সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
বিষ।
এই পটভূমিতে ভোটপর্ব শুরু হওয়ার ঠিক আগেই নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন প্রশাসনিক ও পুলিশকর্তাকে জরুরি ভিত্তিতে তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকে ভোটপর্ব সম্পূর্ণ না-হওয়া পর্যন্ত ভোটপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রতিটি বিষয়ই নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারে চলে যায়।
সংশ্লিষ্ট সমস্ত সরকারি অফিসারকে কমিশনের অধীনে, কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে হয়। তাই এই পর্বে কমিশন কাজের সুবিধার লক্ষ্যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারি অফিসারকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তা বেআইনিও নয়। কিন্তু মমতার অভিযোগ, তাঁর রাজ্যে নির্দিষ্ট কিছু অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার পিছনে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির ভূমিকা রয়েছে। বিজেপির দেওয়া তালিকা মতোই অফিসারদের সরানো হচ্ছে। এমনকী, দিন কয়েক আগে কোচবিহারে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চ থেকে এক বিজেপি নেতা জেলাশাসককে সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন। দেখা গেল, ওই কেন্দ্রে ভোট শুরুর দু’দিন আগেই সেই জেলাশাসককে বদলি করে দেওয়া হল। একইভাবে এর আগে কলকাতা ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারদের বদলির পিছনেও বিজেপির ভূমিকা ছিল বলে মমতার অভিযোগ, এই ব্যবস্থাগুলির মাধ্যমে ভোটগ্রহণ পর্বকে শাসক দলের অনুকূলে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতার ওই তোপ আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল।
এদিকে, চন্দ্রবাবু নাইডুও মমতার সুরেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। শনিবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে এসে চন্দ্রবাবু তাঁর ক্ষোভ জানিয়েছেন। সঙ্গে হুমকি দিয়েছেন, ইভিএম নিয়ে কমিশন কোনও সমাধানের ব্যবস্থা না করলে তিনি দিল্লিতে অনশনে বসবেন। কার্যত মমতার সুরেই চন্দ্রবাবু তোপ দেগে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির ইশারায় চলছে। নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনও ক্ষমতাই নেই। নাইডুর অভিযোগ, এবারের ভোটে কমিশন
একটিমাত্র দলের হয়ে সরকারের নির্দেশে যেভাবে কাজ করছে তা দুর্ভাগ্যজনক ও নজিরবিহীন। প্রথম দফার ভোটে অন্ধ্রে প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ ইভিএম গোলমাল করেছে। তাঁর ভয়ঙ্কর অভিযোগ, ওই ইভিএমগুলিতে যে-কোনও প্রতীকে দেওয়া ভোটই বিজেপি বা তার সহযোগী দলের প্রার্থীর অনুকূলে চলে গিয়েছে! এব্যাপারে বারংরার আপত্তি সত্ত্বেও প্রাথমিকভাবে কর্ণপাত করা হয়নি।
এখানেই শেষ নয়। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ওই রাজ্যে বিজেপি অফিস থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী অফিসারদের বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। নিয়োগ হচ্ছে নতুন অফিসার। ঠিক এমনই অভিযোগ মমতারও। নাইডু বলেছেন, গোটা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে হাতের মুঠোয় নিয়ে চলে এসেছে মোদি সরকার। এইসব প্রতিষ্ঠান মোদির নির্দেশ অনুযায়ীই চলছে।
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে গর্ব করা ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠা গোটা দেশের পক্ষেই লজ্জার। উদ্বেগেরও। এমন অভিযোগের পুরোটাই সারবত্তাহীন কি না তা বলতে পারবেন একমাত্র কমিশন কর্তারাই। এমন অভিযোগ ওঠার ক্ষেত্র যাতে সৃষ্টি না-হয় তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও কমিশনের।