আগামী মঙ্গলবার শুরু মাধ্যমিক
পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে ভালো
নম্বর পাওয়ার কিছু টিপস
আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে তোমাদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা— মাধ্যমিক। তাই আজ তোমাদের জন্য মার্কশিট বিভাগে রইল বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার টিপস। আলোচনা করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বাংলা
পরামর্শে বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষিকা সংহিতা চক্রবর্তী
আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনটিতেই অনায়াসে প্রচুর নম্বর জিতে নিয়ে বাকি পরীক্ষায় মনোবল বাড়িয়ে নিতে স্নেহের ছাত্রছাত্রীদের জন্য রইল শেষমুহূর্তের কয়েকটি পরামর্শ। পাঠ্যবই, সহায়কবই এবং ব্যাকরণবই খুঁটিয়ে পড়ার পাশাপাশি এগুলিও দেখো:
পাঠ্যাংশের বিশিষ্ট শব্দাবলির যথার্থ অর্থ ও প্রয়োগের প্রসঙ্গ সম্পর্কে নিশ্চিত হও। যেমন-- রথীন্দ্রর্ষভ, কর্বূরদল, মাঞ্জস, শমীবৃক্ষমূল, ছায়াবৃতা, নূতনের কেতন, হিমানীর বাঁধ, প্রদোষকাল ইত্যাদি।
কারক, বিভক্তি, উপপদ, সমাস, বহুব্রীহি ইত্যাদির আক্ষরিক অর্থ জেনে রেখো।
পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত ব্যাকরণের নিবিড়পাঠে বিষয়গুলি উদাহরণসহ আয়ত্তে রেখো। যেমন অনুসর্গের বিভিন্ন নাম ও প্রয়োগ, ব্যাসবাক্যসহ বিভিন্ন সমাস বিশ্লেষণ, বাক্যনির্মাণের শর্ত ও বাক্যের শ্রেণীবিভাজন, বাচ্যের বৈচিত্র্য ও বাচ্যান্তর ইত্যাদি।
নাট্যাংশ থেকে: সিরাজ, ঘসেটিবেগম,
মীরজাফর, লুৎফার চরিত্রের বিশিষ্টতা স্মরণীয়।
সহায়ক পাঠের থেকে : দারিদ্র্য, বঞ্চনা তথা কপটতার বিরুদ্ধে কোনির সংগ্রাম, ক্ষিতীশের প্রাণপণ সহযোগিতা এবং অবিরত কোনির আবেগে/ক্ষমতায় শান দেওয়া, লীলাবতীর আপাত ঔদাসীন্যে তাৎপর্যময় উপস্থিতির ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ আয়ত্তে রেখো।
ফেসবুক-হোয়াটস্অ্যাপ তথা মোবাইল ব্যবহারের সতর্কতা/উপযোগিতা,রক্তদান, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ,সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি,নির্মল বিদ্যালয় ও সর্বশিক্ষা অভিযান,কুসংস্কার প্রতিরোধ, কন্যাশ্রী প্রকল্প, খেলার দুনিয়ায় ভারত,পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্রসমাজ প্রভৃতি সাম্প্রতিক বিষয়াদির তথ্যসমৃদ্ধ বিশ্লেষণ প্রতিবেদন/সংলাপ/প্রবন্ধ রচনার জন্য আয়ত্তে রেখো।
কয়েকটি বিষয় মনে রেখো,
পরীক্ষায় লেখা শুরুর আগে পনেরো মিনিটের প্রশ্নবাছাই করার সময় নিজের সর্বাধিক সক্ষমতাকে গুরুত্ব দিও। সব থেকে ভালো তৈরি উত্তর আগে লেখো(অবশ্যই MCQ, SAQ -র পরে।)
প্রশ্নানুযায়ী উত্তর লেখার সময় পর্ষদনির্দিষ্ট শব্দসংখ্যার মান্যতারক্ষা বাঞ্ছনীয়।পরিচ্ছন্ন ও নির্ভুল বানানে লেখা যথাযথ, সংহত উত্তর তোমাদের সাফল্য এনে দেবেই।
ইংরেজি
পরামর্শে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় (উচ্চ মাধ্যমিক)-এর ইংরেজির শিক্ষক উৎপল ভৌমিক
Seen এবং Unseen-এ Passage-গুলো খুব যত্ন নিয়ে পড়বে। পেনসিল ধরে ধরে পড়বে। MCQ-এর সঠিক Answer select করে একবার Check করে নাও। Complete the Sentences-এ প্রথম অংশটি বুঝে নিয়ে বাকি অংশটি Passage থেকে select করো। বাক্যগঠন লক্ষ রাখো। Full stop (.) দেওয়ার পর আর লিখবে না।
True or False-এর ক্ষেত্রে প্রশ্নে দেওয়া Sentence-গুলো বুঝে নেবে প্রথমে। Supporting Sentence-এ বাক্যে কোনও রূপ পরিবর্তন করবে না। Chart-type প্রশ্নে Cause-Effect, Statement-Reason ভালো করে চিন্তাভাবনা করে লিখবে। Answer the questions-এ প্রশ্নটি বুঝবে ভালো করে আর কোন tense-এ Questionটি আছে তা বুঝে সঠিক উত্তর লিখবে। যেমন What did Swami fail to decide about Samuel? Answer-এ লিখবে Swami failed to decide... এভাবে। Questionটি Simple past-এ ছিল। Answerও Simple past এ লিখবে।
Section-B-তে Unseen passage থেকে important 4টে শব্দ নিয়ে তাদের meaning দেওয়া থাকে। এই meaning-গুলো ভালো করে বুঝলেই Word-গুলো Select করতে পারবে। এছাড়াও অজানা শব্দ আগে পরের line-গুলোর অর্থ অনুযায়ী সঠিকভাবে অনুমান করা যায়। Grammar-এর উত্তর লেখার সময় Tense-এর জ্ঞান সবচেয়ে আবশ্যক। প্রতিটি Sentence মাতৃভাষায় মনে মনে অনুবাদ করে নিলে Tense এবং Verb-এর form নির্ধারণে কখনও ভুল হবে না। Phrasal Verb-এর ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা কাজে লাগবে। Voice, Narration বা Transformation rule মেনে করবে। Article ও Preposition সঠিক বসাবে।
Section-C-তে প্রতিটি Writing-এর প্রত্যেক Points-এর জন্য আলাদা বাক্য গঠন করবে। Paragraph-এ অবশ্যই Introduction ও Conclusion দেবে। প্রতিটি Writing-এ সঠিক form থাকতেই হবে। Sentence-এর Structure বা Verb-এর form-এ ভুল হলে সেই Point-এ কোনও নম্বর পাবে না। লেখা শেষে Fresh হয়ে খাতা খুব ভালো করে Check করবে। সব কিছু Pencil-এ লিখে Pen দিয়ে পরে লিখবে। তাহলে অনেক সুবিধে হবে। Spelling এর rules (put + ing=putting come+ing=coming, carry+es=carries, quarrel+ed=quarrelled) মনে রেখো। verb-এর শেষে consonant ও তার পূর্বে একটি vowel থাকলে ed বা ing যোগের সময় consonant টি double হয়। এছাড়া Auxiliary verb (be, have, do) আর subject Doer কি না (active না passive voice) লক্ষ রেখে লিখবে। খুব শান্ত মাথায় প্রশ্নপত্র পড়বে। বিশেষত Writing Skill-এর topicগুলো ভালো করে বুঝে নাও লেখার আগে। তাহলেই পরীক্ষা ভালো হবে।
ইতিহাস
পরামর্শে সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক সঞ্জয় পাল
ইতিহাসের ক্ষেত্রে যেগুলি মাথায় রাখলে ভালো হয়, সেগুলি হল—
হাতের লেখা সবসময় পাঠযোগ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়।
সঠিক দাগ নম্বর লেখা অত্যন্ত জরুরি।
প্রশ্নে যতটুকু চাওয়া হচ্ছে ততটুকুই লেখো অর্থাৎ ‘To the point’ answer দাও।
সাল-তারিখ যথাযথ লেখো—যেখানে সাল-তারিখ চাওয়া হচ্ছে না সেখানে অযথা লেখার দরকার নেই।
একটা প্রশ্নের উত্তর শেষ হলে একটা মার্জিন দাও অথবা একটু গ্যাপ দিয়ে পরের উত্তর লেখো।
পৃষ্ঠার একদম শেষ পর্যন্ত না লিখে ১ ইঞ্চির মতো ফাঁকা রাখো।
যে প্রশ্নের উত্তর ভালো হবে মনে করছ সেগুলি আগে লেখো, যেটা ভেবে লিখতে হবে সেটা পরে লেখো।
লেখার সময় খেয়াল রাখো কী লিখছ—তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ভুল শুধরে নেওয়া যাবে, শেষে পুনরায় পড়ার সময় নাও পেতে পারো।
সময়ের আগে শেষ করার জন্য প্রশ্নের মান অনুযায়ী সময় বিভাজন করে লেখো।
ওয়ারনিং ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত পৃষ্ঠাগুলি নম্বর অনুযায়ী গুছিয়ে নিয়ে খাতা বেঁধে ফেলো।
যা পড়েছ তার সঙ্গে এগুলি এক ঝলক দেখে রেখো—
শিক্ষা বিস্তারে রামমোহন রায়/ বিদ্যাসাগর/ খ্রিস্টান মিশনারিদের অবদান।
নীল বিদ্রোহ/ কোল বিদ্রোহ/ মুন্ডা বিদ্রোহ।
একা আন্দোলন/ বারদৌলি সত্যাগ্রহ/ নমঃশূদ্র আন্দোলন।
IACS/ বসুবিজ্ঞান মন্দির/ দেশীয় রাজ্য পুনর্গঠনে বল্লভভাই প্যাটেলের অবদান ইত্যাদি।
ভূগোল
পরামর্শে হেয়ার স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক
কিংশুক মণ্ডল
সর্বপ্রথম হাতের লেখা ও আঁকা পরিষ্কার করতে হবে। আঁকার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে চিহ্নিতকরণ করতে হবে। যতটা সম্ভব বানান ভুল না হওয়ার দিকে সতর্ক হতে হবে। উত্তরপত্রে কোনওভাবে লাল ও সবুজ কালি ব্যবহার করবে না। পেন পরিবর্তন করতে ইনভিজিলেটর বা তত্ত্বাবধায়কের অনুমতি খাতায় নিয়ে নেবে।
উত্তরপত্রের প্রশ্নের প্রদত্ত ক্রমিক নম্বরগুলি নির্দিষ্টক্রমে সাজিয়ে লিখতে হবে। একটি উত্তর শেষের পর খাতায় আড়াআড়িভাবে লাইন টানলে ভালো হয়। কোনও প্রশ্নের উত্তর মনে না পড়লে সেই উত্তরের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা ফাঁকা রেখে অন্য উত্তর লিখতে শুরু করতে হবে। সময় নষ্ট করা যাবে না।
প্রথমে অবজেকটিভ ও অন্যান্য প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়তে হবে। তারপর কোন প্রশ্নগুলি করবে প্রশ্নপত্রে প্রথমে চিহ্নিত করে নেবে। নির্দিষ্ট সংখ্যার প্রশ্নের পরিবর্তে অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর করলে ক্ষতি নেই। কিন্তু সময় বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে সঠিক উত্তর বা বেশি নম্বরের উত্তরটিই নেওয়া হয়।
২ নম্বর প্রশ্নের ক্ষেত্রে উদাহরণ থাকলে দিতে হবে কিন্তু আঁকার প্রয়োজন নেই। ৩ ও ৫ নম্বর প্রশ্নের ক্ষেত্রে আঁকা থাকলে দিতে হবে। এর জন্য নম্বর নির্দিষ্ট থাকে। শিল্পের কেন্দ্রীভবন, বণ্টন ও কৃষির বণ্টনের ক্ষেত্রে মানচিত্র অঙ্কন আবশ্যিক।
২, ৩ এবং ৫ নম্বরের ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া থাকলে তার থেকে বেশি লেখার প্রয়োজন নেই। কিন্তু নির্দিষ্ট করা না থাকলে কমপক্ষে যথাক্রমে ২, ৩ ও ৫টি বৈশিষ্ট্য বা পার্থক্য দিলেই হবে। তবে সেগুলি নির্ভুল হওয়া দরকার আর যদি সন্দেহ থাকে তাহলে বেশি লিখতে পারো।
মানচিত্র করার ক্ষেত্রে চিহ্ন/প্রতীক ও নাম অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। মানচিত্রের মধ্যে শুধুমাত্র চিহ্ন বা প্রতীক ব্যবহার করে মানচিত্রের ফাঁকা অংশে নির্দেশিকা তৈরি করে সেখানে চিহ্ন/প্রতীক সহ নাম উল্লেখ করতে হবে। যেমন ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে আহমেদাবাদ স্থানটি চিহ্নের সাহায্যে দেখিয়ে নির্দেশিকায় ওই চিহ্ন দিয়ে লিখতে হবে ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার আহমেদাবাদ। অন্যথায় শুধুমাত্র চিহ্ন ও ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার সঠিক দেখালেও নম্বরের বেশি পাবে না।
আঁকা ও মানচিত্রে পেনসিল রং ব্যবহার করতে পারো। এছাড়াও প্রশ্ন নম্বর লেখায় কোনও কিছু বাদ বা ভুল থাকলে তা মিলিয়ে নেওয়ার জন্য পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৫/১০ মিনিট সময় হাতে রাখতে হবে। এ জন্য ঘড়ির সময় ধরে লিখতে হবে।
অঙ্ক
পরামর্শে বহুমুখী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের (আলিপুর) অঙ্কের শিক্ষিকা সঙ্গীতা বসু মৈত্র
প্রথমেই প্রশ্নপত্র বারতিনেক পড়ে সহজ অঙ্ক দিয়ে পরীক্ষা শুরু করা উচিত।
প্রতি প্রশ্নের দাগ নম্বর দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
M.C.Q বা ১ নম্বরের Objective প্রশ্নের উত্তরে অঙ্ক কষে দেখানো বাধ্যতামূলক নয় কিন্তু ২ নম্বরের Obj. প্রশ্নে অঙ্ক কষে দেখাতে হবে।
প্রথম প্রশ্ন থেকে শুরু করে পরপর উত্তর দিলে ভালো হয় কিন্তু এটি বাধ্যতামূলক নয়। সঠিক দাগ নম্বর দিয়ে যে কোনও প্রশ্নের উত্তর আগে দেওয়া যায়।
প্রয়োজনীয় ‘রাফ’ Calculation, উপরে ‘রাফ’ লিখে, উত্তরপত্রের ডান দিকে মার্জিন টেনে বা খাতার পিছনে করা যায়। পেন্সিল দিয়ে করে ‘রাফ’ অংশের Calculation মুছে দেওয়া বা কেটে দেওয়া ঠিক নয়।
‘=’ চিহ্ন বা ‘Or’ লিখতে ক্রমাগত ভুল হলে এবং ভুল একক লেখার জন্য বা একক না লেখার জন্য নম্বর কাটা যাবে।
উপপাদ্য এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে চিত্র পেন্সিলে আঁকতে হবে। চিত্র না আঁকলে/ ভুল চিত্র আঁকলে/ চিহ্নিতকরণ ভুল হলে কোনও নম্বর পাওয়া যায় না।
সম্পাদ্যের চিত্র পরিচ্ছন্ন এবং চিহ্নিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
পাটিগণিত, পরিমিতি, Statistics-এর অঙ্কে সূত্র লিখে প্রতীক উল্লেখ করলে ভালো হয়।
ত্রিকোণমিতির উচ্চতা ও দূরত্বের অঙ্কে ছবি এঁকে উন্নতি/ অবনতি কোণ দেখাতে হবে। ছবি ভুল হলে কোনও নম্বর পাওয়া যায় না।
যেহেতু partmarking থাকে তাই কোনও অঙ্ক আংশিক করা সম্ভব হলেও তা করা উচিত।
Overwriting কখনও নয়। ভুল হলে সংখ্যা কেটে পরিষ্কার করে লেখা উচিত।
দুটি অঙ্কের মাঝে যথেষ্ট জায়গা রাখা এবং খাতায় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।
বৃত্ত সম্পর্কিত, বৃত্তস্থ কোণ এবং বৃত্তস্থ চতুর্ভুজ সংক্রান্ত উপপাদ্য এ বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সম্পাদ্যের ক্ষেত্রে মধ্যসমানুপাতী নির্ণয় এবং পরিবৃত্ত অঙ্কন তৈরি রাখা দরকার।
জীবনবিজ্ঞান
পরামর্শে বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক অরণ্যজিৎ সামন্ত
উত্তরপত্র পরিচ্ছন্ন রাখবে। প্রশ্নপত্রে প্রশ্নের ক্রম বজায় রেখে উত্তর পরপর করতে পারলে সবচাইতে ভালো হয়। কোনও একটি প্রশ্নের মধ্যে থাকা অংশ-প্রশ্নগুলির উত্তর যেন খাতার নানা জায়গায় ছড়িয়ে না করা হয়। তারা যেন একজায়গায় পরপর থাকে।
বাংলা ভার্সান’র প্রশ্নের মানে বুঝতে অসুবিধা হলে অনেকে ইংরেজি ভার্সানের প্রশ্নে চোখ বুলিয়ে দেখে নেয় ঠিক কী জানতে চাওয়া হয়েছে, এই অভ্যাস কিন্তু ভালো। ইংরেজি ভার্সন’র বেলায় এর উল্টোটাও হতে পারে।
টীকা, পার্থক্য, তাৎপর্য, গুরুত্ব ও স্তম্ভমিল জাতীয় প্রশ্নের উত্তর প্রশ্নানুযায়ী বিশেষ যত্ন নিয়ে দিতে হবে। বর্ণনামূলক উত্তরের বেলায় যতটা সম্ভব ‘পয়েন্ট-ওয়াইজ’ উত্তর লিখতে পারলে ভালো হয়।
ছবি’র প্রশ্নে পরিচ্ছন্ন ‘ডায়াগ্রাম’ দরকার। তাকে দেখতে সুন্দর করবার দরকার নেই। শুধু মাথায় যেন থাকে , যে ডায়াগ্রামটি সায়েন্টিফিক হচ্ছে কি না।
এবার উত্তরপত্রের বাইরের আর দু’ একটি কথা বলব। মাধ্যমিক যেহেতু স্কুলজীবনের সবচাইতে বড় পরীক্ষা আর স্কুলের বাইরে গিয়ে অচেনা পরিবেশে সেটা দিতে হয়, সেটা নিয়ে বাড়তি চাপ থাকবেই। পরামর্শ হল, একেবারে চাপ নিও না। চাপমুক্ত থাকো। টেনশনের কিছু নেই। বাড়ির বড়দেরও বলো তোমরা বড় হয়ে গিয়েছ। তোমাদের ভালো মন্দ তোমরা বুঝে নিতে পারবে, তাঁরা যেন বেশি চিন্তা না করেন। আর পরীক্ষা দিতে বসে, মনে রাখবে কেউ তোমার বন্ধু নয়, কেউ শত্রুও নয়। কাজেই কোনও পরামর্শ, অন্তত পরীক্ষার সময়, দেওয়া বা নেওয়ার দরকার নেই। পরীক্ষা হলের শান্ত পরিবেশটা কাজে লাগিয়ে খুব ভালো করে উত্তর লিখতে হবে, সেটাই তোমার একমাত্র কাজ। তোমাদের সবার পরীক্ষা খুব ভালো হবে, জানি।
ভৌতবিজ্ঞান
পরামর্শে হিন্দু স্কুলের ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক দীপক ঘোষ
বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস ও স্তরগুলির কাজ, সৌরকোষ এবং বিকল্প জ্বালানি।
বয়েলের সূত্র, অ্যাভোগাড্রো প্রকল্প ও তার গাণিতিক প্রশ্ন। আদর্শ ও বাস্তব গ্যাসের পার্থক্য এবং সার্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক-এর মান ও একক।
শুদ্ধতার শতাংশ হার নির্ণয়ের গাণিতিক প্রশ্ন, ভর—ভর গাণিতিক সমস্যা।
এরপর পদার্থবিদ্যার অংশ—বইয়ের চার থেকে সাত নম্বর অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
a, b ও g-এর সম্পর্ক, তাপ পরিবহণ সংক্রান্ত ব্যাখ্যামূলক সমস্যা, আয়তন প্রসারণ গুণাঙ্কের একক।
বক্রতা ব্যাসার্ধ ও ফোকাস দৈর্ঘ্যের সম্পর্ক, অবতল দর্শনের ব্যবহার, আলোক বিচ্ছুরণ, প্রিজমের কোণ ও আপাতন কোণের সম্পর্ক এবং চোখের দৃষ্টি সমস্যার প্রতিকার ও পরিপূরক বর্ণ, চিহ্নিত চিত্র দিতে হবে প্রয়োজন মতো।
ওহমের সূত্র, রোধাঙ্ক এবং এই সংক্রান্ত গাণিতিক প্রশ্ন, ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়ম, গৃহস্থালি বর্তনীর উপাদান, তড়িৎ ক্ষমতার একক, LED এবং CFL বাতি।
নিউক্লীয় বিজ্ঞান, তেজস্ক্রিয়তার একক ও ব্যবহার। a, b ও g রশ্মির আধানের তুলনা। সব শেষে রসায়ন অংশে আট থেকে তেরো নম্বর অধ্যায়—
পরমাণুর ব্যাসার্ধ ও তড়িৎ ঋণাত্মকতার ক্রমে তুলনা, প্রচলিত শ্রেণীগত নাম, ল্যানথানাইড ও অ্যাক্টিনাইড, সন্ধিগত মৌলের বৈশিষ্ট্য।
আয়নীয় ও সমযোজী যৌগের পার্থক্য, সংকেত ভর এবং লুইস ডট গঠন।
ধাতব পরিবাহী, তড়িৎ অবিশ্লেষ্য ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ ও এগুলির উদাহরণ। তড়িৎ বিশ্লেষণে জারণ-বিজারণ ক্রিয়া এবং তড়িৎ লেপন।
H2S-এর পরীক্ষাগার প্রস্তুতি ও বিজারণ ধর্ম, নাইট্রোলিম, স্পর্শ পদ্ধতিতে H2SO4 প্রস্তুতি।
এই অংশ শমিত সমীকরণ বিশেষ প্রয়োজন, বর্ণ, গন্ধ, গ্যাস নির্বাসন ও অধঃক্ষেপণ উল্লেখ করাও দরকার।
থার্মিট পদ্ধতি, Zn, Cu ও Al-এর আকরিক, খনিজ ও আকরিকের পার্থক্য। মরিচাজনিত ক্ষয় রোধের উপায়।
IUPAC নাম, ইথিলিনের বিক্রিয়া, জৈব ভঙ্গুর পলিমার, রেক্টিফায়েড ও ডিনেচার্ড স্পিরিট এবং সমবায়বতার উদাহরণ।
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
10th February, 2019