উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
করোনা বিপর্যয়ের শুরু থেকেই লকডাউনের জেরে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশি মানুষজন আসতে পারছেন না। চিকিৎসা বন্ধ থাকলেও ওষুধ বন্ধ করার উপায় নেই। অথচ সেদেশে সব ওষুধ সহজলভ্য নয়। আর তা বুঝেই নেমে পড়েছে দালালচক্র। সীমান্ত দিয়ে ওষুধ পাচার বাড়ছে হু হু করে। তার প্রমাণ মিলছে উদ্ধার হওয়া ওষুধের পরিমাণেও। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে পাচারের আগে ৮৭ লক্ষ ৫৯হাজার টাকার ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ১০১৯ সালে পরিমাণ ছিল ৫২লক্ষ টাকার। আর এবছর করোনা শুরু থেকে জুলাই মাসের মধ্যেই এক কোটি তিন লক্ষ টাকার ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পাচারকারীদের হাত ধরে বাংলাদেশে ঢুকছে নানান জীবনদায়ী ওষুধ। সঙ্গে ভিটামিন ট্যাবলেটও। কারণ করোনাকালে শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে ভিটামিন ট্যাবলেট খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাই তার বিপুল চাহিদা। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কর্তারা মানছেন, ওষুধ পাচার সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত কয়েক মাসে উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া সীমান্তে বহু জায়গায় এমন ওষুধ পাচারের চেষ্টা আটকানো হয়েছে। এমনকী বেআইনিভাবে ভারতে এসে দেশে ফিরতে গিয়ে সীমান্তে ধরা পড়া দুই বাংলাদেশি যুবকের কাছ থেকেও প্রচুর পরিমাণে ওষুধ উদ্ধার করেছে বিএসএফ। গেদে ও পেট্রাপোল সীমান্ত থেকেও ওষুধ ধরা পড়েছে।
বহু বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসার জন্য উত্তর ২৪ পরগণা এবং কলকাতার চিকিৎসক, হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। মূলত জটিল রোগের চিকিৎসা করাতে ধনী, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্তরাও এসে থাকেন এ রাজ্যে। এখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ মতোই ওষুধ খান। তার অনেক ওষুধ বাংলাদেশে সহজলভ্য নয়। তাই একসঙ্গে তিন চার মাসের ওষুধ নিয়ে ফিরে যান। এখন করোনা পরিস্থিতিতে চরম সংকটে পড়েছেন তাঁরা। সুযোগ বুঝে দালালচক্র বাংলাদেশে সেইসব ওষুধ পাচার করছে।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এস এস গুলারিয়া বলেন, ওষুধ পাচারের চেষ্টা আগের থেকে বেড়েছে। তবে আমরা সতর্ক আছি। বহু জায়গায় ওষুধ পাচার হওয়ার আগেই তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিএসএফের কৃষ্ণনগর সেক্টর সূত্রেও জানা গিয়েছে, লকডাউনের পর থেকে কাশির সিরাপ, গাঁজা, গোরু ছাড়াও ওষুধ পাচারের প্রবণতা বেড়েছে। মুর্শিদাবাদ, নদীয়া সীমান্তে শীতকালে চাদর কিংবা জ্যাকেটের আড়ালে কিছু সময় ওষুধ পাচারের নজির ছিল। কিন্তু তা হতো সামান্যই। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমাতেও বেআইনিভাবে বহু ভিটামিন ওষুধ পাচারের সময় ধরে ফেলে বিএসএফ। ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানাচ্ছেন বিএসএফের এক কর্তা। আন্তর্জাতিক চেক পোস্ট গেদেতেও বাংলাদেশে যাওয়া একটি মালগাড়ি থেকে প্রচুর ওষুধপত্র উদ্ধার করা হয়। বিএসএফ সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর সেক্টরে সব মিলিয়ে ৩৪ কিলোমিটার মতো এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। এমন সব এলাকা দিয়েই পাচারের চেষ্টা বেড়েছে লকডাউনের পর থেকে।