বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
বোলপুর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুরসভা পরিচালিত বেশ কয়েকটি পার্ক রয়েছে। বোলপুরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সুরশ্রীপল্লি লাগোয়া রেললাইনের ধার বরাবর রাস্তার দু’পাশে দু’টি পার্ক রয়েছে। বছরের বাকি সময়টা দিনের আলো ফুরিয়ে গেলেই বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্ক দু’টি। কিন্তু, দুর্গাপুজোর অবসরে প্রায় রাত ৮টা পর্যন্ত খুলে রাখা হচ্ছিল এই পার্ক দু’টি। প্রতিদিনই নিয়ম করে প্রচুর সংখ্যক শিশু ভিড় জমাচ্ছিল পার্কে। কিন্তু, সেই অতিরিক্ত সময় খুলে রাখাই বিপত্তি ডেকে আনল। গত সোমবার অর্থাৎ মহানবমীর দিন সন্ধ্যা ৭টার পর বেশ কয়েকজন শিশু সুরশ্রীপল্লির পার্কে খেলা করছিল। পার্কে আলো সরবরাহের জন্য বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। খেলা করার সময় বাচ্চারা খুঁটিগুলোকেও স্পর্শ করছিল। বোলপুরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে লাইন পাড়ের বাসিন্দা ক্ষুদিরাম মালের নাবালক ছেলে অর্জুন মাল খেলতে খেলতে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে স্পর্শ করে। তখনই সে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যায়। সে মাটিতে ছিটকে পড়ে। স্থানীয় লোকজন তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে বোলপুর প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পার্কের তদারকি ও পরিচর্যার জন্য পুরসভার একজন কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। কিন্তু, দুর্ঘটনার পর থেকে সেই ব্যক্তি নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন।
ওই নাবালকের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কের তদারকির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হওয়ার কথা জানালেও কোনও ভ্রুক্ষেপ করা হয়নি। তাঁদের দাবি, তার কিছুক্ষণ পরেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে পড়ে অর্জুন। মৃত নাবালকের পরিবার ঘটনার পিছনে সম্পূর্ণরূপে গাফিলতির কথা বলছে। যদিও মৃতের পরিবারের তরফে পুরসভা বা কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
অন্যদিকে, ঘটনার জেরে বোলপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে সমস্ত পার্ক রয়েছে, পুরসভার পক্ষ থেকে তা আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুর্গোৎসবের জন্য বেশ কয়েকদিন পুরসভা ছুটি রয়েছে। বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুশান্ত ভকত বোলপুরের বাইরে রয়েছেন। তাই তিনি ফিরে আসার পর পার্কের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার পর সেগুলি খুলে দেওয়া বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঘটনার জেরে সমগ্র বোলপুর শহরে একদিকে যেমন শোকের ছায়া নেমে এসেছে, তেমনি পুরসভার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, শিশুদের সঙ্গে জড়িত অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়গুলিতে পুরসভা কেন আলাদাভাবে নজর রাখেনি।
মৃতের বাবা ক্ষুদিরাম মাল বলেন, বিদ্যুতের খুঁটিতে গন্ডগোল হচ্ছে সেই বিষয়ে জানানো হলেও পার্কের তদারকিতে থাকা ব্যক্তি কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। যার মাশুল আমার ছেলেকে তার জীবন দিয়ে দিতে হয়েছে। আমি চাই, প্রশাসন সতর্ক হোক। যেন আর কোনও পরিবারকে এধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয়।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুরশ্রীপল্লির কাউন্সিলার শেলি রায়ের স্বামী অরূপ রায় বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমাদের দিক থেকে সবরকমভাবে পরিবারের পাশে রয়েছি। চেয়ারম্যান আসার পর এই বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।