উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
দেশে ৩৪ বছরের পুরনো মান্ধাতার আমলের ক্রেতা সুরক্ষা আইন একটা ছিল বটে। কিন্তু ভেজাল জিনিস কিনে বা দামে ঠকে যাননি অথবা চটকদারি বিজ্ঞাপনে মজে বিভ্রান্ত হননি এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। লোক ঠকানো ব্যবসা আটকাতে যে আইনটি ছিল তার ফাঁকফোকর গলেই অনেক সময়ে পার পেয়ে যেতেন অভিযুক্ত সংস্থা বা ব্যবসায়ী। সর্বোপরি ঠকে গিয়ে সুবিচারের আসায় আইনের দ্বারস্থ হলেও তার হ্যাপা সামলাতেও নাজেহাল হতে হচ্ছিল অভিযোগকারী ক্রেতাদের। ছিল দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগও। অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়াটি ছিল জটিল, সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। নয়া ব্যবস্থায় ক্রেতারা যেখানে বসবাস করছেন সেখানে অর্থাৎ সেই জেলার বা রাজ্যে বসেই ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
একইসঙ্গে গ্রাহক সুরক্ষায় জোর দিতে নয়া আইনে ‘সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি নামে একটি অথরিটিও গড়া হচ্ছে। শুরু হবে ডিজি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে তদন্ত। অভিযোগ নিষ্পত্তির কাজ ত্বরান্বিত করতে নতুন আইনবলে মধ্যস্থতার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে, যেখানে গ্রাহক ও প্রস্তুতকারকরা নিজেদের মধ্যে বসে ক্ষতিপূরণের বোঝাপড়া করতে পারবেন। আর তা না চাইলে জেলা রাজ্য ও জাতীয়স্তরের তিনটি কমিশনে অভিযোগও জানানো যাবে। উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে মহৎ, তবে তা যেন নিছক কাগজে কলমের আইন না হয়ে দাঁড়ায়। অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে নয়া আইনের আওতায় আনা হয়েছে যা হল ‘বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপন। নতুন গ্রাহক সুরক্ষা আইনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারের অপরাধে দু’বছরের জেল ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে।
আসলে শাস্তির ভয় না থাকলে অনেক সময়েই মানুষ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অসাধু উপায়ে ব্যবসা বা খাদ্যে ভেজালের প্রশ্নে কথাটা সর্বাংশে সত্য। তাই শুধু আইন তৈরি হলেই হবে না তা কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি অসাধু ব্যবসা, ভেজাল সামগ্রী বা ত্রুটিপূর্ণ পণ্য বিক্রি আটকাতে দরকার সরকারি তরফে কড়া নজরদারি। গ্রাহক সুরক্ষার স্বার্থেই ভাঙতে হবে অসাধু চক্র বা ঘুঘুর বাসাটিও। না হলে কড়া আইন তৈরির উদ্দেশ্যটি যতই মহৎ হোক না কেন বলবৎ করার ক্ষেত্রে এতটুকু ত্রুটি থাকলে সমস্ত প্রচেষ্টাই বৃথা হয়ে যাবে।