উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
মোদি সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসে যাঁরা স্থান পাননি তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে চর্চিত দু’টি নাম হচ্ছে, অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজ। বাজপেয়ি-আদবানি যে টিম তৈরি করে ভারত জুড়ে গেরুয়া পতাকার প্রসারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তার অগ্রণী সৈনিক ছিলেন অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজ। দু’জনেই এবার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার আগের দিন অরুণ জেটলি নিজে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তাঁকে মন্ত্রিসভায় না রাখতে। সুষমা স্বরাজও কিডনির অসুখে যথেষ্ট কাহিল। তাঁকেও এবার মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। অরুণ ও সুষমার প্রস্থানের পর বাজপেয়ি জমানার শেষ নেতা হিসেবে রয়ে গিয়েছেন রাজনাথ। বৃহস্পতিবার যখনই জানা যায় যে সেই রাজনাথকেও প্রধানমন্ত্রী কার্যত ক্ষমতাহীন করে দিয়েছেন তখন শোরগোল পড়ে যায়। একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও তাঁর ক্ষোভ ও অসন্তোষ চেপে রাখেননি। এই ক্ষোভের কথা জানাজানি হতেই রাতের দিকে রাজনাথকে তাঁর পুরনো মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয় মোদি সরকারের ম্যানেজাররা।
একথা ঠিক এবার যে জয় এসেছে তাতে বিজেপি সরকারের ছোটখাটো কোনও বিষয়ে বিচলিত হওয়ার মানেই হয় না। শরিকদের উপর নির্ভরতাও অনেকটাই কমে এসেছে। কয়েকজন শরিক নেতাকে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে মন্ত্রী করলেও তাঁদের থাকা না থাকায় কিছু যায় আসে না। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক না পেয়ে নীতীশ কুমারের দল শেষ মুহূর্তে মন্ত্রিসভায় শামিল হয়নি। কিন্তু তাই বলে ক্ষোভ দেখিয়ে বিদ্রোহ করার সাহসও পায়নি। আসলে এবারের জনাদেশটাই এমন যে সহজে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখিয়ে, অভিমান করে বাগে আনা সম্ভব নয়। কিন্তু তা বলে বিজেপির জন্মলগ্ন থেকে নানা উত্থান পতনের সাক্ষী রাজনাথকে এত তাড়াতাড়ি ঠুঁটো জগন্নাথ করে দেওয়াও মোটেই যুক্তিযুক্ত কাজ নয়। একসঙ্গে যেমন সরকারকে জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণের জন্য আরও বেশি করে উদ্যোগী হতে হবে, তেমনি দলের সব অংশকে সঙ্গে নিয়ে একটা গতিশীল ভারসাম্যের সরকার উপহার দেওয়াই আপাতত মোদির লক্ষ্য হওয়া উচিত। সেই নিরিখেই দ্বিতীয় মন্ত্রিসভাতে রাজনাথের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। আদ্যন্ত আরএসএসের আদর্শ ও শৃঙ্খলায় বেড়ে ওঠা রাজনাথ খুব সফলভাবে দলের পুরনো ধ্যানধারণার সঙ্গে নতুনদের মেলবন্ধন ঘটাতে পারবেন। তাই কয়েক ঘণ্টার জন্য ক্ষমতাহীন করে দিলেও ভুল বুঝতে পেরে দ্রুত ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
মন্ত্রিসভার গঠন থেকেই বোঝা যাচ্ছে আগামীদিনে দল ও সরকারের নিয়ন্ত্রণ যাবে অমিত শাহের হাতেই। সেই কারণেই শপথের পর এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখনও দলের সভাপতি পদেই আসীন রয়েছেন অমিত। বিজেপিতে এক ব্যক্তি এক পদের নীতিই সর্বদা মেনে চলা হয়। সেই আদর্শ মেনে অমিত শাহ দলীয় সভাপতির পদ ছাড়েন কি না সেটা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে ২০১৪ সাল থেকে বিজেপি দলটা যেভাবে নরেন্দ্র মোদিরই সমার্থক হয়ে গিয়েছে সেইভাবে আগামীদিনে প্রবল পরাক্রান্ত অমিত শাহ একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হবেন কি না আপাতত সেই দিকেই সবার নজর। তাই সম্মান আপাতত কিছুটা ফিরে পেলেও দেওয়ালের লিখন কি পড়তে পারছেন রাজনাথ সিং?