উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
এত এত কর্মসূচি চালু রাখার একটাই উদ্দেশ্য—সব মানুষকে বাঁচানো। সব নাগরিককে বাঁচানোটাই রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব। নাগরিকরাই রাষ্ট্রের সম্পদ। রাষ্ট্রের উন্নতি, অবনতি নাগরিকদের হাতে। মানুষ যদি ভালোভাবে বাঁচার সুযোগ পায় তবেই সে কিছু কাজ করতে পারবে। দেশের জন্য কিছু অবদান রাখতে পারবে। মানুষের কাজের মাধ্যমেই সম্পদ সৃষ্টি হয়। কেউ এক বিঘা ধান উৎপাদন করেন। কেউ দুধ, ঘি তৈরি করেন। কেউ তৈরি করেন জামাকাপড়। কিছু মানুষ গবেষণা করেন। কারও গবেষণা থেকে একটা যন্ত্র তৈরি হল। কারও গবেষণা থেকে আবিষ্কার হল ওষুধ। মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করলেন কিছু মানুষ। কিছু মানুষ সাফাই করেন। আবার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোটাই কিছু মানুষের কাজ। চিকিৎসা, গাড়ি চালানো, সংবাদ সংগ্রহের মতো পেশাতেও নিযুক্ত কিছু নারীপুরুষ। গান, অভিনয়, ছবি আঁকা, খেলা কিংবা সাহিত্যসৃষ্টিতেও মগ্ন অনেকে। বেশিরভাগ মানুষের কাজ আলাদাভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে নাও হতে পারে। কিন্তু সবকিছুর সম্মিলিত রূপটা কল্পনা করুন—আপনার সামনে একটা গোটা দেশের ছবি ভেসে উঠবে। আরও বড় করে ভাবুন—আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে উজ্জ্বল পৃথিবীটা। অর্থাৎ কোনও মানুষকেই অবহেলা করা যাবে না। প্রত্যেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকের অবদান মূল্যবান।
তবে, মানুষকে এগতে হয় একটা প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থার ভিতর দিয়ে। এ এক অনিবার্য প্রাকৃতিক নিয়ম। রাষ্ট্রের ভূমিকা ঠিক এখানেই। আজ যে মানুষটা পিছনে পড়ে রয়েছেন, তাঁকেও প্রতিযোগিতার মূল পর্বের উপযুক্ত করে তোলার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হয়। তার জন্যই অগুনতি কল্যাণকর স্কিম ও কর্মসূচি চালু রাখতে হয়। এখানে একটা বিষয় খেয়াল করুন, যতগুলো কর্মসূচির উল্লেখ করা হল সেগুলোর প্রভাব তাৎক্ষণিক। আশু কিছু সুরাহা দেয় মাত্র। দীর্ঘ মেয়াদে সুফল পাওয়া যায় যেসব কর্মসূচি থেকে সেগুলো মূলত শিক্ষা সংক্রান্ত। মানুষকে যদি শিক্ষিত করা যায়, তবে তাঁর চিন্তাভাবনার জগৎটাই পাল্টে যায়। তিনি স্বাস্থ্য সচেতন হন। শিক্ষিত, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষের পক্ষেই ভালো কাজে, বড় কাজে এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়। তিনি নিজে বাঁচেন। পরিবারকে আগলে রাখেন। সমাজ ও দেশের কাজে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণের যোগ্য হয়ে ওঠেন। মানুষ একবার শিক্ষিত হয়ে গেলে তাঁর জন্য খয়রাতির প্রতীক্ষার শেষ হয়। তিনিই বরং বাকি দুর্বলদের জন্য সহায় হয়ে ওঠেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সুচিন্তিতভাবে সেই লক্ষ্যেই এগিয়েছে। বাংলায় অসংগঠিত ও স্বনিযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করেন এরকম নথিভুক্ত মানুষ ১ কোটি ২৮ লক্ষ। এঁদের বেশিরভাগই গরিব। এসব পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে তৎপর হয়েছে রাজ্য। নিম্ন থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ২৫টি স্কলারশিপের আওতায় আসবে তারা। সরকারের এই সিদ্ধান্তে মানুষের সামনে উজ্জ্বল হয় উঠল মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক মুখটাই। অন্য রাজ্যগুলোরও উচিত এই পথ অনুসরণ করা। তাহলে একসঙ্গে গোটা দেশ হেসে উঠতে পারবে।