বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
একদিকে, সরকারি হাসপাতালে ফেয়ার প্রাইস শপ চালু করা, পিপিপি মডেলে হাসপাতাল চত্বরেই এমআরআই-সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষানিরীক্ষার খরচ কমিয়ে আনা, সর্বোপরি বিনামূল্যেই পরীক্ষা বা চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা। এভাবে একের পর এক জনমুখী সিদ্ধান্তের ফল কী হয়েছে বা আগামীদিনে হতে পারে, তার একটা আভাস মিলবে যে কোনও সরকারি হাসপাতালে পা রাখলেই। প্রতিদিন শয়ে শয়ে রোগী সেখানে ভিড় করছেন।
এ যে নেহাতই কথার কথা নয়, চোখের দেখা নয়, তার প্রমাণও মিলেছে সরকারি পরিসংখ্যানেই। মাসখানেক আগে কলকাতার পাঁচ সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পিপিপি মডেলের সেন্টারগুলিতেও সমস্ত ধরনের রোগ পরীক্ষার খরচ ফ্রি করে দেওয়ার পর হু হু করে বাড়ছে এমআরআই-সিটি স্ক্যানের সংখ্যা। গত ক’মাসে সেই সংখ্যা ২০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে, বাম জমানার সঙ্গে মমতার রাজত্বের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত ছয়-সাত বছরের হিসেবে সরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১০ কোটি। প্রতি বছরই ধারাবাহিকভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জেলায় জেলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হওয়ার ফলে নিয়মনীতির ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ ওঠার রাস্তাও মুখ্যমন্ত্রী বন্ধ করে দিয়েছেন।
সম্প্রতি বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছেন, ‘নিখরচায় চিকিৎসা’ খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সরকার ১২৩১.৫২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। যেখানে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে অর্থাৎ বাম জমানার শেষে এটা ছিল মাত্র ২৯৬.১৬ কোটি টাকা। এমনকী স্বাস্থ্য খাতেও এবার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৬৮৩ কোটি টাকা। আরও একটি চমকে দেওয়ার মতো তথ্য হল, ফ্রি চিকিৎসা চালুর পর, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ২৮ লাখ মানুষ বিনা পয়সায় বিভিন্ন রোগ নির্ণয় পরীক্ষা করিয়েছেন।
এতকিছুর পরেও একটি ক্ষেত্রে বিষয়টিকে এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। সেটি হল, কলকাতার বড় বড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের অস্বাভাবিক ভিড়। সাধারণ জ্বরজারি বা সর্দি-কাশির জন্য যে এই হাসপাতালগুলি নয়, সেকথা ভুলে গিয়ে অতি সাধারণ রোগ নিয়েও মানুষ ভিড় করছেন এইসব জায়গায়। অথচ সরকারি পরিভাষায় এগুলি হল ‘রেফারেল’। অর্থাৎ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মহকুমা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, সদর হাসপাতাল প্রভৃতি জায়গায় চিকিৎসায় কাজ না হলে তখনই একমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে এইসব জায়গায় নামী ডাক্তারদের দেখানো যায়, তাঁদের অধীনে থেকে চিকিৎসা করানো যায়। বহুবার এনিয়ে হইচই হলেও বাস্তবে সমস্যা কিন্তু মেটেনি। ফলে ভিড়ের চাপে বহু রোগী প্রকৃত প্রয়োজনেই সু-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এমনও হালে শোনা গিয়েছে, বাইরে ডাক্তার দেখিয়ে অনেকে
স্রেফ বিনামূল্যে পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়ে নিচ্ছেন সরকারি হাসপাতালে। এমনকী বহু ভিন দেশের মানুষও বিনামূল্য বা স্বল্পমূল্যের চিকিৎসা পরিষেবা পেতে ভিড় করছেন রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে। এ নিয়েও সরকারের ভাবার সময় এসেছে।