উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
পরিসংখ্যান নির্ভর এই রিপোর্টটারই বাস্তব ছবি উঠে এসেছে করোনা বিধ্বস্ত ভারতের প্রান্তে প্রান্তে। করোনা সংক্রমণ ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। লকডাউন, আনলক-সহ রকমারি এক্সপেরিমেন্ট চলছে। তবু বাগে আনা যাচ্ছে না অদৃশ্য শত্রুকে। সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছে মানুষ নানা প্রান্তে মৃত্যুর মিছিল দেখে। রোজ ঘুম থেকে উঠে শুনতে পাচ্ছে অমুক পরিচিত ব্যক্তি সংক্রমণের শিকার হয়েছেন কিংবা অমুক আপনজন চলে গেলেন! অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে শিল্প, বাণিজ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্র সীমিত পরিসরে হলেও চালু করতে হচ্ছে। কিন্তু, শিশুদের নিয়ে তো এক্সপেরিমেন্ট চালানোর ঝুঁকি নেওয়া যায় না। অতএব সারা দেশের সমস্ত স্কুল দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ। বন্ধ বড়দের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থাগুলোও। বন্ধ রয়েছে বেশিরভাগ পরীক্ষা। বহু গুরুত্বপূর্ণ কোর্সে ভর্তির পরীক্ষা গ্রহণের কী হবে, তা নিয়েও দোটানায় সরকার। বিভিন্ন বোর্ডের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষার ফলাফল বিশেষ কৌশলে সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। এবার চিন্তা পরবর্তী কোর্সে ভর্তির কী পন্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে।
কিন্তু পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি তো অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখা চলে না। তাই বিকল্প হিসেবে চালু হয়েছে ভার্চুয়াল ক্লাস। মানে ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে অনলাইন ক্লাস। সংক্রমণ এড়িয়ে শিক্ষাদান এবং শিক্ষাগ্রহণের এর চেয়ে ভালো উপায় সত্যিই নেই। অতএব চিন্তা কী? সমাধান তো হয়ে গেল। গোল বেধেছে এখানেই। বাংলা মানে তো কলকাতা নয়। দেশ মানে তো দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই নয়। শহর থেকে দূরে বহু দূরে লাখো লাখো গ্রামেই আসল ভারত। সেখানকার কত পরিবারের নাগালে রয়েছে এই ব্যবস্থা? এরজন্য গবেষণার প্রয়োজন নেই। খোঁজ নিয়ে দেখুন, সবারই পরিচিত কেউ না কেউ আছেন—যাঁরা দূর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেই মহান ভারতের কঙ্কালটা ছুঁয়ে ফেলবেন। বহু গ্রামে নামমাত্র স্কুল চলে। স্বাভাবিক সময়ে শিক্ষকের অভাব থাকে। সেই স্কুলে বিদ্যুৎ দূরে থাক, সাধারণ শৌচাগারটাই নেই। একই অবস্থা সংশ্লিষ্ট পুরো গ্রামটার। বিদ্যুৎহীন গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা আর কাঁঠালের আমসত্ত্ব কৌতুকের মধ্যে তফাত কিছু নেই। শহরগুলোর বাইরে ‘সবার জন্য শিক্ষা’র কী হচ্ছে, তা সবাই বুঝতে পারছেন। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র ফাঁকা স্লোগান থেকে বেরিয়ে আসার এটাই সময়। এখান থেকে শিক্ষা নিক ভারত সরকার। দেশজুড়ে সবার জন্য বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে আন্তরিক হোক।