সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
সংবাদে প্রকাশ, কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং ভারত পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে—যদি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার আবার ক্ষমতায় আসে। বিদেশি কিছু সাংবাদিককে নিজের দেশে আমন্ত্রণ করে এনে এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য ইমরান খানের। শুধু তাই নয়, তিনি কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার বিপক্ষেও মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা কিংবা কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের রাস্তা খোঁজার মতো সাহস দেখাতে পারবে না তারা। ইমরান বলেছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলেও ভয় পাবে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিপ্রক্রিয়া বজায় রাখতে। বা যে কোনওরকম ব্যবস্থা নিতে। কারণ কংগ্রেস ভীত হবে দেশে ওই প্রক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া কী হবে সেটা নিয়ে। তাই ইমরানের অভিমত হল, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য মোদির দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসা জরুরি। ইমরানের এই ধরনের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও বিভিন্ন বিরোধী দল নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে আক্রমণ করতে দেরি করেনি। তাদের মতে, ইমরান খান ফাঁস করে দিলেন যে তাঁদের সঙ্গে আসলে বিজেপির গোপন জোট রয়েছে। কংগ্রেস বলেছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানিয়ে দিলেন যে, কে আসলে তাঁদের প্রকৃত বন্ধু। ইমরান খান বলছেন, তিনি মনেপ্রাণে চান মোদিজি প্রধানমন্ত্রী হোন। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, ইমরান স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন যে মোদিজি প্রধানমন্ত্রী হলে পাকিস্তানে আতসবাজি ফুটবে। পাকিস্তান মনেপ্রাণে চাইছে যাতে আবার বিজেপি ক্ষমতায় আসে।
কিন্তু, একটু গভীরে গিয়ে ভাবতে শুরু করলে দেখা যাবে ইমরান খান ডুবোজাহাজের মতো টর্পেডো ছুঁড়েছেন। কারণ, জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির কাছে দায়বদ্ধতার দরুন হয়তো তাদের নিকেশ করার ব্যাপারে ইমরানের তেমন কোনও উদ্যোগ দেখা যায় না। অথচ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিশ্বের তাবড় দেশগুলি ভারতের পাশে রয়েছে। এই অবস্থায় বহির্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার থেকে ঋণ না পেলে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া পাকিস্তানের কোমর ভেঙে পড়বে। তাই আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমদের কাছে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে তাঁর আগ্রহ ও উৎসাহ কতটা আন্তরিক সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন ইমরান। এটাও ঠিক যে, কাশ্মীর নিয়ে দীর্ঘদিন কোনও বৈঠক হয়নি। কারণ, ভারত জানিয়ে দিয়েছে যে, আগে সন্ত্রাস বন্ধ, তারপর আলোচনা। এমনকী ইমরান বিশ্বের কাছে নিজেকে এক সহনশীল নেতা হিসেবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন, যেখানে তাঁরই বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলে বেড়াচ্ছেন যে, ভারত ফের পাকিস্তানে আঘাত হানবে, এমনটাই অন্তত তাঁর কাছে চর মারফত খবর আছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের কট্টরপন্থীদের কাছে ভারতেও কট্টর পাক-বিরোধী দলের ক্ষমতায় থাকাটা সেদেশে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক। তাই কংগ্রেসের মতো ‘তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ’ দলের চেয়ে প্রবল পাকিস্তান বিরোধী বিজেপির শাসন তাদের ভারত-বিরোধিতার লাইনকে এগিয়ে রাখে। পাক নেতৃত্ব বিশ্বাস করে মহম্মদ আলি জিন্নাহর যে দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে দেশভাগ হয়েছিল, সেই মনোভাব যতদিন দু’দেশের মধ্যে জিইয়ে রাখা যাবে, ততদিন ধরেই আম পাকিস্তানি জনতাকে ভারত-বিরোধিতার নেশায় বুঁদ করে রাখা যাবে। কারণ তারা জীবনধারণের অত্যাবশ্যকীয় চাহিদাগুলি ভুলে থাকবে। এই কারণে জাতীয় নিরাপত্তার ধুয়ো তুলে যুগ যুগ ধরে দু’দেশের মধ্যে শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার কৌশল নিয়েছেন ইমরান। তাই বহির্বিশ্বের কাছে কাশ্মীর নিয়ে আন্তরিকতার মনোভাব ও নিজের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারত-বিরোধিতার অবস্থান কায়েম রাখতেই খানসাহেব এই মতপোষণ করে সকলকে এপ্রিল ফুল করার চেষ্টা করেছেন। যদিও তাঁর এই বোকা বানানোর কৌশল ধোপে টিকবে না, একথা হলফ করেই বলা যায়।