতত সংগঠন দেখার কথা বলা হয়েছে। নির্দেশ গিয়েছে, এখন দল বাড়াতে হবে। কিন্তু মন্ত্রিসভার ভার বাড়াতে গিয়ে বিজেপিতে ফাঁক তৈরি হয়ে গেল না তো? উত্তর পেতে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে না।