বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
আজ, সকাল ১১টা ৪৫মিনিটে মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হবে। বিকেল ৩টে পর্যন্ত তা চলবে। পরীক্ষা শুরুর ২৪ঘণ্টা আগে সোমবার কেন্দ্রগুলি ঘুরে দেখেছেন জেলা পরীক্ষা পরিচালন কমিটির সদস্যরা। ইতিমধ্যে কেন্দ্রগুলিতে সিট নম্বর বসানোর কাজ শেষ করা হয়েছে। এবার জেলায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৬০শতাংশের বেশি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার জেলায় পরীক্ষায় বসছে ৮২হাজার ২২৮জন ছাত্রছাত্রী। এরমধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ৫০হাজার ৩৫০ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬১.২৩ শতাংশ। আর ছাত্রের সংখ্যা ৩১হাজার ৮৭৮জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৮.৭৬শতাংশ। জেলা মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক শেখ মহম্মদ ফুরকান বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী প্রকল্প সফলভাবে রূপায়িত হওয়ায় জেলায় মেয়েদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ বেড়েছে। তাই মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছাত্রীর সংখ্যা অনেকটাই বেশি হয়েছে।
পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে জেলা পুলিস ও প্রশাসন একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এবার মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৫টি। এরমধ্যে ১৪টি সাবভেনু এবং ১২১টি মেন ভেনু করা হয়েছে। যারমধ্যে ১৪টি ভেনুকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফরাক্কা, সামশেরগঞ্জ, রঘুনাথগঞ্জ, বেলডাঙা, সাগরদিঘি, খড়গ্রাম, কান্দি, জলঙ্গি, শক্তিপুর প্রভৃতি এলাকায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলি অবস্থিত। গোলমাল ও টোকাটুকি এড়াতে প্রতিটি কেন্দ্রেই মোতায়েন থাকছে সিভিক ভলান্টিয়ার। আর স্পর্শকাতার কেন্দ্রগুলিতে সিভিক ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিস অফিসার মোতায়েন থাকবেন। সেই কেন্দ্রগুলিতে ভিডিও ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়া, জটলা হটানো ও কেন্দ্রে টুকলি সরবরাহ রুখতে প্রতিটি কেন্দ্র চত্বরে ১৪৪ধারা জারি করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ফটোকপির দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতেও মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ তৎপর। সশস্ত্র পুলিস পাহারায় প্রশ্নপত্রের প্যাকেট পরীক্ষার হলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই পরীক্ষার্থীদের সামনে প্যাকেট খোলা হবে। বিষয়টি তদারকি করার জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গড়েছে জেলা প্রশাসন। কমিটিতে ওসি(শিক্ষা) সৌগত মাইতি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) পূরবী বিশ্বাস দে ও পরীক্ষা পরিচালন কমিটির জেলা আহ্বায়ক রয়েছেন।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুমতো গ্রহণ করতে সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনিক ভবনে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার ফোন নম্বর-০৩৪৮২-২৫১৮৮৩। যে কোনও সমস্যায় পরীক্ষার্থীরা ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন। তা দ্রুততার সঙ্গে মেটানো হবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) বলেন, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পানীয় জলের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। মেডিক্যাল টিমও তৈরি করা হয়েছে। হলে কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত বাস রাস্তায় নামানোর কথা জানিয়েছে পরিবহণ দপ্তর।
জেলার পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জেলার কোথাও যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে দিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। ৩৪নম্বর জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন রাস্তায় যানজট নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এজন্য বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক পুলিস মোতায়েন করা হবে। স্পর্শকাতর কেন্দ্রে বাড়তি নজর দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গতবছরের তুলনায় এবার জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। জানা গিয়েছে, গতবছর জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ৮৬হাজার ৩৩৩জন। এরমধ্যে ছাত্র ও ছাত্রীর সংখ্যা ছিল, যথাক্রমে-৫৩হাজার ১৯৬ এবং ৩৩হাজার ১৩৭জন। এবার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪১০৫জন কমেছে। পরীক্ষা পরিচালন কমিটির জেলা আহ্বায়ক বলেন, গত বছর রেগুলার পরীক্ষার্থীরা ভালো ফল করেছিল। তাছাড়া, সিসি ও কম্পার্টমেন্টাল পাওয়া পরীক্ষার্থীদেরও অধিকাংশই পাশ করে সেবার। এসব কারণেই এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এটা স্বাভাবিক বিষয়।