বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
আনিসুর সাহেব অবশ্য বলেন, আমি খুনের রাজনীতি করি না। ঘটনার দিন আমি মুকুল রায়ের বাড়িতে ছিলাম। আমিও এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।
মঙ্গলবার তমলুক জেলা হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। নিহত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাসপাতালে যান মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শববাহী গাড়িতে চড়ে শুভেন্দুবাবু মাইসোরা গ্রামে নিহত নেতার বাড়িতে যান। বেলা দেড়টা নাগাদ নিহত নেতার দেহ মাইসোরা গ্রামে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে ছিলেন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের সভাপতি দিবাকর জানা, তমলুক পুরসভার কাউন্সিলার তথা শহর যুব তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া, পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্র প্রমুখ।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা কাঁথির সংসদ সদস্য শিশির অধিকারী এবং আরেক মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র মাইসোরা গ্রামে নিহত তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। শুভেন্দুবাবু ওই খুনের ঘটনার কড়া নিন্দা করে বলেন, খড়্গপুর এবং ঝাড়খণ্ড থেকে সুপারি কিলার ভাড়া করে কুরবানকে খুন করা হয়েছে। তিনি এলাকার জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। পুলিসকে ওই ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। লোকসভা ভোটের সময় কুরবানের বিরুদ্ধে থানায় এবং নির্বাচন কমিশনে অনেক অভিযোগ করেছিল বিজেপি। তাঁকে সরিয়ে দিয়ে এখন থেকে বিধানসভা ভোটের রাস্তা তৈরি করে রাখছে তারা। মৃতদেহ সাক্ষী রেখে বলছি, দোষীরা কড়া শাস্তি পাবে।
পুলিস সুপার বলেন, মোট ছ’জন দুষ্কৃতী বাইকে করে এসেছিল। দু’জন ভিতরে ঢুকেছিল। আর বাইরে চারজন দাঁড়িয়েছিল। পার্টি অফিসের ভিতরে দু’জন কুরবানকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আর বাইরে চারজন মানুষজনকে ভয় দেখানোর জন্য শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। মোট ১০ রাউন্ডের মতো গুলি চলেছে। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হবে।
স্থানীয় জানা গিয়েছে, ৭অক্টোবর রাত ১০টা নাগাদ মাইসোরা বাজারে পার্টি অফিসে বসেছিলেন কুরবান। আচমকা তিনটি বাইকে ছ’জন যুবক এসে বাইক থামায়। দু’জন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়ে। চারজন বাইরে দাঁড়িয়েছিল। সেই সময় পার্টি অফিসের ভিতরে কুরবানের পারিবারিক ধর্মীয় গুরু সহ চারজন ছিলেন। দুষ্কৃতীদের দেখে কুরবান চেয়ার থেকে নেমে টেবিলের তলায় ঢুকে যান। এক দুষ্কৃতী টেনে তাঁকে বের করে। আর একজন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বাঁ কানের নীচে এবং মাথায় পরপর গুলি করে। পার্টি অফিসের অন্যান্যরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র তাক করায় সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
গুলি চলার সময় উল্টোদিকে একটি ঘরে জহর শা সহ আরও কয়েকজন বসে তাস খেলছিলেন। তাঁরা দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুঁড়লে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা চার দুষ্কৃতী শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। কয়েক মিনিটের অপারেশন শেষ করে বাইকে চড়ে দুষ্কৃতীরা এলাকা থেকে চলে যায়। গুলিবিদ্ধ ওই নেতাকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কুরবান সাহেবরা মোট পাঁচ ভাই এবং পাঁচ বোন। কুরবার সকলের ছোট ছিলেন। চার-পাঁচ বছর আগে তাঁদের বাবা মারা যান। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকলে কুরবান সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করতেন। তাঁর চার বছরের একটি মেয়ে এবং দু’বছরের ছেলে আছে। কুরবান সাহেবের দাদা বলেন, আমরা খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্ত দাবি করছি। ভাইয়ের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।