বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
দেশের কর্মসংস্থানের হাল কতটা খারাপ সেই বিতর্কে না গিয়েও বলা যায়, সমস্যাটি যে তিমিরে ছিল সেখানেই আছে। অথচ ভোটের আগে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট ময়দানে হাজির হন দেশের তাবড় নেতানেত্রীরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। মাত্র ক’দিন আগে চুঁচুড়ার সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং যুবসমাজের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা বিজেপিকে সমর্থন করুন, আমরা ক্ষমতায় এলে সমস্ত বন্ধ কারখানা খুলে যুবক-যুবতীদের কাজের ব্যবস্থা করব। বন্ধ কারখানা খোলার কথা বললেও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত করার জন্য নতুন কোনও ব্যবস্থার কথা তিনি বলেননি। সেদিক থেকে দেখলে রাজ্য বাজেটে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে বহু মানুষকেই অনেক কষ্টে দিনযাপন করতে হয়। তাঁদের কথা ভেবে বেশকিছু ক্ষেত্রে ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা রয়েছে রাজ্য বাজেটে। সরকারি দপ্তরে চুক্তিতে নিযুক্ত গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি শ্রেণীর কর্মীদের ভাতা ফেব্রুয়ারি থেকে মাসে ২০০০ টাকা করে বৃদ্ধি করা হয়েছে। চুক্তিতে নিযুক্ত ডেটা এন্ট্রি অপারেটরসহ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের ভাতাও ২০০০ টাকা করে বাড়ানো হল। চুক্তিতে নিযুক্ত কর্মীরা ৬০ বছর বয়সে অবসর নিলে পেতেন এককালীন ২ লক্ষ টাকা অনুদান। তা বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ ডি কর্মীদের মধ্যে যাঁরা মাধ্যমিক পাশ এবং তিন বছরের বেশি সময় চুক্তিতে কাজ করেছেন তাঁরা চুক্তিতে নিযুক্ত গ্রুপ সি কর্মীদের মতো সুবিধা পাবেন। অঙ্গনওয়াড়ি ও আশা কর্মীদের মাসিক ভাতাও বাড়ানো হল। এর থেকেই স্পষ্ট আম আদমির কথা ভেবেছে মমতার সরকার। রাজ্য বাজেটে হল তারই প্রতিফলন।
রাজ্য সরকারের ক্ষমতা সীমিত। তায় আবার ঋণভারে জর্জরিত। সেই সীমিত ক্ষমতায় সব স্তরের মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেওয়া কোনও সরকারের পক্ষেই হয়তো সম্ভব নয়। তার মধ্যেও চেষ্টা চলছে। জনকল্যাণমুখী নানা প্রকল্পও রয়েছে এই রাজ্যে—কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথি ইত্যাদি প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছে লক্ষাধিক ছেলেমেয়ে। কৃষক স্বার্থরক্ষায় রাজ্যে আগেই ঘোষিত হয়েছে কৃষক বন্ধু প্রকল্প। কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকার ফসল বিমারও বন্দোবস্ত করেছে যার প্রিমিয়াম দেয় রাজ্য। শিল্পতালুকেও আশা জাগানো বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এবারের বাজেট যে উন্নয়নমুখী হয়েছে তা বলাই যায়। রাজ্যে উন্নয়নের ধারাটি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, বিশেষত বেকারদের স্বার্থরক্ষায় এই সরকার যে প্রয়াসী তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবারের রাজ্য বাজেটে।