সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
সেই ১৯৭২ সালে প্রথম জম্মু কাশ্মীর বিধানসভায় অন্তর্ভুক্তি ঘটেছিল মহিলাদের। সেবার ছ’জন মহিলা প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে চারজনই জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু, ৪৭ বছর পরও উপত্যকার রাজনীতির সেই প্রবণতা আজও বদলায়নি। যখনই উপত্যকায় লোকসভা অথবা বিধানসভার নির্বাচন হয়, প্রতিবারই পুরুষদের মধ্যে থেকে নিয়ম করে নতুন মুখ উঠে আসে। কিন্তু, সেই তুলনায় মহিলাদের অস্তিত্ব রাজনীতিতে কম হওয়ায় রাজ্যের নারীকেন্দ্রিক ইস্যুগুলি বিধানসভা অথবা সংসদে ব্রাত্যই থেকে যায়।
অনন্তনাগ কেন্দ্রে এবারের নির্দল প্রার্থী রিদওয়ানা সনমের ধারণা, বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মহিলাদের শুধুমাত্র গৃহস্থ কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, মহিলাদের সবসময়ই দুর্বল প্রার্থী হিসেবে দেখা হয়। তাই জনপ্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণ এত কম। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় জাত-পাতের বিধিনিষেধ ফিকে হয়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু, উপত্যকার রাজনীতিতে মহিলাদের সংখ্যা কম হওয়ার নেপথ্যে অন্যান্য বহু কারণ রয়েছে।’ এর জন্য তাঁদের পূর্বসূরি রাজ্যের প্রাক্তন ও বর্ষীয়ান মহিলা রাজনীতিবিদদেরও কাঠগড়ায় তুলেছেন রিদওয়ানা। তাঁর কথায়, ‘উপত্যকার মহিলা রাজনীতিকরা কখনওই অন্য মহিলাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ দেননি।’ নিজের সাফল্য নিয়ে আশাবাদী রিদওয়ানার সংযোজন, ‘সৎ উদ্দেশ্যের শক্তিতে বিশ্বাস রয়েছে আমার। মানুষ যদি আমার উদ্দেশ্যকে ভরসা করেন এবং ভোট দেন, তাহলে আমি তাঁদের সুবিচার, উন্নয়ন এবং শান্তির পরিবেশ নিশ্চিত করব।’
উধমপুর লোকসভা কেন্দ্রে শিবসেনার প্রার্থী মীনাক্ষী দাবি করেছেন, উপত্যকার রাজনীতিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ কম হওয়া নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তাঁর কথায়, ‘এটা রাজ্য রাজনীতির পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর কুফল। এর পাশাপাশি, মহিলাদের টিকিট দিতে রাজনৈতিক দলগুলির অনীহা, মহিলাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব এবং পরিবারের সমর্থন না পাওয়াটাও অনেকাংশে দায়ী।’ এবারের নির্বাচনে তাঁর শিঁকে ছিড়বে ধরে নিয়েই মীনাক্ষী বলেন, ‘আমি উপত্যকার হাজার-হাজার মহিলার কণ্ঠস্বরকেই তুলে ধরছি। তাঁদের সমস্যাগুলিকে প্রচারের আলোয়ে এনে সেগুলির সমাধান করাই আমার লক্ষ্য।’ নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বলতে গিয়ে শিবসেনা প্রার্থী বলেন, ‘মহিলাদের ক্ষমতায়ণের পাশাপাশি জম্মুকে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দিকে আলাদা নজর থাকবে আমার। এই অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের অপসারণ এবং জঙ্গি হামলায় সন্তান হারানো হতভাগ্য বাবা-মায়েদের সরকারি ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করব আমি।’
এদিকে, পিডিপি সুপ্রিমো তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবাই বর্তমানে রাজ্যের একমাত্র মহিলা যিনি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু, মেহবুবার সময়কালেও রাজ্যের মহিলাদের সেভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হতে দেখা যায়নি।