সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
বাংলা নববর্ষের দিন দ্বিতীয় দফার ভোট প্রচারে নামেন তৃণমূল নেত্রী। ওই দিন তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা ও ভগবানগোলায় দু’টি নির্বাচনী জনসভা করেন। দু’টি সভাতেই জনতার উপস্থিতি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। বাজনা ও তাসা বাজিয়ে সভাস্থলে এসেছিল হাজার হাজার মানুষ। বুধবার তৃণমূল সুপ্রিমো কান্দি ও জঙ্গিপুরে আরও দু’টি সভা করেন। সেগুলিতে জনতার ভিড় যেমন উপচে পড়েছিল, তেমনই জনতার মধ্যেও ছিল ব্যাপক উচ্ছ্বাস। নেত্রীর বক্তব্যের প্রতিটি বাক্যের পরই করতালি আর হর্ষধ্বনিতে সরগরম হয়ে উঠেছিল গোটা এলাকা। আজ ফের মমতার সভা ঘিরে অধীর চৌধুরীর এক সময়ের দুর্গ বহরমপুরে জনস্রোত নামবে বলে তৃণমূলের দাবি।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর স্টেডিয়ামে হেলিপ্যাডের পাশেই সভাস্থল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। দলীয় ঝান্ডা ও নেত্রীর ছবিতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মঞ্চের সামনে ‘ডি’জোনে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপর একদিকে পুরুষ, আর একদিকে মহিলাদের বসার জায়গা করা হয়েছে। সভায় বহরমপুর শহর ও গ্রামীণ, হরিহরপাড়া, বেলডাঙা, নওদা, শক্তিপুর, মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ, নবগ্রাম প্রভৃতি এলাকা থেকে গ্রামবাসীরা আসবেন। এজন্য দলের ব্লক কমিটিগুলি প্রচুর ট্রেকার ও বাস জোগাড় করেছে। ওয়াইএমএ ময়দান সহ বিভিন্ন এলাকায় যাহবাহনগুলি পার্কিং করা হবে। এরজেরে শহরে যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা। তবে, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোতায়েন করা হবে সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিস।
তৃণমূলের বহরমপুর মহকুমা কমিটির সভাপতি অরিৎ মজুমদার বলেন, নোটবন্দির সময় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অসমের এনআরসির কথা শুনে বাসিন্দারা আতঙ্কিত। তাছাড়া, তাঁরা কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির অশুভ আঁতাতকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই মহকুমার বাসিন্দারা নেত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আশা করছি আজ, জনস্রোতে ভাসবে গোটা শহর। পাশাপাশি, অধীর হটাও বহরমপুর বাঁচাও স্লোগান উঠবে। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অশোক দাস বলেন, নেত্রীর দু’টি সভার পরই সিপিএম ও বিজেপির ‘দালাল’ অধীরবাবু দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। নেত্রীর বহরমপুরের সভার পর অধীরবাবুকে বাক্স গোটাতে হবে। কারণ, এরপরই শুরু হবে ‘সবুজ বিপ্লব’।
প্রসঙ্গত, ভাগীরথী বেষ্টিত ঐতিহ্যবাহী বহরমপুর শহর সংস্কৃতির শহর হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে এই শহরের রাশ নিজের হাতে রেখেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। ২০১১ কিংবা ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সৃষ্টি হওয়া তৃণমূলী ঝড় বহরমপুরের মাটিতে কার্যকরী হয়নি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর এই শহরে পালাবদলের হাওয়া ওঠে। ইতিমধ্যে তৃণমূল পুরসভা দখল করেছে। পঞ্চায়েত সমিতি ও অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে এসেছে। আর এই শহর বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে। ইতিমধ্যে এই কেন্দ্রের বেলডাঙা ও কান্দিতে দু’টি নির্বাচনী জনসভা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। আজ, তিনি বহরমপুরে আরও একটি সভা করবেন। একটি কেন্দ্রেই তৃণমূল সুপ্রিমোর তিনটি নির্বাচনী জনসভা করার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলেন, অধীরকে রাজনৈতিকভাবে ‘বধ’ করার উদ্দেশ্যেই এতটা তৎপর হয়ে উঠেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহফুজ আলম অবশ্য বলেন, ওরকম অনেক সভা দেখেছি। এখানে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূল কিছুই করতে পারবে না। আর বিজেপির সঙ্গে ঘর করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তা সকলেই জানেন। কাজেই, অধীরদার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে তৃণমূল কোনও সুবিধা করতে পারবে না। এখানে অধীরদার ভোট আরও বাড়বে।