উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
চিকিৎসার ত্রুটিতে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ক্ষিপ্ত লোকজনের হাতে সোমবার সন্ধ্যায় এনআরএস-এ জুনিয়র ডাক্তারদের উপর ব্যাপক হামলা হয়। লরি এবং মোটরবাইকে চেপে আসা প্রায় শ’দুই লোক এই বেপরোয়া হামলা চালায়। এতে কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার জখম হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একজনের আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে ন্যক্কারজনক। এর প্রতিবাদ হওয়াই উচিত সর্বস্তর থেকে, শুধু ডাক্তারদের তরফে নয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি এবং দ্রুত। কিন্তু, প্রতিবাদ আর দোষীদের শাস্তির অপেক্ষায় ডাক্তাররা কিন্তু পরিষেবা বন্ধ রাখতে পারেন না। কারণ, তাঁদের কাজটা মানুষের জীবন নিয়ে। অনেক কিছুই সাময়িক থামিয়ে বা স্থগিত রাখা যেতে পারে, কিন্তু জীবনকে এক মুহূর্তও থামিয়ে রাখার জাদু আমরা আবিষ্কার করতে পারিনি। জীবনের শর্ত সোজাসুজি দু’টি—হয় চলতেই থাকবে অথবা চিরতরে থেমে যাবে। যাঁরা জেনেবুঝে এই পেশা গ্রহণ করেছেন, তাঁরা প্রতিবাদের নামে কর্মবিরতি চালালে মানবিকতার কতটা অপমান হয় তা তাঁদের ভেবে দেখতে হবে।
চিকিৎসক-নিগ্রহ নতুন ঘটনা নয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এ বহু পুরনো এক ব্যাধি। কারণ দু’টি। প্রথমটি হল ডাক্তারদের একাংশের অমানবিক মুখ। দ্বিতীয়টি হল প্রশাসনিক ব্যর্থতা। ডাক্তারের একাংশের দুর্ব্যবহার, অবহেলা থেকে অসততার অভিযোগের সবটা মিথ্যে নয়—এ অনেক ডাক্তারও মানেন। দুর্নাম এমন একটি জিনিস, একবার রটে গেলে আস্থা ফেরানো খুব কঠিন। ডাক্তারদের ক্ষেত্রে এই দুঃসময়টাই চলছে। পরিতাপের বিষয় হল, দুঃসময়টা বড় দীর্ঘ! মনে রাখতে হবে, ডাক্তাররা খারাপ থাকলে সমাজের কেউ ভালো থাকতে পারেন না। দুঃসময়টা পরোক্ষে আমাদের সকলের। তাই, জোরালো প্রতিবাদ হওয়া উচিত সর্বস্তর থেকে। আমাদের চারিপাশে তাকালে, মিডিয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর রাখলে আমরা দেখব—সব স্তরের মানুষই ডাক্তার-নিগ্রহের নিন্দায় মুখর হয়েছেন। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতেও সরব তাঁরা। মানুষের এই চেতনা বেশ স্বস্তিদায়ক। আন্দোলন অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিয়ে চিকিৎসার কাজে ফিরে গেলে তা ডাক্তারদের সুবিবেচনা হিসেবেই প্রশংসিত হবে; মানুষের আস্থা ফিরে পাওয়া সহজ হবে তাঁদের পক্ষে। হাসপাতালসহ সর্বত্র ডাক্তাররা কীভাবে নিরাপদে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারেন, সেটা সরকারকেই দেখতে হবে। ডাক্তারদের নিরাপত্তার প্রশ্নে সামান্য ব্যর্থতাও প্রশাসনের পক্ষে লজ্জার।