বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
কিন্তু, ভোট যত এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক অস্ত্রবর্ষণ ততই বাড়ছে। এতদিন দূর থেকেই ‘দিদি’ বনাম ‘মোদি’র বাগ্যুদ্ধ চলছিল। এবার একেবারে বাংলার মাটিতেই শুরু হয়ে গিয়েছে হেভিওয়েট দুই প্রতিপক্ষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুমুল তোপ দাগা। পশ্চিমবঙ্গে এসে বাংলার সিন্ডিকেট, তোলাবাজি এবং চিটফান্ডের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তৃণমূল সরকারের বিদায় নিশ্চিত। বাংলায় এবারই পরিবর্তন হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ৯০ হাজার কোটি টাকার দু’ডজন উন্নয়নমূলক বড় প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি এখানে। আসলে সিন্ডিকেটের শেয়ার না থাকলে তৃণমূল কোনও প্রকল্পে হাত লাগায় না। আবার ব্যক্তি আক্রমণ করে মোদি বলেন, এত ভিড় দেখে রাগে জ্বলছেন দিদি! আরেকটি সভাতেও ‘সিন্ডিকেট ট্যাক্স’ শব্দটি ব্যবহার করে মমতা ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মোদি। বলেন, দেশের মধ্যে বাংলার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। তাঁর কথায়—বাংলায় পড়াশুনা করতে ‘ট্রিপল টি’ ট্যাক্স লাগে। মানে ‘তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স’। কলেজে ভর্তি, শিক্ষক বদলিতেও এই ট্যাক্স দিতে হয়। এখানে জগাই, মাধাই সিন্ডিকেট কালচার চলছে। তাঁর দাবি, এদের যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। বাংলায় পরিবর্তন করবই করব। আসলে গরিবদের মুখ থেকে মোদির নাম বেরচ্ছে। তাই দিদিরও ঘুম গিয়েছে। আর আমায় দেদার গালি দেওয়া হচ্ছে। কারণ? কারণ, আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে। সিবিআই প্রসঙ্গে মোদি বলেন, ভুল না করলে অত চিন্তার কীসের? ভয় কীসের? আসলে উনি ভয়ে আছেন।
প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়ে মোদি আরও বলেন, ভোটের পর যখন পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হবে, দেশের কৃষক, শ্রমিক ও মধ্যবিত্তদের উন্নয়নের ছবি আরও স্পষ্ট হবে। তিনি ঘোষণা করেন, পাঁচ একর পর্যন্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক জমির মালিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ছ’হাজার টাকা কেন্দ্রীয় অনুদান জমা হবে। কৃষকদের প্রথম কিস্তি জমা পড়বে খুব শীঘ্রই।
অন্যদিকে, উল্টোদিকে তৃণমূলনেত্রীও মোদিকে ‘ডাকাতদের সর্দার’, ‘দুর্নীতির ঠাকুরদা’—এমন সব মন্তব্যসহ তীব্র আক্রমণ করেছেন। দিল্লিতে রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস নেতাকে মোদি প্রত্যেকেই পরস্পরকে কখনও প্রত্যক্ষ, কখনও পরোক্ষভাবে ‘চোর’ বলে অভিহিত করে চলেছেন। তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে এঁদের প্রত্যেকের এবং দলীয় ‘চরিত্র’ সম্পর্কে কী ধারণা হচ্ছে আম জনতার! বিশেষত আগামী প্রজন্মের! ভবিষ্যতের নাগরিকদের!
আমাদের দেশে এবার এক গুরুতর রাজনৈতিক সমীকরণের উপর ভিত্তি করে ভোট হতে চলেছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ভালো ফল করে সরকার গঠন করায় জাতীয় ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধীর দল আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। অপরপক্ষে বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলি জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের কেউ কেউ আবার কংগ্রেসের সঙ্গে তলায় তলায় যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছে। ফলে, শেষপর্যন্ত প্রাকনির্বাচনী গাঁটবন্ধন আদৌ কোন পর্যায়ে পৌঁছবে তা কেউ বুঝতে পারছে না। যাই হোক, সে জোট বা মহাজোট যাই হোক, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সাধারণ মানুষ চায় দেশের সুস্থিতি, মজবুত সরকার, দেশের মর্যাদা রক্ষা, আর্থিক সুরক্ষা, চাকরি, কৃষি-শিল্পে অগ্রগতি। মোট কথা, রাজার গদিতে বসে রাজধর্ম পালন। মুকুটের তলায় থাকা মাথা বদল হোক বা না হোক, রাজদণ্ডটি যেন অটুট থাকে।