উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
বন্ধুত্বের ২১ যাপন
টেলি দুনিয়ার বিখ্যাত জুটি সোনালি আর ভাস্বর। শুধু স্ক্রিনেই নয়, বাস্তব জীবনেও তাঁরা খুব বন্ধু। ভাস্বর বললেন, আর হবে নাই বা কেন? ১৯৯৮ সালে ‘কনকাঞ্জলি’ মেগা ধারাবাহিকের প্রথম শট দেওয়ার সময় আলাপ সোনালির সঙ্গে। খুব ভালো মেয়ে সোনালি। মজাদার আড্ডাবাজ হেল্পফুলও। আসলে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কে কখনও কোনও স্বার্থ আসেনি বলেই...। ভাস্বরের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সোনালি বললেন, একদম ঠিক বলেছে ভাস্বর। স্বার্থই সম্পর্ক নষ্ট করে। স্বার্থের বন্ধুত্ব এক’দু বছরের বেশি টেঁকে না। আমাদের দু’জনের বন্ধুত্বের একুশ বছরটা আজ বর্তমান চতুষ্পর্ণীর সঙ্গেই সেলিব্রেট করছি আমরা।
জি বাংলায় টানা দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে একের পর এক মেগা ধারাবাহিকে হিরো-হিরোইনের রোল করে গিয়েছেন ভাস্বর-সোনালি। খেলা, অসম্ভব, কী আশায় বাঁধি খেলাঘর, অগ্নিপরীক্ষা ইত্যাদি ধারাবাহিকে একের পর এক জুটি বেঁধেছেন। প্রায় প্রতিটি মেগাই হাজার এপিসোড পার করেছে। এছাড়াও প্রচুর টেলিফিল্মেও তাঁরা নায়ক-নায়িকার ভূমিকায় কাজ করেছেন। ‘আমার পৃথিবী’ ছবিতেও তাঁদের জুটিকে দেখেছেন দর্শক। এই মুহূর্তে স্টার জলসায় ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’ ধারাবাহিকে আবার জুটি বেঁধেছেন ভাস্বর-সোনালি।
সোনালি বললেন, দু’জনের পরিবারই জানে আমাদের এই অমলিন বন্ধুত্বের কথা। আমরা সময় সুযোগ পেলেই আড্ডা মারি। ভাস্বরের কাছে ইন্ডাস্ট্রির হাঁড়ির খবর থাকে। ওকে খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করি। পিএনপিসি করতে কার না ভালো লাগে? ভাস্বর মিষ্টি হেসে বললেন, গসিপ বলার মধ্যেও কিন্তু একটা মজা থাকে। তাই সোনালি শুনতে চাইলেই মনের আনন্দে বলতে থাকি।
এমন মজায় আনন্দে কাটুক দু’জনের বন্ধুত্বের সফর— এই কামনা রইল।
নববর্ষের সকালের সাজ
‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো... গুনগুন করতে করতে সোনালি ঢুকলেন আমাদের স্টুডিওর সাজঘরে। সাদা খাদি কটনের পাঞ্জাবিটা দেখেই হই হই করে উঠলেন ‘দ্যাখ ভাস্বর তোর জন্য এক্কেবারে নববর্ষ স্পেশাল ক্যাজুয়াল এনেছেন দিদি।’ ভাস্বর নিজের পাঞ্জাবির দিকে নজর বুলিয়ে হাত বাড়াল হলুদরঙা কটন হ্যান্ডলুমটির দিকে। ‘আর তোর জন্য দিদি আনেননি বুঝি! এই প্রজাপতি ওড়ানো হলুদ শাড়িটা তো তোর নববর্ষের সকালের সাজের জন্য এসেছে।’ দু’জনের খুনসুটির মাঝে এগিয়ে চলল ফটোশ্যুট।
সোনালির কটন হ্যান্ডলুমটি দেখতে বেশ অন্যরকম। চিকনের কারুকাজে সারা জমিতে নীল প্রজাপতির ওড়াউড়ি। শাড়িটি ‘ডালিয়া ফ্যাশন’ বুটিক থেকে নেওয়া। ডিজাইনার অরিত্র দত্ত জানালেন, এটাই তাঁর এবারের নববর্ষ স্পেশাল। শুধু প্রজাপতিই নয়, ফুল, পাতা, কলকা, শঙ্খ এমন নানা মোটিফে সাজানো হয়েছে চিকনকারি হ্যান্ডলুমকে। এছাড়া হ্যান্ডলুমে নতুন ধরনের উইভিংয়ে কিছু শাড়ি করানো হয়েছে। কটন রেশম ঢাকাইতেও নতুনত্ব আনা হয়েছে। জিওমেট্রিক বুটি, অরনামেন্টাল পাড় আঁচলের রেশম ঢাকাইটি বেশ সুন্দর।
ভাস্বরের পাঞ্জাবিটি দক্ষিণাপণের ‘রাই’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার সোমা জানালেন, নববর্ষ হোক বা বাংলার কোনও বিশেষ উৎসব, ছেলেরা চান ক্যাজুয়াল অথচ ট্র্যাডিশনাল পোশাক। পাঞ্জাবি এমনই একটা পোশাক যা ট্র্যাডিশনাল লুক চাইলে আলিগড়ি বা ধুতির সঙ্গে টিম আপ করা যায়। আবার ক্যাজুয়াল লুক চাইলে জিনসের সঙ্গে চাপিয়ে নিলেই হল। ‘রাই’ বুটিকে অবশ্য ক্যাজুয়াল পাঞ্জাবির সম্ভারই বেশি।
নববর্ষের সন্ধের সাজ
নতুন বছরের সূর্য সদ্য অস্ত গিয়েছে। আকাশ তখনও কুসুম রঙে রঞ্জিত। উত্তাপ ছাপিয়ে বিকেলের বৈশাখী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এমন রোমান্টিক মুহূর্তে দু’জনে গোধূলির লালিমায় সজ্জিত হতে প্রাণ চায়। তাই ভাস্বর ও সোনালি হাত বাড়িয়েছেন কমলার দিকে। আমাদের নববর্ষের সম্ভার থেকে সোনালির জন্য কমলা রঙের র-সিল্কটি বেছে দিলেন ভাস্বর। আর ভাস্বরের ধুতি-পাঞ্জাবি যে সোনালি বেছে দিয়েছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দু’জনে রং মিলান্তি সাজে সেজে উঠতে পেরে ভারী খুশি।
সোনালির শাড়িটি অন্ধ্রের কোরা র-সিল্ক। অন্ধ্রের কাঁকিনাড়া অঞ্চলের তাঁতশিল্পীরা এই শাড়ি বোনেন বলে জানা গেল। বেশিরভাগ শাড়িরই আঁচলটা রেশম ও জরির জমকালো কাজ করা। জমিতে বড় বুটি আর প্রতিটি শাড়ির পাড়ে অভিনবত্ব রয়েছে। কোনওটা চেক, কোনওটা স্ট্রাইপ, কোনওটা আবার প্লেন ভেলভেট টাইপ। নববর্ষের সন্ধেবেলা এমন একটা শাড়ি পরে চলে যেতে পারেন বিশেষ কোনও অনুষ্ঠানে। শাড়িটি ‘বেনারসি টেক্সটোরিয়াম’ থেকে নেওয়া। এখানে এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের দক্ষিণ ভারতের সিল্ক শাড়ি পাবেন। জরি ও রেশম সুতোর জমজমাট কারুকাজ করা আঁচলের পিওর কাঞ্চিপুরম সিল্ক, জরির তেরছা স্ট্রাইপে তৈরি সিল্ক ওপারা, প্রিন্টেড মাইশোর সিল্ক উল্লেখযোগ্য।
নববর্ষের সন্ধেবেলা বাঙালিবাবুর সাজে সাজতে কার না মন চায়? ভাস্বরের জন্য সোনালি যে ধুতি-পাঞ্জাবি সেটটা বেছে দিয়েছে সেটি ‘শ্রীগোপাল পাঞ্জাবি মহল’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার তপন দাস জানালেন, এবার ছেলেরা লাল, কমলা, ম্যাজেন্টা, গোল্ডেন ইয়েলো ইত্যাদি ব্রাইট রঙের পাঞ্জাবির দিকে বেশি হাত বাড়াচ্ছেন। গোল গলা সাইড বাটন পাঞ্জাবি এবারের নববর্ষের স্পেশাল। ধুতির ক্ষেত্রে কটন সিল্কের রেডি টু ওয়্যার ধুতিই চাইছেন এ প্রজন্মের ক্রেতারা। ব্লক প্রিন্টেড, গোল্ড প্রিন্টেড ও এমব্রয়ডারি করা ধুতি, পাঞ্জাবির সঙ্গে কনট্রাস্ট ম্যাচিং করে পরলে নববর্ষের সাজ জমে যাবে।