উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
মন্ত্রিসভা গঠন করে চমক আনলেন মোদি। সকলের নানা ভবিষ্যদ্বাণী ব্যর্থ হল। অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেন নির্মলা সীতারামন। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আগের বার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তিনি। এবার তাই আর একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি সীতারামন। যেদিন মন্ত্রিসভা শপথ নিল, সেদিনই প্রকাশ্যে এসেছে সরকারের একটি রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, গত ৪৫ বছরের মধ্যে এই মুহূর্তে দেশ সব থেকে বেশি কর্মহীনতার গ্রাসে। পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পর বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসার মধ্যে আনন্দ যতটা থাকে, এই রিপোর্ট ততটাই লজ্জা দিতে পারে। তাই দেশের বেকারত্ব দূর করাটা তাঁর সামনে একটা মস্ত চ্যালেঞ্জ। দেশে শিক্ষার হার বাড়বে। মানুষ ক্রমেই উচ্চশিক্ষিত হবেই। কিন্তু তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেকারের সংখ্যা বাড়বে, সেটা মোটেই কাম্য নয়। সরকারকে এর দায়িত্ব নিতে হবে। সমস্যার সুরাহা করতে হবে।
ভোটের আগে ভোট অন অ্যাকাউন্টে সরকার কিছু প্রকল্প ঘোষণা করেছিল। সেটা ছিল ভোটমুখী প্রকল্প। এবার সরকারকে কল্যাণমূলক কিছু প্রকল্প ঘোষণা করতে হবে। সামনের বাজেটে তাই একটা বিরাট পরিবর্তন ঘটতে পারে। সরকারের কাছে বাজেট এক অগ্নিপরীক্ষা। পাশাপাশি সেই বাজেট থেকে হদিশ মিলবে সরকারের পথচলার লক্ষ্যটা আসলে ঠিক কোন দিকে। সাদা চোখে তাকালে আমরা দেখব, আর্থিক বৃদ্ধির হার কমেছে। শিল্পোৎপাদনের হার কমেছে, আর্থিক ঘাটতির পাশাপাশি কমেছে বিদেশি লগ্নি। বেড়েছে শুধু মানুষের ভোগান্তি। এই ভোগান্তি কমাতে না পারলে এই বিরাট জনাদেশের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে এসেছে নতুন মুখ। দায়িত্বে অমিত শাহ। এই সরকারের মূল জুটি হলেন মোদি-শাহ। এঁদের সামনে সব থেকে বড় প্রশ্ন হল এনআরসি। কী হবে তার রূপ কতটা সংঘাত তৈরি হবে তাকে কেন্দ্র করে, এসব নিয়ে শুরুতেই মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি কাশ্মীরে কি ৩৭০ ধারা বিলোপ হবে? অভিন্ন দেওয়ানি বিধিরই বা কী হবে? এরকম অসংখ্য চ্যালেঞ্জ আজ এই সরকারের সামনে। সরকার কি গড়িমসি করে কঠিন ইস্যুগুলি ধামাচাপা দিয়ে কাটিয়ে দেবে, নাকি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে সমস্যার সমাধান করবে? দিনে দিনে তার উত্তর মিলবে।
মোদি সরকারের চ্যালেঞ্জ শুধু ঘরেই নয়, বাইরেও। একদিকে পাকিস্তানের যাবতীয় কূটকৌশলের মোকাবিলা করা। অন্যদিকে আমেরিকা, ব্রিটেন রাশিয়া, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা। শনিবারই ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে হুমকি দিয়েছে। বাণিজ্যক্ষেত্রে তারা ভারতকে যে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দিয়েছে, তা কেড়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত অস্ত্র কিনছে বলে ট্রম্পের গোঁসা হয়েছে। তাই বিনা শুল্কে ভারতে পণ্য পাঠানোর যে সুযোগ আমেরিকা দিয়েছিল, তা কেড়ে নেবে বলে হুমকি দিয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকে এসেছে নতুন মুখ। সুব্রমণ্যম জয়শঙ্কর। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশ মন্ত্রকের নানা পদ আমলা হিসাবে সামলেছেন। আমেরিকা, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় তাঁর নখদর্পণে। তাই মোদি তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। কঠিন বিষয়গুলি সহজ করার অঙ্ক জয়শঙ্কর জানেন। তাই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই ভারত পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে জটিল সম্পর্কগুলিকে সহজতর করে তুলবে বলেই আশা করা যায়।
অসংখ্য চ্যালেঞ্জের জটিল আবর্তে সরকার কীভাবে তার চলার পথ খুঁজে নেয়, সেটাই দেখার। দুষ্টের দমন হোক, শিষ্টের পালন হোক, মাথার উপর ছাদ, পেটে ভাত, ছেলেমেয়ের শিক্ষা ও চাকরি। যুগ যুগ ধরে সাধারণ মানুষ এটাই চেয়ে আসছে। মোদিকে এইসব পূরণ করার দায়িত্ব মানুষ দিয়েছে। তাঁকেই এসব পূরণ করতেই হবে।