বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
মাধ্যমিক ২০১৯-এ জীবন বিজ্ঞান বিষয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতির দুচার কথা নিয়ে এই আলোচনা শুরু করা যায়। প্রস্তুতির প্রথম পর্যায় সম্পূর্ণ, কারণ নির্বাচনী পরীক্ষা শেষ। সেখানে সিলেবাস আগাগোড়া পড়ে ফেলা হয়েছে একবার। এবার প্রস্তুতি ফাইনাল ম্যাচের। তবে এই আলোচনায় আমরা আজ জীবন বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের প্রথম ইউনিট, ‘জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়’ নিয়ে কিছু কথা বলে নিতে চাই।
এখানে ‘সমন্বয়’ মানে, যে পরিবেশে জীব (উদ্ভিদ ও প্রাণী) থাকে সেখানে তাকে পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়। সেটাই সমন্বয়। আর ‘নিয়ন্ত্রণ’ মানে সেই ‘সমন্বয়’ কীভাবে সে রক্ষা করে তার আলোচনা। আমরা দেখেছি, সমন্বয়ের মধ্যে বলা হয়েছে জীবের নড়াচড়া মানে ‘চলন’ ও হাঁটাচলা মানে ‘গমন’ কী কী ভাবে ঘটে। আর সেসব কাজ করতে গিয়ে তার প্রয়োজন হরমোন, স্নায়ুতন্ত্র। অর্থাৎ, যদি ধরে নিই, রাস্তায় বেরিয়ে আমি ভয় পেয়ে যেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গেলাম, সেটা একটা ‘সমন্বয়মূলক’ কাজ হল ঠিকই, তবে সেখানে আমার শরীরকে পরিবেশের উপযোগী করে তুলতে কাজে লাগল স্নায়ুতন্ত্র ও হরমোন। ভয় পাওয়া, দৌড় লাগানো, নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা এর প্রতিটি ধাপ খুব জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এই জটিল ব্যাপারগুলি মুহূর্তে ঘটে স্নায়ুতন্ত্র ও হরমোনের কাজে। এই ধারণাটিকে ছবির মতো মনে সাজিয়ে নেওয়াটাই প্রকৃত ‘শেখা’। অনুষঙ্গের বিষয়গুলি তার ওপর পরপর সাজিয়ে নিলেই ‘পড়া’ তৈরি হয়ে যাবে। তার মধ্যে নীচের বিষয়গুলি বিশেষ নজর করা যেতে পারে। যেমন—
• উদ্ভিদের চলন ও গমনের প্রকারভেদ ও উদাহরণ।
• প্রধান উদ্ভিদ হরমোনের নাম, গঠন প্রকৃতি, ক্ষরণস্থান ও কাজ।
• প্রাণী হরমোনের ক্ষরণ-গ্রন্থির নাম, হরমোনের নাম, কাজ, অভাব ও আধিক্যজনিত ফল।
• নিউরনের গঠন (ছবিসহ), স্নায়ুর গঠন, চোখের গঠন (ছবিসহ), স্নায়ুর প্রকারভেদ স্নায়ুতন্ত্রের গঠন।
• প্রাণী গমনে ক্ষণপদ, সিলিয়া, ফ্ল্যাজেলার ব্যবহার। জলে মাছ, আকাশে পায়রা, মাটিতে মানুষের গমন কৌশল।
তবে ‘জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়’ একটি বিস্তৃত অধ্যায়। প্রশ্নপত্রে এক ও দুই নম্বরের প্রশ্নের জন্য থাকে মোট ষাট নম্বর। ফলে এখানে অনেক বিষয় আছে যেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে। কাজেই, ইংরেজিতে যাকে বলে, ‘বিটুইন দ্য লাইনস’ পড়া, সেভাবেই আমাদের খুঁটিয়ে পড়ে রাখতে হবে এবং কত নম্বরের জন্য কতটা লিখব, সেই ধারণাও স্পষ্ট করে রাখা চাই।
এটা গেল একরকম কাজ। দ্বিতীয় কাজটি হল লেখার অভ্যাস। শুধু ভাবলে চলবে না। ভাবনা যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে তার প্রকাশের অনুশীলন। নানা ধরনের প্রশ্ন ও উত্তর লিখে লিখে অভ্যাস করা খুব দরকারি কাজ। তবে এখানে একটি কথা বিশেষ করে বলব। সেটি হল যত্ন। যত্নের অভ্যাস আনতে হবে আমাদের কাজে। ভালো উত্তরপত্রে নির্ভুল উত্তরের সঙ্গে পাওয়া যায় পরিপাটি পরিচ্ছন্নতা। উত্তর অনেকেই ঠিক লেখে, পরিচ্ছন্নতার বোধ সবার সমান হয় না। সেখানেই পার্থক্য তৈরি হয়ে যায়। কীভাবে আসে এই পরিচ্ছন্নতা ?
স্পষ্ট হাতের লেখা, প্রশ্নপত্রের ক্রম অনুসারে পরপর উত্তর সাজিয়ে লেখার অভ্যাস, অযথা খাতায় বিশ্রীভাবে কাটাকুটি না করা, স্তম্ভ মেলানো প্রশ্নের উত্তরে পাশাপাশি উত্তর সাজানোর অভ্যাস, প্রশ্নের নির্দেশ যথাযথ অনুসরণ করা, চেষ্টা করলে সবেতেই পরিচ্ছন্নতা ও নিজস্বতা আনা যায়। বিষয়গুলি তুচ্ছ মনে হলেও যিনি তোমার খাতা মূল্যায়ন করছেন, তাঁর কাছে তোমার যত্নের মূল্য অনেকখানি।