উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
কিন্তু প্রশ্ন হল, এখনও পর্যন্ত একজনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম কি প্রকাশ্যে এসেছে? এখনও পর্যন্ত কি কোনও একটি কেসে টাকা উদ্ধার, ধরপাকড় এবং তদন্ত শেষে পুলিস, আয়কর দপ্তর, ইডি বা অন্য কোনও এজেন্সি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে, আটক করা লক্ষ লক্ষ টাকা কে পাঠিয়েছিল বা কার কাছে তা যাচ্ছিল? সাধারণ মানুষ কিন্তু এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা জানতে চাইছেন, এই বিশাল অঙ্কের টাকা কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে যাচ্ছিল, নাকি এগুলি স্রেফ হাওয়ালার টাকা। উদ্দেশ্য যাই হোক, যে কোনও হিসেব বহির্ভূত টাকাই বেআইনি। তা ধরে আয়কর দপ্তর সমাজের কাছে একটা বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে বা হচ্ছে, একথা অনস্বীকার্য। কিন্তু এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের পিছনে স্রেফ অসাধু ব্যবসায়ীরা জড়িত, নাকি কোনও রাজনৈতিক কেষ্টবিষ্টু রয়েছে, তা জানাটাও খুবই জরুরি। সেই তথ্য কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি। বিভিন্ন এজেন্সি সূত্রে জানা গিয়েছে, এটি নাকি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। একের পর এক সূত্র ধরে মূল মাথার কাছে পৌঁছতে কম করে তিন-চার মাস সময় তো লাগবেই। এটা মেনে নিয়েও বলা যায়, ভবিষ্যতে হলেও আসল সত্য প্রকাশ্যে আসা দরকার। আর তাহলেই মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ বা সাধারণ মানুষের ধারণা অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
এই তো ক’দিন আগের কথা। ভোট কেনার জন্য হাতেনাতে বিশাল অঙ্কের টাকা ধরা পড়ার পর তামিলনাড়ুর ভেলোর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনই বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন। আয়কর দপ্তরের তল্লাশিতে সেখানকার ডিএমকে নেতার গোডাউন থেকে প্রায় ১১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল। এই টাকা ভোটে ছড়ানোর জন্যই মজুত করা হয়েছিল, এমনটাই জেনেছে কমিশন। এটা নিঃসন্দেহে কমিশনের একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। কিন্তু এমন অভিযোগও নানা প্রান্ত থেকে আসছে, যেখানে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনা আর কোনও গোপন বিষয় নেই। প্রকাশ্যেই রাজনৈতিক দলের নেতারা মিটিং-মিছিলে গিয়ে, গ্রামে-গঞ্জে প্রচারে গিয়ে টাকা ছড়াচ্ছেন। এসবও কমিশনের কড়া নজরদারিতে আসুক, এমনটাই চাইছেন দেশের সাধারণ ভোটাররা।
নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক যে হিসেব (ভোট ঘোষণার পর থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত) জানা গিয়েছে, তাতে গোটা দেশে সন্দেহজনক নগদ, বেআইনি মদ ও মাদক যা আটক করা হয়েছে, তার মূল্য ১৪৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র গুজরাত থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৫০৯ টাকা। এরপরেই রয়েছে তামিলনাড়ু, উদ্ধার হওয়া জিনিসের মোট মূল্য ২০৮.৫৫ কোটি টাকা। তালিকায় এর পর থাকা কয়েকটি রাজ্য হল, অন্ধ্রপ্রদেশ ১৫৮.৬১ কোটি, পাঞ্জাব ১৪৪.৩৯ কোটি এবং উত্তরপ্রদেশ ১৩৫.১৩ কোটি টাকা।
টাকার পরিমাণ দেখলেই বোঝা যায়, আয়কর দপ্তর এবং কমিশন এবার অনেকটাই সক্রিয়। কিন্তু একইসঙ্গে ভোটের সঙ্গে এইসব ঘটনা কতখানি সম্পর্কযুক্ত, সেটাও জানা প্রয়োজন। তাহলেই বোঝা যাবে, অধিকাংশ জায়গায় ভোট মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পর্যায়েই আছে, মানুষ স্বেচ্ছায় সেই অধিকার প্রয়োগ করছেন, নাকি জোর করে টাকার বিনিময়ে সেই অধিকার কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ কেড়ে নিচ্ছে।