বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলিও কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। একদিকে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন গত পাঁচ বছরের সরকারকে উৎখাত করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নামতে চায় বিরোধীরা। নীতি, আদর্শ, রাজনৈতিক স্বার্থ প্রভৃতি বিভিন্ন ইস্যুতে অভিন্ন মতের না হলেও একটি বিষয়ে তারা এককাট্টা। তাদের ঘোষিত লক্ষ্য একটাই। তা হল, মোদি জমানায় ইতি ঘটানো। বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যেই আলাপ আলোচনা, যৌথ সভা সমাবেশ প্রভৃতি কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, দ্বিতীয়বারের জন্য ফের ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া মোদি তথা গেরুয়া শিবির। ওই শিবিরের হাতে এখন কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে, আর্থিক জোর থেকে শুরু করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও ঘুরপথে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগের বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র তাদের ভাণ্ডারে মজুত। শিল্পপতি ও রাঘববোয়াল ব্যবসায়ীদের বড় অংশ নিজেদের স্বার্থেই ক্ষমতাসীন দল বা পক্ষকে আর্থিক সহায়তা জোগাতে সাধারণত একপায়ে খাড়া থাকে। রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে সোজাপথে জমা পড়া চাঁদার যে হিসেব প্রকাশ্যে এসেছে তা থেকেই এ ছবির আভাস মেলে। এরই পাশাপাশি সিবিআইসহ কেন্দ্রের হাতে থাকা নানা এজেন্সিকে ক্ষমতাসীনদের তূণের তিরের মতো ব্যবহারের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। ওই এজেন্সিগুলিকে দিয়েই বিরোধীদের নানাভাবে ধমকানো, চমকানো, প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করে ফাটকে ভরে দেওয়ার খেলা জমে ওঠার অভিযোগ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। অন্যদিকে, আর্থিক ব্যাপারে খানিকটা যুঝতে পারলেও কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহারে ক্ষমতাসীন বনাম বিরোধীদের লড়াই অসম বললে কম বলা হয়। তবু খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো সাধ্যমতো পাল্টা আক্রমণের রাস্তা বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকলে সে পথেও এগতে চাইছে বিরোধীরা। বিরোধী দলগুলির বেশ কয়েকটি এখন বিভিন্ন রাজ্যের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্ধ্রে চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো গেরুয়াবিরোধী নেতারা এই মুহূর্তে নিজের নিজের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে তাঁদের হাতেও সিআইডি’র মতো কিছু এজেন্সি রয়েছে। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীনদের লাগাতার আক্রমণের মুখে পড়ে সম্ভবত ওই সীমিত ক্ষমতার এজেন্সিগুলিকেই আত্মরক্ষার কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে।
কখনও-বা সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই গোপন খেলার পাশাপাশি প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে যেভাবে বিষোদ্গার করে চলেছে তা দেশের আমজনতার কাছে এই মুহূর্তে যথেষ্ট উপভোগ্য উপাদানে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে গিয়ে বহুক্ষেত্রেই যুক্তি বা তথ্যের চেয়ে সস্তা গিমিক, হাস্যকর অভিব্যক্তি, এমনকী অসত্য বা অর্ধসত্য অভিযোগ তোলা হচ্ছে। একইসঙ্গে শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়া মন্তব্যও ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এতে বিভ্রান্তি, প্ররোচনা এবং অনভিপ্রেত পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়ছে। কোনও সভ্য দেশে তা কোনওভাবে কাম্য নয়।
পরিতাপের বিষয়, ভোটের মুখে রাজনীতি থেকে নীতিটাই ক্রমশ বিদায় হতে বসেছে। নীতিহীনতার জাল বিস্তৃত হচ্ছে। বৃহত্তম গণতন্ত্রের পক্ষে বিষয়টি লজ্জার নয় কি!