বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
আসলে, নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ চালু হয়ে যাবে নির্বাচনী আচরণবিধি। তখন আর কোনও সরকারি ঘোষণা করা যাবে না। তাই সাধারণ মানুষের মন পেতে চমক দেওয়ার এটাই মোক্ষম সময়। মোদি সরকারও তা ভালোভাবেই জানে। ২০১৪ সালের ভোটে মধ্যবিত্তের অনেকটাই সমর্থন পেয়েছিলেন মোদি। কিন্তু, নোটবন্দি, মূল্যবৃদ্ধি, বেকার সমস্যা ইত্যাদি কারণে সাধারণ মানুষ, বিশেষত মধ্যবিত্তের অনেকেরই মোহভঙ্গ হয়েছে। সেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে আয়কর (ঊর্ধ্বসীমা) ছাড়ের ঘোষণা। শাসক দলের হাতে এই হাতিয়ারটি থাকলেও বিরোধী কংগ্রেসও হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই। কংগ্রেস সূত্রের খবর, নির্বাচনী ইস্তাহারে তারা ৩৫ বছরের নীচে বেতনভোগীদের ব্যক্তিগত আয় করমুক্ত করে দেওয়ার কথাও নাকি বলতে পারে। সবই সম্ভাবনার কথা। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দৌড়ে কে কতটা এগিয়ে সেই হিসেব-নিকেশের পর্ব চললেও মানুষ কিন্তু তাঁদের মূল্যবান ভোটটি দেবেন অনেক ভেবেচিন্তেই—কে তাঁদের জন্য একটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বা সুদিন আনতে পারবে সেটাই হবে আসল বিবেচ্য বিষয়। মা-মাটি-মানুষের কথা যে সরকার ভাববে অবশ্যই তারা দৌড়ে একটু এগিয়ে থাকবে। তাই বলাই যায়, ক্ষমতায় এলে গরিবের জন্য গ্যারান্টি রোজগারের বিষয়ে রাহুলের ঘোষণাটি মোদি সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। সত্যিই দেশে কোনও সরকার যদি তা করে দেখাতে পারে তাহলে তা হবে যুগান্তকারী। ইতিমধ্যেই তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জয়ের পর কৃষিঋণ মকুব প্রসঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে রাহুল গান্ধীর দল। সেই ধাক্কা সামলে মোদি সরকারও লোকসভা ভোটের আগে কৃষকদের পাশাপাশি ভূমিহীন কৃষক ও খেতমজুরদের মন পেতে মরিয়া। তাঁদের জন্য করতে পারে নিশ্চিত আয়ের প্রকল্প। ভোট অন অ্যাকাউন্টকে কতটা অন্তর্বর্তী বাজেটে পরিণত করা যায় চলছে তারই প্রচেষ্টা।
সবটাই হচ্ছে যেন ভোটের লক্ষ্যে। বাস্তব অভিজ্ঞতায় মানুষ দেখেছে—যখন যারা ক্ষমতায় আসে তখন তাদের দেওয়া কিছু প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়, কিছুটা বা হয় না। কিন্তু, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খুব বেশি হেরফের হয় না। ভোটের ঠিক আগে তাঁদের কদর বাড়লেও তাঁরা যে-তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই থেকে যান। অনেকেরই সুদিন ফেরে না। স্বাধীনতার এতগুলি বছর পরেও কর্মসংস্থানের অভাব আছে। দু’বেলা পেটভরে খেতে পান না বহু মানুষ, আছে শিক্ষার অভাব, ঘটে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু, মূল্যবৃদ্ধির কোপে জেরবার হন গরিবগুর্বো, মধ্যবিত্ত। ফের একটি একটি ভোট আসছে। তাই নেতাদের ভাবা দরকার—তাঁরা এখন যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তা পালনে আদৌ সক্ষম কি না। জনগণের সামনে খুড়োর কল ঝুলিয়ে দিয়ে ভোটে কাজ হাসিলের পর দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি তাঁরা যেন ভুলে না-যান। দায়বদ্ধ থাকুন দেশের মানুষের কাছে।