উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
তবে একটা কথা না বললে খুবই অন্যায় হবে। আজকের দিনে অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের দিনে বাঙালির আহ্লাদ একটু উথলে ওঠে। এইদিনে তার একটু বাঙালিয়ানার বাই ওঠে। বাঙালি পোশাক, বাঙালি মেনু দিয়ে নববর্ষ পালনের চেষ্টা করে। হোটেলের মেনুগুলোতে শুক্তো, কলমি শাক আর ডাব-চিংড়ি যেন মাস্ট। অন্তত এইটুকু দিয়ে এবং এইভাবেই বেঁচে থাক বাঙালিয়ানার লেজটুকু। যতদিন শ্বাস, ততদিনই আশ।
এবারের নববর্ষের অবশ্য একটা অন্যতর মাত্রা আছে। বলা যায় এবারের নববর্ষ অনেকটা রাজনৈতিক। সামনে ভোট। তাই নববর্ষের গায়েও লেগে গিয়েছে ভোটের রং, ভোটের গন্ধ। আজ যাবতীয় পথসভা, প্রভাতফেরি, মিছিল, সমাবেশ, জনসংযোগ সবকিছুর মধ্যেই নববর্ষ যাপন এবং ভোটের প্রচার একসঙ্গে মিশে যাচ্ছে। রোড শো করছেন প্রার্থী। ঘেমে নেয়ে একশা সকলে। গাড়ির উপর প্রার্থী হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে। পথের নীচে হচ্ছে গান আর নাচ, ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’। পথের দু’পাশে মানুষ। তাদের হাতে ফুল তুলে দিচ্ছেন দলীয় কর্মীরা। কোথাও হয়েছে লস্যি বিলি। আবার কোথাও লাড্ডু। আর নকুলদানার আন্তরিকতা তো আছেই।
প্রথম পর্যায়ের ভোটের সুনামি-প্রচারের পর নববর্ষের দিন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু করেছেন দ্বিতীয় দফার প্রচার। এবারের এই নির্বাচন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। দেশ এগবে কোনপথে, দেশের অর্থনীতি কেমন হবে, দেশের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন হবে, তা ঠিক করে দেবে এবারের ভোট। তাই অনেকেরই প্রার্থনা এই ভোট দেশকে নতুন দিশা দেখাক। এই ভোট হোক ‘বহু জন হিতায় চ বহুজন সুখায় চ’।
আমাদেরও সেই একই প্রার্থনা। নতুন বছরে আমাদেরও শুভকামনা থাকছে, ভারত শক্তিশালী হোক। শক্তিতে, সম্পদে, স্বাস্থ্যে, শিক্ষায়। চৌর্যবৃত্তির পাপ দূর হোক। দেশের প্রতিটি পয়সা লাগুক উন্নয়নের কাজে। গরিব মানুষের কাজে। এই প্রার্থনাটুকু ছাড়া আমআদমির আর কীই বা করার আছে! বাংলার মানুষের মুখে যতটুকু হাসি আছে, তা আরও চওড়া হোক। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, রূপশ্রী সঙ্গে আরও শ্রী যোগ হোক। শ্রী ফিরিয়ে বাঙালি নিজস্বতায় বাঁচুক। নিজের সংস্কৃতিতে বাঁচুক। অন্যের সবকিছু গলাধঃকরণ করে বদহজমের থেকে নিজের সংস্কৃতিকে সঙ্গী করে বাঁচুক। নিজের সংস্কৃতিকে বাঁচাক। কথায় বলে যে কোনও জাতির জীবনে সংস্কৃতি হল তার অক্সিজেন। মাছের সঙ্গে জলের যে সম্পর্ক, কোন জাতির সঙ্গে তার সংস্কৃতিরও সেই সম্পর্ক। সেটাই তার শিকড়। যেটার সঙ্গে তার নাড়ির যোগ। আবার নিজস্ব সংস্কৃতির নিউক্লিয়াসে ফিরুক বাঙালি। দূর হোক পরশ্রীকাতরতা। শান্তিতে, যুক্তিতে, জ্ঞানে তার হারানো আসন ফিরে পাক বাঙালি। বাঙালি আবার নবজাগরণের আলো দেখাক।