সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
ভগবানকে মাতৃভাবে আরাধনা হিন্দুধর্মের একটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। এই আরাধনার বিরামহীন ধারা চলে আসছে বৈদিক যুগ থেকে। এখানে বলা অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, বেদ এবং তন্ত্র উভয়কে নিয়েই ভারতীয় সংস্কৃতি। পরব্রহ্মের বৈদিকী আরাধনার সঙ্গে পরাশক্তির তান্ত্রিকী আরাধনার ধারাও সমান্তরালভাবে বয়ে আসছে পুণ্যভূমি এই ভারতবর্ষে। শক্তিসাধনার অপ্রতিহত এই ধারা বৈদিকযুগ থেকে প্রবাহিত হয়ে বিবর্তিত আকারে ক্রমে পৌরাণিক এবং তৎপরবর্তী যুগে আরও বিস্তার লাভ করে এবং ব্যাপকভাবে সাধনার অবলম্বনরূপে অগণিত মানুষকে পরাশক্তি মহামায়ার আরাধনায় উদ্বুদ্ধ করে এবং আজও করে আসছে। ভগবানকে মাতৃভাবে আরাধনা করে বহু সাধক যে এই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন ইতিহাসে তার দৃষ্টান্ত বিরল নয়। স্থান, কাল ও পাত্রভেদে সাধকের সাধনার বৈচিত্র্যে মহাশক্তি প্রকটিতা হয়েছেন বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন রূপে। বৈদিক যুগের ঋষিকন্যা ব্রহ্মবিদুষী বাক্ থেকে আরম্ভ করে পরবর্তী যুগসমূহের বিভিন্ন শক্তিসাধকদের জীবন-ইতিহাসই এই ধরার বিরামহীনতা এবং গতিশীলতা প্রমাণ করে। সাধক রামপ্রসাদ, কমলাকান্ত, বামাক্ষ্যাপা, শ্রীরামকৃষ্ণ প্রমুখ মাতৃসাধকদের জীবনে মাতৃশক্তির সঙ্গে সাধকের একাত্মতা এবং শক্তিরূপিণী মহামায়ার চৈতন্যময় ও আনন্দময় সত্তায় সাধকের আত্মলয়ের বিস্ময়কর সাধন-ইতিহাস আজও শক্তিসাধককে সমানভাবে আকর্ষণ করে, অনুপ্রাণিত করে সাধন-পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
বেদ-উপনিষদে বর্ণিত পরব্রহ্ম এবং তন্ত্রের পরাশক্তি স্বরূপত অভেদ, একই টাকার এপিঠ-ওপিঠ। শ্রীরামকৃষ্ণের কথায়: ‘‘ব্রহ্ম ও শক্তি অভেদ। অগ্নি আর তার দাহিকা শক্তি যেমন পৃথক নয়। শ্রীমৎ তোতাপুরীর নিকট পরাশক্তি জগন্মাতার অস্তিত্ব ছিল অলীক। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণের সাহচর্যে শ্রীমৎ তোতা বুঝতে পেরেছিলেন একভাবে মহামায়া যিনি তুরীয়া নির্গুণা, অপরদিকে তিনিই সাধকের প্রতি অনুগ্রহবশত নানামূর্তিতে বিভাসিতা। অনুভব করতে পেরেছিলেন: ‘‘এতদিন যাঁহাকে ব্রহ্ম বলিয়া উপাসনা করিয়া তোতা প্রাণের ভক্তি-ভালবাসা দিয়া আসিয়াছেন, সেই মা! শিব-শক্তি একাধারে হর-গৌরী মূর্তিতে অবস্থিত। ব্রহ্ম ও ব্রহ্মশক্তি অভেদ।’’
রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধির উপাখ্যান দিয়ে চণ্ডীর অবতারণা। রাজা সুরথ রাজোচিত সর্বগুণসম্পন্ন আদর্শ নৃপতি। কিন্তু একদা প্রবল বহিঃশত্রু দ্বারা তাঁর রাজ্য আক্রান্ত হলে দুর্ভাগ্যবশত যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন।
স্বামী প্রমেয়ানন্দের ‘পূজা-বিজ্ঞান’ থেকে