উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
সরকার, গোয়েন্দা বিভাগ এবং ব্যাঙ্কগুলোর তরফে বারবার সতর্ক করেও সবাইকে সচেতন করা যায় না। এতে বিহারের জামতাড়া গ্যাংয়ের যেমন কুখ্যাতি আছে, তেমনি কুখ্যাতি রয়েছে নাইজেরিয়া-সহ একাধিক আফ্রিকান দেশের জালিয়াতদের। সম্প্রতি এক বিচারপতিকেই প্রতারণার টোপ দেওয়া হয়েছিল! জালিয়াতদের স্পর্ধা কোথায় পৌঁছলে এমন কাণ্ড হতে পারে! জালিয়াতির কাহিনী নিয়ে লেখা হয়েছে বহু জনপ্রিয় গল্প, উপন্যাস, নাটক এবং ছড়া। হিন্দি, বাংলা-সহ বিভিন্ন ভায়ায় এসব কাহিনী নির্ভর সুপার হিট ফিল্ম তৈরি হয়েছে অনেক। শুধু লোভ নয়, তার সঙ্গে মানুষের অসহায়তাকেও পুঁজি করে প্রতারকরা। ভারত একটা গরিব দেশ। কৃষি সবার হাতে কাজ দিতে অপারগ। শিক্ষিত এবং বিশেষ ট্রেনিং নেওয়া যুবরাও সামান্য কাজ পাওয়ার জন্য মরিয়া। এমনিতেই প্রচার আছে যে ঘুষ না দিলে চাকরি হয় না। ভারতের দুর্নীতির যে সাধারণ চিত্র, তার সঙ্গে এই প্রচার খুব বেমানান নয়। ফলে, সিস্টেমের প্রতি মানুষের মনে বদ্ধমূল হয়ে ওঠা এই অবিশ্বাস প্রতারকদের বাড়তি সুবিধা করে দেয়। চাকরির টোপ নিয়ে তারা দিকে দিকে ছিপ ফেলে বসে আছে। সামান্য আশা কিংবা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, প্রাইমারি স্কুলের মাস্টারি থেকে রেলের গ্রুপ-ডি কর্মী, সেচ দপ্তর থেকে পিডব্লুডি প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে চাকরি জালিয়াতির কালো ছায়া। সম্প্রতি অন্য এক রাজ্যে একটি পদের জন্য বিশ-পঁচিশ জনের নিয়োগপত্র ইস্যুর ভোজবাজি দেখা গিয়েছে। বছর কয়েক আগের ঘটনা। পশ্চিম ভারতের একটি রাজ্যে। স্কুল চাকরিতে দুর্নীতির তদন্তজাল মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি অবধি পৌঁছে গিয়েছিল। এসব নানা ঘটনায় দাগি ক্রিমিনাল থেকে ক্ষমতার অলিন্দ দাপানো অনেকের শাস্তি হয়েছে। আদালতই তাদের শাস্তি দিয়েছে।
এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু এবার খোদ কলকাতার বুকে যা ঘটল তা অভূতপূর্ব। কোনও সংশয় নেই। জালিয়াত চক্র হাইকোর্টের ভিতরে প্রার্থীদের ডেকে এনে ‘ইন্টারভিউ’য়ের ব্যবস্থা করেছে। ‘সফল’ প্রতিযোগীদের ‘নিয়োগপত্র’ দিয়েছে। পরে তাঁরা হাইকোর্টে চাকরিতে ‘জয়েন’ করতে গিয়েই টের পান—রাম ঠকা ঠকেছেন! সরকারি চাকরির কোনও ব্যাপারই নেই। মাঝখান থেকে জলে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। আপাতত খবর, প্রতারিতের সংখ্যা প্রায় ৪০। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিস সাত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। বিষয়টির আরও গভীরে যাওয়া দরকার। চক্রটাকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলা জরুরি। মনে রাখতে হবে, এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের সর্বোচ্চ ন্যায় প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতার প্রশ্নটি জড়িয়ে গিয়েছে। নিশ্চিত করতে হবে, ভবিষ্যতে অন্তত এমন কাণ্ডটি করার দুঃসাহস যেন আর কারও না হয়।