বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
১৯৪৭-এ যে স্বাধীনতা পাওয়া গেল ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি সেই স্বাধীনতা সবরকমে উপভোগের নিশ্চয়তা দিল রাষ্ট্র। সংবিধান ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ এইগুলিই হল ১৩০ কোটি মানুষের প্রাচীন এক সভ্যভূমির মূল বৈশিষ্ট্য। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষা, সাম্য, নিজস্ব সংস্কৃতি ও ধর্ম পালন, শোষণহীনতা, বাকস্বাধীনতা প্রভৃতির অধিকার আমাদের সুরক্ষিত হয়েছে এই সংবিধানবলে। শিশু যুব নারী প্রবীণ নাগরিক শ্রমিক শ্রেণী প্রভৃতির জন্য নানাবিধ সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে সংবিধান নির্দেশিত নীতি মেনে। পঞ্চায়েত/পুরসভা, বিধানসভা এবং সংসদের মাধ্যমে নাগরিকরাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিভিন্ন স্তরীয় সরকার নির্বাচন করে থাকি। আমাদের দেশ যে গণতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালিত হচ্ছে, তারও চাবিকাঠি হল এই সংবিধান। আমাদের দেশই হল পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র—চীন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও যা বিস্ময়। একইসময়ে স্বাধীনতা লাভ করেও পাশের দেশ পাকিস্তান তার নাগরিকদের এই গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটা স্বাদ দিতেও ব্যর্থ হয়েছে। এই কারণে ভারতকে বেশিরভাগ দেশ শ্রদ্ধা করে, কিছু দেশ অনুসরণ করে এগতে চায়, আবার ঈর্ষাও করে কিছু দেশ।
অতএব আমাদের সবসময়ের চ্যালেঞ্জ হল ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য, অখণ্ডতা, পবিত্রতা রক্ষা করা। এই বিরাট চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়ার মূল মন্ত্র হল ধর্মনিরপেক্ষতা ও সাম্যের নীতি। এই নীতিতে অবিচল থাকলেই বহিঃশত্রুর নষ্টামি এবং অভ্যন্তরের বিছিন্নতার ব্যাধি সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব। কিন্তু, কিছু মানুষ, এমনকী রাজনৈতিক দলও সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে সংবিধানকে লঙ্ঘন করে আখেরে গোছানোর জন্য। তার ফলে হাজার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আজও আমরা দারিদ্র ও অশিক্ষা মুক্ত ভারত পাইনি। স্বাধীনতার ধারণাও পদদলিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আত্মশুদ্ধির সময় ফুরোয়নি। আসুন, সাধারণতন্ত্র দিবসকে এক নির্ভেজাল ছুটির দিন হিসেবে উপভোগ করার মানসিকতা ছেড়ে বেরিয়ে আসি। এই দিবসের তাৎপর্য সততা ও সাহসের সঙ্গে নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করি। বহু ত্যাগ আর শ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই সাধারণতন্ত্রের গর্বের পতাকা আরও উচ্চে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই আসুক একটি করে সাধারণতন্ত্র দিবস।