উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
ফলে অধিকাংশ মানুষ জেনে গিয়েছেন এই মুহূর্তে সংস্থাটির গুরুত্ব কতটা। বিপদে-আপদে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস বা ভরসাকেই পুঁজি করে অসাধু লোকজন। মহামারীর সময়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শুরুতে, মানুষকে অর্থ সাহায্য দেওয়ার নামে অনলাইন প্রতারণার ফাঁদ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর দেখা গিয়েছে মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার প্রভৃতি নিয়ে জালিয়াতি। নতুন দামে দেদার বিক্রি হয়েছে ইতিমধ্যেই ব্যবহৃত বা ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ মাস্ক ও গ্লাভস। নামী কোম্পানির নকল স্যানিটাইজারও বিক্রি হয়েছে শহর, মফস্সল-সহ প্রায় সর্বত্র। মাস্ক, স্যানিটাইজার থেকে কিছু জীবনদায়ী ওষুধ এবং অক্সিজেনের কালোবাজারিও অসহায় মানুষকে আরও বিপন্ন করেছে।
কিন্তু, এবার যা নজরে এসেছে তা তো আরও ভয়ঙ্কর! করোনা টেস্টের নামে জালিয়াতি হচ্ছে শহরের বুকে। একটি চক্র বাজারে দালাল ছেড়ে রেখেছে। তারা অসুস্থ মানুষের বাড়িতে যোগাযোগ করছে। তারপর নির্ধারিত ‘ফি’-র বিনিময়ে সেই বাড়ি থেকে রোগীর লালরস সংগ্রহ করছে। দু’-তিনদিন পর জালিয়াতরা ‘টেস্ট রিপোর্ট’ দিচ্ছে খোদ আইসিএমআর-এর নামে! বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এসব রিপোর্টের কোনও মূল্য নেই। তার মানে, উপকারী মানুষ সেজে বাড়ি বয়ে গিয়ে টাকার বিনিময়ে ক্ষতি করে আসছে কিছু লোক। কিছু মানুষ সরল বিশ্বাসে ‘নিশ্চিন্ত’ হয়ে যাচ্ছেন যে, তাঁদের হাতে খোদ আইসিএমআর-এর রিপোর্ট। অতএব চিন্তা কী। কিন্তু সবাই বোকা নন। কিছু সচেতন মানুষ অবশ্যই আছেন। তাঁদেরই সৌজন্যে সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতায় নেতাজিনগরে করোনা টেস্ট জালিয়াতির একটি ঘটনা প্রশাসনের নজরে এসেছে। ওই রোগীকে করোনা ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু সন্দেহ হয় পরিবারটির। তাঁরা চ্যালেঞ্জ করেন। উপযুক্ত হাসপাতাল জানিয়ে দেয় যে, আইসিএমআর-এর নামে জাল রিপোর্ট তাঁদের দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে ওই রোগীর মৃত্যুও হয়। পরিবারটির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিসও তদন্তে নেমেছে। তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের সন্দেহ, জালিয়াতি চক্রটির শিকড় অনেক গভীরে। তাদের দ্বারা আরও অনেক মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। অন্য প্রতারণার সঙ্গে এই প্রতারণার তফাত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। এই ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি বা একটি পরিবার প্রতারণার শিকার হলে তার ক্ষয়ক্ষতি ওইটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। বৃহত্তর সমাজেও তার কুপ্রভাব পড়তে পারে। কারণ, জাল ‘ভালো’ রিপোর্টের ভিত্তিতে রোগী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা অজ্ঞাতে সমাজের অন্যত্রও মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারেন। তাই এই ধরনের ‘উপকারী’ দুর্বৃত্তদের সম্পর্কে প্রথম সাবধান থাকতে হবে নাগরিকদের। কড়া নজর রাখতে হবে প্রশাসনকেও। চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের দ্রুত কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হলে চক্রটি আর এগতে সাহস পাবে না।