উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
লাখে লাখে পরিযায়ী শ্রমিক গ্রামে ফিরে গেলেন। আনলক পর্বে বিভিন্ন আর্থিক ক্ষেত্রে একটু একটু করে কাজকর্ম শুরু হল। কোভিড সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি বুঝে বিভিন্ন রাজ্য সরকার নিজের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করছে আর্থিক ক্ষেত্রগুলি। তার সুফল মিলছে হাতেনাতে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির (সিএমআইই) সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বেকারত্বের হার কমছে। ওই মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে ১৭.৫ শতাংশ, ১১.৬ শতাংশ ও ৮.৫ শতাংশ। অর্থাৎ সার্বিকভাবে বেকারত্বের হার লকডাউন আগের চেয়েও কম। তবে চিন্তার বিষয় হল, গ্রামীণ অর্থনীতি যেভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে শহুরে অর্থনীতি সেভাবে হয়নি। শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার লকডাউনের পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে এখনও বেশি। জুন ২১ তারিখের হিসেব বলছে, তখনও শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ছিল ১১.২ শতাংশ। অন্যদিকে, গ্রাম-ভারতের বেকারত্বের হার ২১ জুনের হিসেবে ৭.২৬ শতাংশে নেমে আসে। উল্লেখ করা যায় যে, গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার গত ২২ মার্চ ছিল ৮.৩ শতাংশ। অর্থাৎ গ্রামাঞ্চলের বেকারত্বের হার লকডাউন শুরুর সপ্তাহের থেকেও ভালো। তবে, লকডাউন পূর্ববর্তী ১৩ সপ্তাহের বেকারত্বের গড় ছিল ৬.৮ শতাংশ। সেই বিচারে গ্রামীণ অর্থনীতিও এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তবে শহরাঞ্চলের তুলনায় অনেকটাই ভালো, যা এককথায় বেশ স্বস্তিদায়ক।
এর পিছনে রাজ্যে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের সুযোগ বৃদ্ধির অবদান বিরাট। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বাড়তি ভূমিকা পালন করেছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর। গত ২২ এপ্রিল লকডাউনের ২৯তম দিনে গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মহামারী পরিস্থিতিতে হাজার হাজার শ্রমিককে কাজে নামানো নিয়ে বিরোধীরা তখন সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তবুও রাজ্য সরকার পিছিয়ে যায়নি। সরকার সার বুঝেছিল, শুধু দান-খয়রাতি করে এই অর্থনীতিকে জাগিয়ে রাখা অসম্ভব। কেন্দ্র যখন ফিসকাল স্টিমুলাস নিয়ে রহস্যের রাজনীতি করছে তখন রাজ্যকেই তার সীমিত পরিসরে কার্যকরী পদক্ষেপ করতেই হবে। রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশেষভাবে কাজ দেওয়া হয় ঘরে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের। তিন মাসের মধ্যে ২৮৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করে সারা দেশকে অবাক করে দিয়েছে বাংলা। ২২টি জেলা এতে উপকৃত হয়েছে। বাংলা এই প্রশ্নে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, অসম প্রভৃতি বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যের লক্ষ্য ২০০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ। এই লক্ষ্যপূরণ হলে রাজ্য দু’ভাবে উপকৃত হবে। একদিকে বহু গরিব পরিবার কাজ পাবে, তাদের আয়ের বন্দোবস্ত হবে। অন্যদিকে, কে না জানে অর্থনীতির চাকা গড় গড় করে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভালো রাস্তার বিকল্প নেই। তাই কোভিড বিপর্যয়ের মধ্যেও স্বস্তি দিচ্ছে রাজ্য সরকারের রাস্তা নির্মাণ নীতির উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ।