বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
গত কয়েকমাস ধরে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের কৃষক ও গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ক যথেষ্ট রুষ্ট হয়েছে বলেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর ছিল। যার জেরে সম্প্রতি বিজেপির গড় বলে পরিচিতি ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে দল ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। ক্ষমতা হারায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আসন্ন লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার যখন আর একমাস বাকি, ঠিক তখন কৃষক ও গ্রামের মানুষের মন পেতে মোদি সরকারের এই একঝাঁক জনমোহিনী ঘোষণা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এমনকী গোপালন, গোশালা নির্মাণে উৎসাহ দিতেও বাজেটে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রবীণ মানুষ যাঁদের সামান্য সুদের আয়ের উপর সংসার চলে, তাঁদের আগে যেখানে ১০ হাজার টাকা সুদ হলেই উৎসমূলে কর (টিডিএস) দিতে হতো, এখন তা বাড়িয়ে ৪০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারও নীচে প্রান্তিক মানুষ যেমন ঠেলাওয়ালা, রিকশওয়ালা প্রভৃতি অসংগঠিত শ্রেণীর জন্যও এই প্রথমবার পেনশন যোজনা চালুর প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। এতে প্রায় ১০ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন বলে মোদি সরকারের দাবি। পেনশন মিলবে মাসিক ৩ হাজার টাকা করে। নিঃসন্দেহে ভালো খবর। বাজেট পেশের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এইসব প্রান্তিক মানুষদের কথা কেউ কখনও ভাবেনি। তাঁর সরকার এই কাজটি করতে পেরে যথেষ্ট গর্বিত।
জনমোহিনী ঘোষণার পাশাপাশি প্রতিরক্ষাখাতেও প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এই সরকার। ভারতীয় রেলের উন্নয়ন ও পরিকাঠামো তৈরিতে বরাদ্দ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৫৮ হাজার কোটি টাকা, যা এখনও পর্যন্ত রেলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। জনপ্রিয় ঘোষণার পাশাপাশি পরিকাঠামো উন্নয়নে মোদি সরকার যে চেষ্টার কসুর করবে না, এই বাজেট সেই দিগ্নির্দেশই করছে।
তবে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিরোধীরা মোদি সরকারের এই বাজেটকে আক্রমণ করে বলেছে, কিছু মিথ্যা তথ্য ও পরিসংখ্যানের উপর দাঁড়িয়ে গরিব, কৃষক ও মধ্যবিত্তকে সরকার বোকা বানাতে চেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই সরকারের আর একমাস মেয়াদ। ফলে বাজেটে যেসব ঘোষণা করা হয়েছে, তার কোনও দাম নেই। ভোট কেনার জন্য সস্তা চমক ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না এই বাজেটকে। মমতার দাবি, সরকারের আজকের ঘোষণা রোগী মারা যাওয়ার পর ডাক্তার ডাকার শামিল। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ট্যুইটবার্তায় বলেছেন, ছোট কৃষকদের দৈনিক ১৭ টাকা করে দিয়ে আখেরে তাঁদের অপমানই করেছে এই সরকার। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম বিজেপির এই বাজেটকে তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন, ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট নয়, সরকার যা করেছে তা আসলে অ্যাকাউন্ট ফর ভোট। সবাই বুঝছে, এটা ভোটের বাজেট। কিন্তু, এই বাজেট সত্যি গেমচেঞ্জার হতে পারবে কি না তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা পর্যন্ত।